দেশজুড়ে

বিদ্যালয়ে হঠাৎ ইউএনও, কাউকে না পেয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস

রোববার দুপুর দেড়টা। রাজশাহীর তানোর উপজেলার কামারগাঁ উচ্চবিদ্যালয়ে আকস্মিক পরিদর্শনে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহা. শওকাত আলী। কিন্তু গিয়েই অবাক হন ইউএনও। কারণ তখনও তালা ঝুলছিল বিদ্যালয়টির শ্রেণিকক্ষে।

Advertisement

শিক্ষার্থীদের তেমন উপস্থিতি ছিল না ওই বিদ্যালয়ে। যে ক’জন শিক্ষার্থী ছিল তারা খেলাধুলা করছিল মাঠে। ইউনিয়নের কর্মসৃজন কর্মসূচি পরিদর্শন শেষে ফেরার পথে বিদ্যালয়টিতে যান ইউএনও। আর এতেই ধরা পড়ে এ দৃশ্য।

কামারগাঁ বিদ্যালয়টি তানোর-মোহনপুরের সীমানা এলাকায়। সদর থেকে ২০ মিলোমিটার দূরে এর অবস্থান। একই আঙিনায় প্রাথমিক ও উচ্চবিদ্যালয় রয়েছে সেখানে। দুটি বিদ্যালয়েরই একই হাল।

এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিদ্যালয়টিতে কর্তৃপক্ষের নজরদারি নেই। শিক্ষকরা আসেন আর যান তাদের ইচ্ছেমতো। পরীক্ষার ফলাফলও সন্তোষজনক নয়। সবমিলিয়ে বিরাজ করছে যাচ্ছেতাই অবস্থা।

Advertisement

বিদ্যালয়টির বেহাল অবস্থা দেখে তখনই ইউএনও মুহা. শওকাত আলী মোবাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানান। পরে রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছবিসহ একটি স্ট্যাটাস দেন। তাতে তিনি অন্যদের সাবধান হতে নির্দেশ দেন। এরপর ভাইরাল হয়ে যায় সেই খবর। শুরু হয় তুমুল সমালোচনা।

ফেসবুক স্ট্যাটাসে ইউএনও লিখেন, ‘তানোরের মাধ্যমিক ও উচ্চ পর্যায়ের প্রধান শিক্ষক ও অধ্যক্ষগণের সমন্বয়ে শিক্ষার মানোন্নয়নে সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তের পরও আজ ছবির বিদ্যালয়টি বেলা ১টা ৫০ মিনিটে বন্ধ পাওয়া গেল। (দুঃখিত ছবি দেয়ার জন্য, দিলাম অন্যরা যাতে সতর্ক হন)।’

ইউএনও আরও লিখেন, ‘সম্মানিত শিক্ষকগণের প্রতি বিনীত অনুরোধ, আপনার সম্মানের সঙ্গে যায় না এমন কাজ থেকে বিরত থাকবেন। দয়া করে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিদ্যালয়/কলেজ খোলা রাখবেন। অবশ্যই সপ্তাহে ছয় দিনই প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হবেন। আপনার জন্য সম্মানজনক নয় এমন যেকোনো পদক্ষেপ গ্রহণে প্লিজ বাধ্য করবেন না।’

মুহা. শওকাত আলী বলেন, শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করতে মফস্বলের বিদ্যালয়গুলো পরিদর্শনে গুরুত্ব দিচ্ছেন তারা। বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিত কয়েকটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে শিক্ষা অধিদফতর।

Advertisement

অন্যদিকে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম।

ফেরদৌস সিদ্দিকী/এএম/আইআই