জাতীয়

রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের আমানত কমে যাওয়ার অভিযোগ সংসদে

রাষ্ট্রীয় বাণিজ্যিক ব্যংকগুলোর আমানত ক্রমাগত কমে যাচ্ছে বলে সংসদে অভিযোগ তুলেছেন সংসদ সদস্য মো. মামুনুর রশীদ কিরণ।

Advertisement

বৃহস্পতিবার সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এ অভিযোগ তুলেন। তবে বিষয়টি সঠিক নয় দাবি করে প্রশ্নের জবাবে উত্থাপিত অভিযোগ অস্বীকার করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল মুহিত।

অর্থমন্ত্রী বলেন, অভিযোগটি সঠিক নয়। ২০১৬ সালের নভেম্বর থেকে গত নভেম্বর পর্যন্ত রাষ্ট্রের ছয়টি বণিজ্যিক ব্যাংকের আমানতের গড় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬ দশমিক ৯৮ শতাংশ। এসব ব্যাংকের সংরক্ষিত আমানতের পরিমাণ ২ লাখ ৬৬ হাজার ৮৬২ কোটি টাকা, যা গত বছর একই সময়ে ছিল ২ লাখ ৪৯ হাজার ৪৩৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরে ১৭ হাজার ৪২৩ কোটি টাকা আমানত বেড়েছে।

বেগম উম্মে রাজিয়া কাজলের লিখিত প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, একজন নাগরিকের বাৎসরিক আয় আড়াই লাখ টাকা হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে আয়কর দিতে হয়। এ বিবেচনায় কোনো কোটিপতির করের বাইরে থাকার সুযোগ নেই।

Advertisement

তিনি বলেন, দেশে বর্তমান প্রায় সাড়ে ১৮ লাখ নাগরিক আয়কর দিয়ে থাকেন।

মাথাপিছু জাতীয় আয়ের পরিমাণ ১ হাজার ৬১০ মার্কিন ডলার

বেগম সানজিদা খানমের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে মাথাপিছু জাতীয় আয়ের পরিমাণ এক হাজার ৬১০ মার্কিন ডলার যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ লাখ ২৭ হাজার ৪০১ টাকা। দেশের আয় বৃদ্ধির জন্য বিনিয়োগ প্রতিবন্ধকতা যেমন-বিদ্যুৎ, গ্যাস প্রাপ্তিতে বিলম্ব, বিনিয়োগ প্রক্রিয়াকরণে প্রতিষ্ঠানিক জটিলতা, নিষ্কটক জমির অভাব, ঋণের উচ্চ সুদের হার ইত্যাদি বাধা অপসারণে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এছাড়া ভূমি ব্যবস্থাপনা, রেকর্ড ও রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি আধুনিকায়নের কার্যক্রম দ্রুততর করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকের বৈষম্যের কারণে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মো. আবদুল মুতিনের এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, এ সত্যটি সঠিক নয়। বরং ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতের উদ্যোক্তরা সঠিক সময়ে সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংক থেকে পর্যাপ্ত ঋণ প্রাপ্তির মাধ্যমে দেশীয় জাতীয় উৎপাদনে ক্রমবর্ধমান ভূমিকা রেখে চলেছে। গত বছরের জানুযারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ শিল্পে সরকারি ব্যাংক থেকে ৯ হাজার ৫৩২ কোটি এবং বেসরকারি ব্যাংকসমূহ কর্তৃক মোট ১ লাখ ৭ হাজার ১২৫ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে।

Advertisement

বজলুল হক হারুণের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংকের পাশাপাশি অ-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকদের ঝুঁকিমুক্ত রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন ১৯৯৩ এর অধীনে লাইসেন্সপ্রাপ্ত অ-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকদের ঋণ ও আমানত ঝুঁকি হ্রাসে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য সম্পদ, ঋণ ঝুঁকি, অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ও পরিপালন, মানি-লন্ডারিং প্রতিরোধ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত গাইড লাইন জারি করেছে এবং প্রতিনিয়ত নির্দেশনা মানছে কিনা তা প্ররিদর্শন করা হয়।

এম আবদুল লতিফের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, গত বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ত্রৈমাসিকে সমগ্র ব্যাংকিং খাতে শ্রেণিকৃত ঋণের পরিমাণ ছিল ৮০ হাজার ৩০৭ টাকা। এ ঋণের বিপরীতে আদায়ের পরিমাণ ছিল ৩ হ্জাার ১১০ কোটি টাকা, যার হার ৩ দশমিক ৮৭ শতাংশ।

এইচএস/এএইচ/জেআইএম