জেলকোড অনুযায়ী খালেদা জিয়াকে কারাগারে ডিভিশন দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। রোববার বেলা সোয়া ১১টার দিকে আসামিপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. আখতারুজ্জামান এ আদেশ দেন।
Advertisement
এদিন আদালতে খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া এ সংক্রান্ত একটি আবেদন করেন। আবেদনে তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী। বিধি অনুযায়ী তিনি ডিভিশন পাওয়ার যোগ্য। তাই তার ডিভিশন আবেদন মঞ্জুর করা হোক।
অপরদিকে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ডিভিশনের চেয়েও বেশি মর্যাদা পাচ্ছেন। তার পক্ষে ডিভিশন আবেদনটি মঞ্জুর করা হলে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।
এ সময় আদালতে খালেদার আইনজীবী জাকির হোসেন ভূঁইয়া, জয়নাল আবেদীন মেজবাহ, জিয়াউদ্দিন জিয়া, এম হেলাল উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
Advertisement
অপরদিকে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, মামলার রায়টি যেন দ্রুত কার্যকর করা হয় এবং আদালত খালেদা জিয়াসহ আসামিদের বিরুদ্ধে যে দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন তা যেন রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এই মামলায় অন্য আসামি খালেদার ছেলে তারেককে দেয়া হয়েছে ১০ বছরের কারাদণ্ড।
আদালত বলেছেন, বয়স বিবেচনায় কম সাজা দেয়া হয়েছে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে। রায়ের পরই নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কারাগারে নেয়া হয় বেগম জিয়াকে। দণ্ডবিধি ১০৯ ও ৪০৯ ধারায় খালেদা জিয়াসহ বাকিদের সাজা দেয়া হয়। কারাদণ্ডের পাশাপাশি সব আসামিকে দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়।
মামলায় মোট আসামি ছয়জন। তার মধ্যে তিনজন পলাতক। তারা হলেন- বিএনপির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী এবং বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।
Advertisement
এ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন ৩২ জন। ১২০ কার্যদিবসের বিচারকার্য শেষ হয়েছে ২৩৬ দিনে। আত্মপক্ষ সমর্থনে সময় গেছে ২৮ দিন। যুক্তি উপস্থাপন হয়েছে ১৬ দিন এবং আসামিপক্ষ মামলাটির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে উচ্চ আদালতে গেছেন ৩৫ বার।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় একটি মামলা করে দুদক।
২০১০ সালের ৫ আগস্ট তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-অর-রশীদ। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।
জেএ/বিএ/জেআইএম