কী ভাই, কোনো খবর পেলেন। আজ কী কেউ দেখা করতে এসেছে। কারও মাধ্যমে কী জানতে পেরেছেন কেমন আছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় আনোয়ারা মুসলিম গালর্স স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে এক বৃদ্ধ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের মূল ফটকের সামনে থেকে বেসরকারি টেলিভিশনের ক্যামেরাপারসনকে দেখে কৌতূহলী হয়ে এসব প্রশ্ন করেন।
Advertisement
বৃদ্ধের প্রশ্নে কিছুটা বিব্রত হয়ে ক্যামেরাপারসন বললেন, সরি, আঙ্কেল। কোনো খবর নেই। সকাল ৯টা থেকে চরকির মতো ক্যামেরা কাঁধে নিয়ে ঘোরাফেরা করলেও কোনো খবর পাচ্ছি না। গতকাল পর্যন্ত কারা কর্মকর্তারা বেগম খালেদা জিয়ার ডিভিশন পাওয়া না পাওয়ার ব্যাপারে মুখ খুললেও আজ সবাই মুখে কুলুপ এঁটেছে।
আমাদের রিপোর্টার বার বার যোগাযোগ করলেও কর্মকর্তারা সবাই মিটিং এ ব্যস্ত রয়েছেন বলে এড়িয়ে যাচ্ছেন। প্রবেশমুখে পুলিশি নিরাপত্তা ও কারা অধিদফতরের আশপাশের বাসিন্দাদের হেঁটে যাওয়া ছাড়া আর কিছুরই তো ফুটেজ পাচ্ছি না বলে সামনে এগিয়ে গেলেন ওই ক্যামেরাপারসন।
সরেজমিনে দেখা যায়, শুধু ওই ক্যামেরাপারসন একাই নন, কারাবন্দি খালেদা জিয়ার ব্যাপারে একটু তথ্য সংগ্রহের বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ার কর্মীরা সকাল থেকে জেলগেট ও জেলগেট চৌহদ্দির বিভিন্ন প্রবেশপথে অবস্থান গ্রহণ করলেও কারা অভ্যন্তরে কেমন আছেন খালেদা জিয়া তা কেউ জানতে পারেনি।
Advertisement
সকাল থেকে জেলখানার বাইরে চারপাশে ছুটোছুটি করেও উল্লেখযোগ্য কোনো তথ্য কিংবা ফুটেজ না পাওয়ায় পুলিশি ব্যারিকেডের বাইরে ভিডিও ক্যামেরা রেখে বাইরে অলস সময় কাটাতে দেখা যায়। তবে নিরাপত্তার কাজে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের অস্ত্র উঁচিয়ে সটান হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
এ রাস্তা দিয়ে প্রবেশের ক্ষেত্রে কোথায় যাবেন, সঙ্গে ব্যাগ থাকলে তা তল্লাশি করেই ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়া হয়। জেলগেটের সামনে অর্ধডজন কারারক্ষীরা অস্ত্র হাতে ও জেলগেটের দক্ষিণ দিকে দেয়ালের ওপর অস্ত্র তাক করে কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
চকবাজারগামী রাস্তার পাশে টহলগাড়িতে বসে থাকা কয়েকজন নারী-পুরুষ পুলিশ সদস্যদের আচারওয়ালার কাছ থেকে আচার কিনে খেতে দেখা যায়। গত কয়েকদিন ধরে এ এলাকার কয়েকটি ফার্নিচারের দোকানপাট বন্ধ থাকলেও আজ সেগুলো খুলতে দেখা গেছে। তবে কোনো দোকানেই ক্রেতা দেখা যায়নি।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাৎ মামলায় গত বৃহস্পতিবার বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। গত পাঁচদিন ধরে বিভিন্ন মিডিয়ায় কারাগারে বেগম খালেদা জিয়ার কেমন আছেন তা নিয়ে নানা প্রতিবেদন লেখা হলেও অধিকাংশ তথ্যই সঠিক নয় বলে জানান একজন ঊর্ধ্বতন কারা কর্মকর্তা।
Advertisement
তিনি জানান, অন্যান্য কয়েদির ব্যাপারে কারা কর্মকর্তাদের কেউ কেউ মুখ খুললেও খালেদার জিয়ার ক্ষেত্রে একমাত্র আইজি প্রিজন ছাড়া অন্য কাউকে মুখ খুলতে নিষেধ করা হয়েছে। কারা কর্মকর্তারা মিডিয়াকর্মীদের এড়িয়ে চলছেন। পারতপক্ষে মিডিয়াকর্মীদের মোবাইল ফোন রিসিভ করছেন না।
সোমবার দুপুরে কারা অধিদফতরের একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, বেগম খালেদা জিয়াকে ডিভিশন দেয়ার পর যথারীতি তিনি কারাবাস করছেন। তাকে নিয়ে কিছু বলার নেই। এ মুহূর্তে কারা কর্মকর্তারা মার্চে কারা সপ্তাহ পালনের প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত।
এমইউ/জেএইচ/আইআই