একুশে বইমেলা

চাপিয়ে দেয়া শিক্ষাব্যবস্থার বোঝা শিশুর বিকাশ বাধাগ্রস্ত করছে

শিল্পী হাশেম খান বলেছেন, শিশু সংগঠনের নিষ্ক্রিয়তার পেছনে শিশুর অভিভাবকদের নিষ্ক্রিয়তাও বহুলাংশে দায়ী। সেই সঙ্গে বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা শিশুর উপর যে বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছে সেটাও শিশুর বিকাশ বাধাগ্রস্ত করছে।

Advertisement

তিনি বলেন, শিশুর স্বাভাবিক বিকাশের জন্য শিশু সংগঠনগুলো যেমন সক্রিয় করা প্রয়োজন, তেমনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে আনন্দনিকেতন করে তুলতে হবে।

বুধবার বিকেল ৪টায় অমর একুশে গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত শিশু সংগঠন নিষ্ক্রিয়তা ও শিশুর সাংস্কৃতিক বিকাশ শীর্ষক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মোহিত কামাল। আলোচনায় অংশ নেন সুব্রত বড়ুয়া, দিলারা হাফিজ এবং হাসান শাহরিয়ার।

Advertisement

প্রাবন্ধিক মোহিত কামাল বলেন, নানা সমস্যার বিলুপ্ত কিংবা নিষ্ক্রিয় হতে থাকা শিশু সংগঠনগুলোকে চাঙ্গা করতে হবে। সংগঠনের অভ্যন্তরীণ সমস্যা, দ্বন্দ্ব-সংঘাত শনাক্ত ও তা সমাধান করে সাংগঠনিক শক্তিকে জোরদার করতে হবে। এর সঙ্গে সরকারি আর্থিক প্রণোদনার তো প্রয়োজন আছেই। তবে কেবল তার ওপর ভর করে থাকলে চলবে না। শিশু সংগঠনগুলোকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করে তোলার জন্য অর্থযোগের ব্যবস্থাও থাকতে হবে, প্রকল্প থাকতে হবে হাতে। শিশু সংগঠনের সক্রিয় কার্যক্রমের পাশাপাশি শিশুর সংস্কৃতি বিকাশে খণ্ডিত নয়, সামগ্রিক বিষয়কে মূল্যায়ন করতে হবে। শিশু সংগঠনের সঙ্গে সম্পর্কিত মনস্বী জাতীয় ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে নিয়ে কেন্দ্র থেকে দেশজুড়ে শাখা সংগঠনে সফর বাড়াতে হবে, যেমনটি করতেন রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই প্রমুখ। এভাবে মৃতপ্রায় সংগঠনগুলোকে জাগিয়ে তুলতে পারি আমরা। বিশ্ব সংস্কৃতির শুভকে গ্রহণ করে অশুভ আগ্রাসনের এ প্রতিকূল সময়েও শিশুর সংস্কৃতি বিকাশে ভূমিকা রাখতে পারি।

আলোচকবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশেও এক সময় শিশু সংগঠনগুলো শিশুর জীবন গঠনে প্রথম ধাপ হিসেবে কাজ করেছে। বর্তমানে নগরায়নের প্রভাবে খোলামেলা পরিবেশে শিশুর বেড়ে উঠার সুযোগ প্রায় নেই বললেই চলে। আজ শিশুর বিনোদন কম্পিউটার গেমস, মোবাইল ও ইন্টারনেটের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। প্রযুক্তির উন্নয়ন আমাদের জীবনযাত্রা সহজ করলেও এর অপব্যবহার ও ব্যবহার-অজ্ঞতা শিশুর জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সেই সঙ্গে আমরা আজ খুব বেশি আত্মকেন্দ্রিক হয়ে পড়েছি। ফলে শিশুর জীবন বিকাশের সংগঠনের প্রায়োজনীয়তা উপেক্ষিত হয়ে পড়ছে। আমাদের সমাজের তথা দেশের মঙ্গলের জন্যই শিশু-সংগঠনগুলোকে আবার ব্যাপকভাবে সক্রিয় করা প্রয়োজন।

পরে সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী খুরশিদ আলম, মুর্শিদুদ্দিন আহম্মদ, কমলিকা চক্রবর্তী এবং চম্পা বণিক। যন্ত্রানুষঙ্গে ছিলেন রবীন্দ্রনাথ পাল (তবলা), বিলাস চন্দ্র বণিক (প্যাড), সুমন রেজা খান (কি-বোর্ড), শাহরাজ চৌধুরী (গিটার)।

এমএইচ/এএসএসি/এমবিআর/আরআইপি

Advertisement