অর্থনীতি

অর্থপাচারের তদন্ত করবে বিদেশি প্রতিষ্ঠান

অর্থপাচারের তদন্ত করতে একটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া।

Advertisement

রোববার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহাম্মদ রাজী হাসান উপস্থিত ছিলেন।

সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন এনবিআর’র পক্ষে সদস্য এম আশফাক হুসেন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে নির্বাহী পরিচালক মো. মিজানুর রহমান জোদ্দার। এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, অর্থপাচার রোধে একটি অ্যাকাউন্টিং ফার্মকে তদন্ত দেয়ার চিন্তাভাবনা চলছে। যদি বাইরে অর্থপাচার হয় তাহলে যেন তারা তথ্য সংগ্রহ করতে পারে। ওই অ্যাকাউন্টিং ফার্মের অর্থপাচার নিয়ে দেশের বাইরে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে। যদি সম্ভব হয় প্রতিষ্ঠানটি তথ্য বের করে আমাদের জানাবে।

প্রতিষ্ঠানটির নাম উল্লেখ না করে চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করার পর নাম বলবো। এটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান।’গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রেটির (জিএফআই) প্রতিবেদনের বিষয়টি উল্লেখ করে মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া আরও বলেন, ‘প্রতিবেদন অনুযায়ী আমরা দেখতে পাই যে, ২০০৫-১৪ মেয়াদে বাংলাদেশ থেকে ৬১.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পাচার হয়েছে, যা বাংলাদেশের ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জিডিপি’র প্রায় ২৫ শতাংশ। মানিলন্ডারিং, সন্ত্রাসী কাজ এবং সন্ত্রাসী কাজে অর্থায়নের ফলে দেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’

Advertisement

সমঝোতা স্মারকের প্রধান উদ্দেশ্যগুলো তুলে ধরে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কাজে অর্থায়ন সংক্রান্ত তথ্য বিনিময় এবং আন্তঃসংস্থা সহযোগিতা বৃদ্ধি করা; মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়নরোধ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞ ও মতামত প্রদান, প্রশিক্ষণ প্রদান, অবকাঠামোগত উন্নয়নে সহযোগিতা প্রদান এবং লজিস্টিক সহায়তা প্রদান। সমঝোতা স্মারকের উদ্দেশ্য পূরণে একপক্ষ অপরপক্ষের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সভা, সেমিনার, কর্মশালা ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচি আয়োজন করবে; নির্দিষ্ট কোনো বিষয়ে অভিজ্ঞ মতামত গ্রহণ বা প্রদান করবে এবং অভিজ্ঞ কর্মকর্তা বিনিময় করবে।

সমঝোতা স্মারকের যথাযথ প্রয়োগের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি আরো বলেন, সমঝোতা স্মারকের আওতায় নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষার্থে উভয়পক্ষ একজন করে ফোকাল পয়েন্ট এবং প্রয়োজনীয় সংখ্যক প্রাথমিক যোগাযোগ কর্মকর্তা নিয়োগ দেবে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের পক্ষে সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেলের (সিআইসি) মহাপরিচালক এবং বিএফআইইউ’র পক্ষে এর মহাব্যবস্থাপক ও অপারেশনাল প্রধান ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।

এদিকে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহাম্মদ রাজী হাসান বলেন, অর্থপাচার রোধে সতর্ক আছে বাংলাদেশ ব্যাংক। দেশ থেকে বিদেশে অর্থপাচারের অভিযোগ ৩২টি মামলা দায়ের হয়েছে। মামলাগুলো বর্তমানে বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলার (আরাফাত রহমান কোকো) রায় হয়েছে। মামলাটির অর্থও দেশে আনা হয়েছে।

এসআই/এমএআর/আরআইপি

Advertisement