এটা খুবই দুঃখজনক যে প্রশ্ন ফাঁসের মত গুরুতর অপরাধের ঘটনা ঘটেই চলেছে। নানা রকম উদ্যোগ স্বত্ত্বেও প্রশ্ন ফাঁস ঠেকানো যাচ্ছে না। বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষা থেকে শুরু করে চাকরির প্রতিযোগিতামূলক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নও ফাঁস হচ্ছে। চলমান এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার প্রশ্নপত্রও ফাঁস হচ্ছে। প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে পরীক্ষা চলাকালীন কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে কমিয়ে দেয়া হয়েছে ইন্টারনেটের গতি। কিন্তু প্রশ্ন ফাঁস ঠেকানো যাবে তো?
Advertisement
চলমান এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকাতে মোবাইল ইন্টারনেটের গতি সকালে এক ঘণ্টা কমিয়ে দিতে মোবাইল ফোন অপারেটর প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। গতকাল রোববার সকালে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি বিটিআরসি থেকে পাঠানো হয়েছে। প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় গত কয়েকদিনে ১২ জনকে আটক করে ডিবি পুলিশ। এর পরও ঠেকানো যাচ্ছে না প্রশ্নপত্র ফাঁস। এ কারণে বাকি পরীক্ষাগুলোতেও যেন প্রশ্নপত্র ফাঁস না হয় সেজন্য বিটিআরসির এ নির্দেশনা।
এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে প্রশ্নফাঁসকারী একাধিক চক্র বিরাজমান। তারা মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস করে। তারা প্রযুক্তির অপব্যবহার করেও প্রশ্ন ফাঁস করছে। এদের পেছনে শক্তিশালী হাত থাকাও অসম্ভব কোনো ব্যাপার নয়। অভিযোগ আছে সর্ষের ভেতরেই রয়েছে ভূত। নাহলে এই চক্রকে কেন সামাল দেয়া যাচ্ছে না। প্রশ্নফাঁসের কারণে দেখা দিচ্ছে বিশৃঙ্খলা। পরীক্ষার্থীরা নানা রকম গুজবে কান দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অভিভাবকরাও যার পর নাই চিন্তিত। এ অবস্থায় যে কোনো মূল্যে প্রশ্ন ফাঁস রোধ করতে হবে।
প্রশ্নপত্র ফাঁসকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির বিধানসহ আইন রয়েছে। কিন্তু সেই আইনে কারো সাজা হয়েছে এমন নজির মেলা ভার। দুষ্টের দমন ও শিষ্টের লালন ছাড়া সমাজে আইন প্রতিষ্ঠা কঠিন। যত ব্যবস্থার কথাই বলা হোক না কেন অপরাধীর শাস্তি না হলে কোনো অবস্থায়ই অপরাধ বন্ধ করা যাবে না। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে সর্ষের ভেতরের ভূত আগে তাড়াতে হবে। অভ্যন্তরীণ কোনো সহযোগিতা ছাড়া প্রশ্নফাঁস অসম্ভব ব্যাপার। এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে প্রশ্নফাঁস রোধে সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
Advertisement
এইচআর/জেআইএম