খেলাধুলা

১১০ রানেই শেষ বাংলাদেশ

শুরুটা করেছিলেন লাকমল। শেষটা রাঙিয়ে দিলেন ধনঞ্জয়া। আর লঙ্কান এই দুই বোলারে দুর্দান্ত বোলিংয়ে শেষ পর্যন্ত ১১০ রানেই থেমেছে বাংলাদেশের ইনিংস। ফলে লঙ্কানদের চেয়ে প্রথম ইনিংসে ১১২ রানে পিছিয়ে থাকল টাইগাররা।

Advertisement

চাপ নিয়েই দ্বিতীয় দিনে ব্যাট করতে নামে আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান লিটন দাস ও মিরাজ। তবে খুব বেশি সুবিধা করতে পারেনি লিটন। লাকমলের ছেড়ে দেওয়ার মতো বল জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলতে গিয়ে স্টাম্পে টেনে আনেন উইকেটরক্ষক এই ব্যাটসম্যান। ফলে ২৫ রান করেই সাজঘরে ফিরে যান এই তারকা।

লিটনের বিদায়ের পর মিরাজকে ভালোভাবেই সঙ্গ দিচ্ছিলেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। দুইজনে মিলে গড়েন ৩৪ রানের জুটি। তবে এরপরই ঘটে ছন্দপতন। ধনঞ্জয়ার অফ স্টাম্পের বাইরের স্পিন করা বল ব্যাট-প্যাডের ফাঁক দিয়ে গিয়ে লাগে স্টাম্পে। দুই বল ব্যবধানে ফিরে যান সাব্বির। এই স্পিনারের বল স্ট্রেট ড্রাইভ করতে চেয়েছিলেন। তবে বল স্পিন করায় যেভাবে খেলতে চেয়েছিলেন পারেননি। মিডউইকেটে নিচু ক্যাচ চলে যায় দিনেশ চান্দিমালর হাতে। সাব্বিরের বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গে শেষ হয়ে যায় বাংলাদেশের লিডের স্বপ্ন।

নিজের পরের ওভারেই রাজ্জাককেও ফিরিয়ে দেন ধনঞ্জয়া। ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। পরের ওভারেই রান আউট হন তাইজুল। আর পেরেরার বলে মোস্তাফিজ এলবিডব্লিউ হয়ে সাজঘরে ফিরলে ১১০ রানেই থামে বাংলাদেশের ইনিংস। মিরাজ ৩৮ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন।

Advertisement

এর আগে শ্রীলঙ্কাকে ২২২ রানে অল আউট করে ব্যাট করতে নেমে তামিম ইকবাল ইনিংসের প্রথম ওভারের তৃতীয় বলেই রিটার্ন ক্যাচ দেন লাকমালের হাতে। তামিমের বিদায়ের পর দ্রুত বিদায় নেন চট্টগ্রাম টেস্টের দুই ইনিংসে সেঞ্চুরির দেখা পাওয়া মুমিনুল। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই খামখেয়ালিপনা করতে গিয়েই বলতে গেলে রানআউট হন টেস্টে বাংলাদেশের সেরা ব্যাটসম্যান মুমিনুল হক।

কুশল পেরেরাকে মিড-অফে খেলেই এক রান নিতে গেলেন ইমরুল কায়েস। দৌড়ে আসলেন মুমিনুলও; কিন্তু ক্রিজে পৌঁছে গেছেন মনে করে কিংবা কাছাকাছি হওয়ার পর রানআউট থেকে বেঁচে গেছেন মনে করে তিনি কিছুটা স্লো হয়ে যান। এরই মধ্যে বল চলে আসল। মুমিনুল ব্যাট ক্রিজে ছোঁয়ানোর আগেই উইকেট ভেঙে দিলেন উইকেটরক্ষক ডিকভেলা। ৪ রানে পড়লো দ্বিতীয় উইকেট।

তামিম-মুমিনুলের পরপর বিদায় মানে বাংলাদেশের দারুণ ব্যাটিং বিপর্যয়। এই বিপর্যয় সামাল দিতে খুব সতর্কভাবে এগিয়ে চলা প্রয়োজন ছিল ইমরুল কায়েস আর মুশফিকুর রহীমকে। এ দু’জনকে সে চেষ্টা করেননি তা নয়। বিশেষ করে মুশফিকুর রহীম; কিন্তু অতি সতর্কতা এবং বোকামির দণ্ড দিতে হলো তাকে। সুরঙ্গা লাকমালের বল ছেড়ে দিতে গিয়ে বোল্ড হয়ে গেলেন মুশফিক।

৯ম ওভারের শেষ বলটি অফ স্ট্যাম্পের অনক বাইরে মনে করে ছেড়ে দেন মুশফিক। যদিও তিনি দাঁড়িয়েছিলেন লেগ স্ট্যাম্পের ওপর। কিন্তু বল হালকা ইনসুইং করে ভেতরে ঢুকে যায় এবং উড়িয়ে দিয়ে যায় তার উইকেট। ১২ রানে পড়লো ৩য় উইকেট। মুশফিক বিদায় নিলেন মাত্র ১ রান করে।

Advertisement

মুশফিকের বিদায়ের পর ধরে খেলার চেষ্টা করেন ইমরুল কায়েস এবং লিটন কুমার দাস। এ দু’জনের ব্যাটে ৩৩ রানের জুটি গড়ে ওঠে। কিন্তু লঙ্কান স্পিনারদের চাপের মুখে টিকে থাকাই যেন কঠিন হয়ে পড়ে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের জন্য। সে কারণে, টিকতে পারলেন না ইমরুল কায়েসও। তিনিও আউট হয়ে গেলেন ঘূর্ণি তোপে পড়ে।

দিলরুয়ান পেরেরার বলে এলবিডব্লিউ হয়ে যান ইমরুল। যদিও রিভিউ নিয়েছিলেন তিনি; কিন্তু লাভ হলো না। উইকেট হারান তিনি। এ সময় তার ব্যক্তিগত রান ছিল ১৯। ৫৫ বলে খেলা ইনিংসটি সাজানো ছিল ৩ বাউন্ডারিতে। ইমরুল আউট হওয়ার পর আর দুই ওভার খেলা হলো। এরপরই শেষ হয় প্রথম দিনের খেলা।

এমআর/এমএস