টাঙ্গাইলের মধুপুরে চলন্ত বাসে কলেজছাত্রী জাকিয়া সুলতানা রূপাকে গণধর্ষণ ও হত্যার সারা দেশে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে।
Advertisement
যে বাসে এ অমানবিক ঘটনাটি ঘটেছিল সেই ছোঁয়া পরিবহনের বাসটি নিহত রূপার পরিবারকে সাতদিনের মধ্যে হস্তান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে গণধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ৪ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সোমবার বেলা সোয়া ১১টায় এ রায় ঘোষণা করেন টাঙ্গাইল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত বিচারক এবং অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক আবুল মনসুর মিয়া। এ সময় আদালতে মামলার আসামিরা উপস্থিত ছিল।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলো- ছোঁয়া পরিবহনের চালক হাবিবুর রহমান (৪৫), হেলপার শামীম (২৬), আকরাম (৩৫) ও জাহাঙ্গীর (১৯)। সুপারভাইজার সফর আলীকে (৫৫) সাত বছরের কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
Advertisement
এ রায় ঘোষণার মাধ্যমে মাত্র ১৭২ দিনের মধ্যে শেষ হলো আলোচিত এ মামলার বিচার কার্যক্রম। আসামিরা সবাই কারাগারে রয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এ কে এম নাছিমুল আক্তার। তাকে সহায়তা করেন মানবাধিকার কমিশনের আইনজীবী এস আকবর খান, মানবাধিকারকর্মী এম এ করিম মিয়া ও মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার টাঙ্গাইল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আজাদ। আসামিপক্ষে ছিলেন শামীম চৌধুরী দয়াল ও দেলোয়ার হোসেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৫ আগস্ট বগুড়া থেকে ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে রূপাকে চলন্ত বাসে ধর্ষণ করে পরিবহন শ্রমিকরা। বাসেই তাকে হত্যার পর মধুপুর উপজেলায় পঁচিশ মাইল এলাকায় বনের মধ্যে রূপার মরদেহ ফেলে রেখে যায়।
এলাকাবাসীর কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ ওই রাতেই অজ্ঞাত নারী হিসেবে তার মরদেহ উদ্ধার করে। পরদিন ময়নাতদন্ত শেষে রূপার মরদেহ বেওয়ারিশ হিসেবে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় গোরস্থানে দাফন করা হয়।
Advertisement
এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মধুপুর থানায় হত্যা মামলা করে। পত্রিকায় প্রকাশিত ছবি দেখে রূপার ভাই হাফিজুর রহমান মধুপুর থানায় গিয়ে ছবির ভিত্তিতে তাকে শনাক্ত করেন।
গত ২৮ আগস্ট এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে ময়মনসিংহ-বগুড়া সড়কের ছোঁয়া পরিবহনের হেলপার শামীম (২৬), আকরাম (৩৫) ও জাহাঙ্গীর (১৯) এবং চালক হাবিবুর (৪৫) ও সুপারভাইজার সফর আলীকে (৫৫) গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদেরকে আদালতে হাজির করা হলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
এএম/এমএস