ড্রোনের মাধ্যমে প্যাকেজ ডেলিভারি নিষিদ্ধ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ)। এছাড়া মানুষ্যবিহীন এ বিমানগুলোর উড্ডয়নের ক্ষেত্রেও বিধি-নিষেধ জারি করা হয়েছে। ফলে এফএএর নির্দেশনা অনুযায়ী, বাণিজ্যিক ও বিনোদনের জন্য ড্রোন ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটির নীতিমালা অনুসরণ করতে হবে বিভিন্ন কাজে ড্রোন ব্যবহার করে এমন প্রতিষ্ঠানগুলোকে। সম্প্রতি ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করা হয়। খবর ইয়াহু।সম্প্রতি মার্কিন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান অ্যামাজন প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন পণ্য ড্রোনের মাধ্যমে গ্রাহকদের মধ্যে বিতরণের পরিকল্পনা গ্রহণ করে, যা অনলাইন কেনাকাটায় এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে বলে উল্লেখ করা হয়েছিল অ্যামাজনের পক্ষ থেকে। এছাড়া ড্রোনের মাধ্যমে অর্ডারের কিছু সময়ের মধ্যেই পণ্য ডেলিভারি দেয়া সম্ভব বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয় প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে। তবে ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের ড্রোনের মাধ্যমে প্যাকেজ ডেলিভারির ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রতিষ্ঠানটির গৃহীত পরিকল্পনাকে পুরোপুরি বন্ধ করতে বাধ্য করবে বলে মনে করছেন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান অ্যামাজনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।এফএএর নিষেধাজ্ঞার কারণে ড্রোনের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের বোতলজাত পণ্য এবং পিত্জা সরবরাহের পরিকল্পনা বন্ধ হয়ে গেলেও হাল ছাড়েননি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো। অদূর ভবিষ্যতে ড্রোনের মাধ্যমে পণ্য ডেলিভারি পুনরায় অনুমোদন পাবে বলে আশাবাদী অ্যামাজনসহ বেশকিছু প্রতিষ্ঠান। এছাড়া ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের নীতিমালাটি প্রকাশ করা হলেও ২০১৫ সালের শরত্ কালের আগে কার্যকর হচ্ছে না বলে নিশ্চিত করা হয়। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন সংশ্লিষ্ট মামলার আইনজীবী ব্রেনডান স্কাল্ফম্যান জানান, আগামী বছরের শরত্ শেষে এ নীতিমালার কার্যকর প্রয়োগ করবে এফএএ। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রে ড্রোন উড্ডয়নের ক্ষেত্রে কোনো সুনির্দিষ্ট নীতিমালা নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি।এদিকে অ্যামাজনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জেফ বেজোস জানান, ২০১৫ সালের মধ্যে অ্যামাজন প্রাইম ডেলিভারি সেবা প্রদান চালুর জন্য প্রতিষ্ঠানটির ড্রোন প্রস্তুত হবে না। তাই এফএএর সাম্প্রতিক ঘোষণায় মোটেও বিচলিত নয় অ্যামাজন। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির অন্য আরেক মুখপাত্র জানান যে, ড্রোনের মাধ্যমে পণ্য সরবরাহের পরিকল্পনা প্রতিষ্ঠানটির জন্য একটি শখের বিষয় ছিল। তবে এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন না হলেও অ্যামাজনের ই-কমার্স ব্যবসায় কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এছাড়া সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের যে কোনো অঞ্চলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা চালু করেছে অ্যামাজন, যা প্রতিষ্ঠানটির ব্যবসা প্রসারে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে। এদিকে নিজস্ব তৈরি ফায়ার স্মার্টফোন উন্মোচনের মাধ্যমে সম্প্রতি ডিভাইস তৈরিকারক কোম্পানি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে অ্যামাজন।বিশ্লেষকদের মতে, ড্রোনের মাধ্যমে প্যাকেজ ডেলিভারি নিষিদ্ধের নীতিমালাটি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া নীতিমালাটি অফিশিয়ালি কংগ্রেসে দাখিলও করেনি ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন। ধারণা করা হচ্ছে, কংগ্রেসে এ নীতিমালা উপস্থাপন করা হলে অনুমোদন নাও পেতে পারে। এ কারণে অ্যামাজনের ড্রোনের মাধ্যমে পণ্য সরবরাহের পরিকল্পনায় এ নীতিমালা কোনো বাধা সৃষ্টি করতে পারবে না।
Advertisement