দেশজুড়ে

পাওয়া-না পাওয়ার আনন্দ-হতাশা বরিশালবাসীর

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বরিশাল সফরকে কেন্দ্র করে নতুন আশায় বুক বেঁধেছিল দক্ষিণাঞ্চলের কোটি মানুষ। দুই মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দক্ষিণাঞ্চলের ব্যাপক উন্নয়ন হওয়ায় এ অঞ্চলের মানুষের চাওয়া-পাওয়া আরও যোগ হয়েছে ভোলার গ্যাস বরিশালে সরবরাহ, মেডিকেল ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং সন্ধ্যা নদীর ওপর সেতুসহ প্রায় এক ডজন দাবি।

Advertisement

তবে বৃহস্পতিবার বরিশাল নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ভোলার গ্যাস পাইপলাইনের মাধ্যমে বরিশালে সরবরাহ, ভোলার গ্যাস ভোলায় ব্যবহার করে পাওয়ার প্লান্টের মাধ্যমে বরিশালে বিদ্যুৎ সরবরাহ, বরিশাল থেকে ভোলা যেতে নদীর ওপর সেতু নির্মাণ এবং দেশের বড় শহরগুলোর মতো বরিশালেও মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন। তার এই ঘোষণায় আনন্দ প্রকাশ করে বঙ্গবন্ধু উদ্যানে উপস্থিত লাখো জনতা। বিভিন্ন স্লোগান ও করতালি দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতাও জানান তারা।

জনসভার শুরুতে অনুষ্ঠানের সভাপতি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ এমপি উত্থাপিত ৭টি উন্নয়ন প্রস্তাবনার প্রেক্ষিতের প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে আংশিক দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন। কিন্তু বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলকে বাঁচাতে নদীখনন, বরিশাল স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক খেলার আয়োজন, বরিশাল বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীতকরণ, বানারীপাড়ার সন্ধ্যা নদীতে সেতু নির্মাণ এবং বাবুগঞ্জে অবস্থিত পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরেনারি ক্যাম্পাসকে স্বতন্ত্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সুষ্পস্ট কোনো ঘোষণা না হওয়ায় হতাশ এ অঞ্চলের মানুষ। বিশেষ করে কীর্তনখোলা নদীখনন এবং বরিশাল স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজন দাবির বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের কোনো পর্যায়ে না আসায় হতাশা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী-সমর্থক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে ক্রীড়াপ্রেমীরা স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক খেলা আয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা না পেয়ে ব্যথিত হয়েছেন।

বরিশাল সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সাবেক সভাপতি প্রফেসর এম. মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, জনগণের চাহিদা যার কাছ থেকে পাওয়া যায়, জনগণ তার কাছে উপস্থাপন করে। দেশের যিনি নির্বাহী প্রধান, তার হিসাব-নিকাশ থাকে অন্যরকম। তিনি আঞ্চলিকতার ভিত্তিতে কোনো সিদ্ধান্ত নেন না। আমরা আমাদের চাহিদা তার কাছে পেশ করেছি। ভবিষ্যতে বরিশাল স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজন এবং নদীখনন দাবির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ইতিবাচক মনোভাব দেখাবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।

Advertisement

বরিশাল বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ও বিসিবি পরিচালক আলমগীর হোসেন খান আলো বলেন, দক্ষিণাঞ্চল আওয়ামী লীগের অভিভাবক আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ এমপি জনসভায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে যে ৭টি দাবি উত্থাপন করেছেন, প্রধানমন্ত্রী সেই দাবিগুলো সামনের দিনগুলোতে মেনে নেবেন বলে তারা প্রত্যশা করেন।

দীর্ঘ ছয় বছর পর প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এমপি বৃহস্পতিবার বরিশাল আসেন। বর্তমান সরকারের মেয়াদে বিভাগীয় শহর বরিশালে এটি তার প্রথম সফর। বিগত মহাজোট সরকারের আমলে পর পর দুইবার বরিশাল সফর করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সর্বশেষ ২০১২ সালের ২১ মার্চ তিনি বরিশাল সফরে এসে দক্ষিণাঞ্চলবাসীর বহুল প্রতিক্ষিত বরিশাল আধুনিক নৌবন্দর উদ্বোধন এবং বঙ্গবন্ধু অডিটোরিয়াম, মেরিন একাডেমি, ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন।

সাঈফ আমিন/বিএ

Advertisement