আইন-আদালত

মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা রণদা প্রসাদ সাহা ও তার ছেলে ভবানী প্রসাদ সাহাকে অপহরণ ও হত্যারসহ মানবতাবিরোধী অপরাধে মাহবুবুর রহমানের (৬৯) বিরুদ্ধে আনা তিনটি অভিযোগ আমলে নিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের জন্য ১১ মার্চ শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত।

Advertisement

ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন। আদালতে রোববার রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর রানা দাশ গুপ্ত। অন্যদিকে আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আবদুস সাত্তার পালোয়ান।

আবদুস সাত্তার পালোয়ান জানান, একটি ফৌজদারি মামলায় ৬৯ বছর বয়সী মাহবুবুর রহমানকে ২০১৭ সালে অাটক করে পুলিশ। ওই বছরের ৯ জুন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ট্রাইব্যুনালের অধীনে মাহবুবকে গ্রেফতার দেখানো হয়। মাহবুবের বাড়ি টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার বইরাতিয়াপাড়ায়।

তদন্ত সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় ৭ মে আসামি মাহবুবুরের সহায়তায় পাকিস্তানি বাহিনীর সদস্যরা রণদা প্রসাদ সাহা ও তার ছেলে ভবানী প্রসাদ সাহাকে নারায়ণগঞ্জের খানপুর এলাকার সিরাজউদ্দৌলা রোডের বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায়। পরে তাদের আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। রণদা প্রসাদ সাহা হলেন কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট অব বেঙ্গলের প্রতিষ্ঠাতা।

Advertisement

এই আসামির বিরুদ্ধে সাহাপাড়া এলাকার ৩৩ জন হিন্দুকে ধরে নিয়ে হত্যা এবং মির্জাপুর থেকে ২৪ জনকে অপহরণের পর এদের মধ্যে ২২ জনকে মধুপুরে নিয়ে হত্যার অভিযোগ রয়েছে।

তবে চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদনে মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে টাঙ্গাইলের বিখ্যাত সমাজ সেবক রণদা প্রসাদ সাহা হত্যাসহ অপহরণ, অগ্নিসংযোগ ও গণহত্যার তিনটি অভিযোগ রয়েছে।

এর আগে গত ১১ জানুয়ারি একাত্তরে দানবীর রণদা প্রসাদ সাহা হত্যায় অভিযুক্ত টাঙ্গাইলের মো. মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে হত্যা, অপহরণ ও গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের তিনটি আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেন রাষ্ট্রপক্ষ।

এর আগে ২০১৭ সালে ২ নভেম্বর রণদা প্রসাদ সাহা হত্যায় অভিযুক্ত টাঙ্গাইলের মো. মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করার পর তা প্রকাশ করে তদন্ত সংস্থা। তদন্তে মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে অপহরণ, হত্যা, অগ্নিসংযোগ ও গণহত্যার তিনটি অভিযোগ আনা হয়।

Advertisement

রণদা প্রসাদ সাহার পৈত্রিক নিবাস ছিল টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে। এক সময় নারায়ণগঞ্জে পাটের ব্যবসায় নামেন রণদা প্রসাদ সাহা। থাকতেন নারায়ণগঞ্জের খানপুরের সিরাজদিখানে। সে বাড়ি থেকেই তাকে, তার ছেলে ও অন্যদের ধরে নিয়ে যায় আসামি মাহবুবুর রহমান ও তার সহযোগীরা। এফএইচ/জেডএ/আরআইপি