দেশজুড়ে

তিনবিঘা করিডোর এলাকায় মানুষের উপচে পড়া ভিড়

লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম ইউনিয়নে তিনবিঘা করিডোর এলাকায় ঈদের প্রথম দিন থেকে বিনোদনপ্রেমী ও দর্শনার্থীদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। শহর জীবনের কোলাহল থেকে বের হয়ে মানুষ পরিবার-পরিজন নিয়ে দূর-দূরান্ত থেকে ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে তিনবিঘা করিডোর এলাকায় আসছেন। ঈদের প্রথম দিন থেকে শিশু, কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণীসহ সব বয়সী নারী-পুরুষের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। দেশের অনেকেই জানেন না তিনবিঘা করিডোর কি? তাই এক নজর দেখার জন্য প্রতিদিন আসছে সকল বয়সীর শত শত নারী-পুরুষ।উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাট শহর থেকে সড়ক পথে ৯০ কিলোমিটার দূরে পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রামে তিনবিঘা করিডোর অবস্থিত। বাংলাদেশের সীমানা শেষ। এরপর ভারতের ভূখন্ডে ভারতের ভিতরেই আবার এক চিলতে বাংলাদেশ। অদ্ভুত রহস্য মাখা সেই সাথে রোমাঞ্চকর একটি ভূখন্ডের নাম তিনবিঘা করিডোর। প্রবেশ পথের আয়তন ১৭৮ মি. দৈর্ঘ্য আর ৮৫ মি. প্রস্থ রাস্তাটি দিয়ে বাংলাদেশের দহগ্রাম ভূখন্ডের প্রবেশ করতে হয়।রংপুর থেকে তিন বিঘা করিডোরে বেড়াতে আসা নুরুজ্জামান (৩০) জানান, ভাই-বোন, স্ত্রী, মামী, চাচীসহ এই প্রথম তিনবিঘা করিডোর দেখতে আসছি। অনেক ভাল লাগছে। সময় পেলে আবারো ঘুরতে আসব।ঈদে তিনবিঘা করিডোর এলাকায় যাতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য দু`দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিজিবি ও বিএসএফের সদস্যরা সর্তক অবস্থায় রয়েছেন বলে বিজিবি সূত্রে জানা গেছে।  দহগ্রাম ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান জাগো নিউজকে জানান, বছরে দু’ ঈদে দহগ্রামে তিনবিঘা করিডোর এলাকায় শত শত মানুষ আনন্দে ঘুরতে আসে। ঈদের প্রথম দিন থেকে সপ্তম দিন পর্যন্ত বেশি মানুষের সমাগম ঘটে। তিনি আরো বলেন, অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য বিজিবি সদস্যরা সর্তক রয়েছেন।সূত্র মতে, দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা ছিটমহলবাসী দীর্ঘ ৪৫ বছর অবরুদ্ধ জীবন-যাপনের পর  মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি মোতাবেক রেশনিং প্রথায় ১ ঘণ্টা পর পর সকাল ৬ টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত মোট ৬ ঘণ্টা মূল ভূখন্ডের সাথে সরাসরি চলাচলের সুযোগ পায় ১৯৯২’র ২৬ জুন থেকে। এরপর ১৯৯৯ সাল থেকে সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত টানা ১২ ঘণ্টা দহগ্রাম-আঙ্গরপোতাবাসী মূল ভূখন্ডে চলাচলের সুযোগ পায়। এদিকে, তৃতীয় ধাপে ২০১১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকায় হাসিনা-মনমোহন বৈঠকের দুইদিন পর ৮ সেপ্টেম্বর থেকে তিনবিঘা করিডোর গেইট ২৪ ঘণ্টা খুলে দেওয়া হয়। এরপর একই বছরের ১৯ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিনবিঘা করিডোর গেইট আনুষ্ঠানিকভাবে ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার ব্যবস্থা করেন। সেই থেকে মুক্তভাবে চলাচল করতে থাকে দহগ্রামবাসী।রবিউল হাসান/এসএস/পিআর

Advertisement