‘ঢাকায় যাওয়ার কথা শুনলে মুক্তামণি খুব কান্নাকাটি করে। নিয়ে যাওয়ার মত এখন আর কোনো অবস্থা নেই। ডাক্তাররাও অনেক চেষ্টা করেছেন। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নিজে চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়ে দেখাশুনা করেছেন তবুও কোনো ফল হলো না। মুক্তামণির হাতে খুব ব্যাথা। গাড়িতে উঠলে ঝাঁকুনিতে আরও কষ্ট হবে এজন্য মুক্তামণি আর ঢাকায় যেতে চায় না। ঢাকার ডাক্তারও বলেছেন গরম পড়লে আমাদের ডেকে নেবেন’ কথাগুলো বলছিলেন মুক্তামণির বাবা ইব্রাহিম গাজী।
Advertisement
তিনি বলেন, আপনাদের দোয়ায় বাড়িতে ভালো আছে মুক্তামণি। শুয়ে বসে আর টিভি দেখে দিন কেটে যায় তার। সেই সঙ্গে তার বন্ধুরা বাড়িতে আসে। তাদের সঙ্গে গল্প করে সে। এখন আর চলাফেরা করতে পারে না সব সময় বিছানায় শুয়ে দিন কাটে তার।
এদিকে মুক্তামণির সঙ্গে কথা হলে সে বলে, ডাক্তার স্যাররা অনেক চেষ্টা করেছেন আমাকে সুস্থ করার জন্য। কিন্তু কোনো লাভ হলো না। ঢাকায় গিয়েও তো কোনো সুফল হচ্ছে না। হাত আবার ফুলে গেছে। প্রচণ্ড ব্যাথা। এখন আল্লাহ্ যদি আমাকে ভালো করেন তাহলেই হয়তো আমি সুস্থ হব। আমি আর ঢাকায় যেতে চাই না।
মুক্তামণি বলে, আমি আগে উঠতে পারতাম। চলাফেরা করতে পারতাম। এখন আর তাও পারি না। বাড়িতেই ভালো আছি। সবার সঙ্গে গল্প করে টিভি দেখে সময় পার হয়ে যায়। রক্তনালীর টিউমারে আক্রান্ত মুক্তামণির বাড়ি সাতক্ষীরা সদরের দক্ষিণ কামারবায়সা গ্রামে। মুক্তামণিকে নিয়ে জাগো নিউজে “লুকিয়ে রাখতে হয় মুক্তাকে” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর তার চিকিৎসার দায়িত্ব নেন তৎকালীন স্বাস্থ্য ও শিক্ষা বিষয়ক সচিব সিরাজুল ইসলাম খান। পরবর্তীতে চিকিৎসার দায়িত্ব নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
Advertisement
গত বছরের ১২ জুলাই মুক্তামণিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। এরপর ৫ আগস্ট প্রথম অস্ত্রোপচার করা হয় মুক্তামণির হাতে। পরে দুই পায়ের চামড়া নিয়ে দুই দফায় তার হাতে লাগানো হয়। ঢামেকের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের পরিচালক অধ্যাপক আবুল কালামের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ একদল চিকিৎসক মুক্তামণির স্কিন গ্রাফটিং (চামড়া লাগানো) অপারেশনে অংশ নেন। এরপর ২২ ডিসেম্বর এক মাসের ছুটিতে সাতক্ষীরার গ্রামের বাড়িতে ফেরে মুক্তামণি ও তার পরিবার।
আকরামুল ইসলাম/এফএ/জেআইএম