আন্তর্জাতিক

বিচারের মুখোমুখি হবেন নেতানিয়াহু

ইসরায়েলের পুলিশ বলছে, দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহুকে ঘুষের মামলায় অভিযুক্ত করা হবে। পুলিশের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে দু’টি পৃথক দুর্নীতির মামলায় ঘুষ, জালিয়াতি এবং বিশ্বাস ভঙ্গের যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে। খবর বিবিসি।

Advertisement

ইসরায়েলি টেলিভিশনের কাছে দেয়া এক সাক্ষাতকারে নেতানিয়াহু বলেছেন, এ ধরনের অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই এবং তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবেই ক্ষমতায় থাকবেন। তিনি জানিয়েছেন, পুলিশের এমন অভিযোগে কিছুই হবে না। সব কিছু স্বাভাবিকভাবেই শেষ হবে।

এক মামলায় অভিযোগ উঠেছে যে, নেতানিয়াহু ইসরায়েলি ইয়েদিওত আহারোনোত পত্রিকার প্রকাশক আরনোন মোজেসকে ঘুষ দিয়ে ইতিবাচক সংবাদ প্রকাশের চেষ্টা করেছিলেন। এর বিনিমেয়ে তিনি ওই সংবাদপত্রের একটি প্রতিদ্বন্দ্বী পক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন।

পুলিশ জানিয়েছে, আরনোন মোজেসকেও বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। আরও একটি অভিযোগ অনুযায়ী, ২০০৯ সালে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে হলিউডের মোগুল আরনোন মিলচান এবং আরও বেশ কয়েকজন সমর্থকের কাছ থেকে ঘুষ হিসেবে কমক্ষে ২ লাখ ৮৩ হাজার ডলার মূল্যের উপহার সামগ্রী গ্রহণ করেছেন নেতানিয়াহু। মিলচানকে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে প্রধানমন্ত্রী এসব উপহার নিয়েছিলেন বলে জানানো হয়েছে।

Advertisement

জেরুজালেম পোস্টের এক খবরে বলা হয়েছে, শ্যাম্পেন এবং সিগারেটসহ বেশ কিছু মূল্যবান জিনিসও উপহার হিসেবে নিয়েছেন নেতানিয়াহু। পুলিশ জানিয়েছে, মোগুল আরনোন মিলচানকেও ঘুষের মামলায় বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।

পুলিশ জানিয়েছে, অস্ট্রেলিয়ার ধনকুবের ব্যবসায়ী জেমস প্যাকারের দায়ের করা একটি মামলায় নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে জালিয়াতি এবং বিশ্বাস ভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছে। ইসরায়েলের চ্যানেল ১০-য়ের এক খবরে বলা হয়েছে, গত বছরের ডিসেম্বরে প্যাকার তদন্তকারীদের জানিয়েছেন যে, তিনি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এবং তার স্ত্রী সারাকে উপহার দিয়েছেন।

ওই মামলায় ফাইট ক্লাব, গন গার্ল ও দ্য রেভনেন্টের মতো নামকরা হলিউডি চলচ্চিত্রের প্রযোজক মিলচানকেও বিচারের মুখোমুখি হতে হবে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি পুলিশ। উপহার নিয়ে নেতানিয়াহু হলিউডি প্রযোজককে আইনী সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। বিদেশ ফেরত কোনো ইসরায়েলি দেশে বসবাস শুরু করলে তাকে ১০ বছরের কর রেয়াত দেওয়ার যে সুযোগ আছে প্রধানমন্ত্রী তা মিলচানকে পাইয়ে দেয়ার সুপারিশ করেছিলেন। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয় পরে নেতানিয়াহুর ওই প্রস্তাব আটকে দেয়।

বিভিন্ন মামলায় নেতানিয়াহুকে কমপক্ষে সাতবার জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন তদন্তকারীরা। নেতানিয়াহুকে বিচারের মুখোমুখি করা হবে কিনা সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাঠানো হবে। কয়েক মাসের মধ্যেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এদিকে, দেশটির আইনমন্ত্রী আয়েলেত শেকেড বলেছেন, অভিযোগ দায়ের হলেই কোনো প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করতে বাধ্য নন।

Advertisement

সামনের বছরের নভেম্বরে দেশটিতে পরবর্তী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। তবে ইতোমধ্যেই নেতানিয়াহু নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন জোটের অবস্থাও ভাঙনের পথে। তবে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে বেনজামিন নেতানিয়াহু বলেন, দুর্নীতির অভিযোগে জোটে ভাঙন বা আগাম নির্বাচনের সম্ভাবনা নেই। বেনজামিন নেতানিয়াহু এ নিয়ে দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতায় আছেন। এই দীর্ঘ সময়ে বেশ কয়েক বারই তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু তিনি বরাবরই এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।

টিটিএন/এমএস