আইসল্যান্ডে বড় বড় ডাটা সেন্টার প্রতিষ্ঠা করে বিটকয়েন খোঁজার যে হিড়িক পড়েছে তাতে দেশটি এখন বিদ্যুৎ সঙ্কটে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। দেশটির একটি জ্বালানি কোম্পানি এইচএস ওরকা জানিয়েছে, এসব ডাটা সেন্টার চালাতে গিয়ে বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ খরচ হচ্ছে। খবর বিবিসি।
Advertisement
কোম্পানির মুখপাত্র জানিয়েছেন, এ বছর আইসল্যান্ডে সব বাড়িতে যত বিদ্যুৎ খরচ হবে তার চেয়ে হয়তো বেশি বিদ্যুৎ খরচ হবে এসব ডাটা সেন্টারে।
তিনি জানান, আরও অনেকে এখন এসব ডাটা সেন্টার স্থাপনের দিকে ঝুঁকছে। সব প্রকল্প যদি বাস্তবায়িত হয়, সেগুলো চালানোর মতো বিদ্যুৎ আইসল্যান্ডে থাকবে না। আইসল্যান্ডের জনসংখ্যা খুব কম। মাত্র তিন লাখ ৪০ হাজার।
কিন্তু সম্প্রতি এই দ্বীপে নতুন ডাটা সেন্টার গড়ার হিড়িক পড়েছে। যেসব কোম্পানি এসব ডাটা সেন্টার স্থাপন করছে তারা দেখাতে চায় যে তারা পরিবেশবান্ধব জ্বালানি ব্যবহার করছে। আইসল্যান্ডে উৎপাদিত বিদ্যুতের শতকরা ১শ ভাগই আসে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে।
Advertisement
বিটকয়েন মাইনিং বলতে বোঝায় বিশ্বজুড়ে যে বিটকয়েন নেটওয়ার্ক আছে তার সঙ্গে কম্পিউটারকে যুক্ত করা এবং এই ক্রিপ্টো কারেন্সীর যে লেনদেন হচ্ছে সেগুলো যাচাই করা।
যেসব কম্পিউটার এই যাচাইয়ের কাজটি করে, তারা সামান্য পরিমাণে বিটকয়েন পুরস্কার পায় এর প্রতিদানে। কিন্তু কেউ যদি এই কাজটি বিশাল আকারে করতে পারে, সেটি বেশ লাভজনক। কিন্তু আইসল্যান্ডে এখন এই ব্যবসার বিপুল প্রবৃদ্ধি ঘটছে। আর তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডাটা সেন্টারগুলোর জন্য বিদ্যুৎ খরচ।
অনুমান করা হচ্ছে, এবছর আইসল্যান্ডে বিটকয়েন মাইনিং অপারেশনের পেছনে প্রায় ৮শ ৪০ গিগাওয়াট ঘন্টা বিদ্যুৎ খরচ হবে। এর বিপরীতে আইসল্যান্ডের সব বাড়ি মিলে বিদ্যুৎ খরচ হচ্ছে সাতশো গিগাওয়াট ঘন্টা। বিটকয়েন নিয়ে এই পাগলামি যে শিগগিরই থামবে তার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
জ্বালানি কোম্পানি এইচএস ওরকার মুখপাত্র জানান, আইসল্যান্ডে ডাটা সেন্টার স্থাপন করতে আগ্রহী এরকম লোকজনের কাছ থেকে তারা প্রচুর কল পাচ্ছেন। তিনি বলেন, যে পরিমাণ ডাটা সেন্টার স্থাপনের কথা চলছে, তার সবগুলোতে হয়তো বিদ্যুৎ দেয়াই সম্ভব হবে না। তিনি বলেন, যদি সব ডাটা সেন্টার সত্যি সত্যি চালু হয়, আইসল্যান্ডে তাদের দেয়ার মতো বিদ্যুৎ আর অবশিষ্ট থাকবে না।
Advertisement
আইসল্যান্ডের ক্রিপটো কারেন্সী মাইনিং ব্যবসা এ বছর দারুণ চাঙ্গা হয়ে উঠে মুনলাইট প্রজেক্ট নামে একটি বিশাল ডাটা সেন্টার স্থাপন প্রকল্পকে ঘিরে। এ বছরের শেষ নাগাদ এটি চালু হবে। তবে এই শিল্প আইসল্যান্ডের কী কাজে আসবে, তা নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলছেন।
টিটিএন/এমএস