অর্থনীতি

শেয়ারবাজারে ‘আতঙ্ক’ : সপ্তাহজুড়ে পতন

দেশের শেয়ারবাজারে এক প্রকার আতঙ্কের মধ্য দিয়েই সপ্তাহ পার করেছেন বিনিয়োগকারীরা। নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা, ঋণ আমানতের অনুপাত (এডিআর) কমানো এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার দুর্নীতি মামলার রায় নিয়ে নানা গুঞ্জন এ আতঙ্ক ছড়িয়ে। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে সার্বিক শেয়ারবাজারে। ফলে মূল্য সূচকের বড় পতনের পাশাপাশি কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।

Advertisement

শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যে গুঞ্জনের ওপর ভর করে বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কগ্রস্থ হয়েছেন তার কোনো ভিত্তি নেই। একটি চক্র কম দামে শেয়ার কেনার জন্য বিনিয়োগকারীদের মধ্যে পরিকল্পিতভাবে এমন গুজব ছড়াচ্ছেন।

তবে বাজার সংশ্লিষ্টদের বার্তায় সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আতঙ্ক কাটছে না। যার ফলে গত সপ্তাহের শেষ তিন কার্যদিবসে বড় দরপতন হয়েছে। এতে শেষ সপ্তাহজুড়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১৯৪ দশমিক ৩৬ পয়েন্ট বা ৩ দশমিক ১৩ শতাংশ। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি বাড়ে ৯৩ দশমিক ৫৭ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৫৩ শতাংশ।

অপর দুই সূচকের মধ্যে শেষ সপ্তাহে ডিএসই-৩০ কমেছে ৭৬ দশমিক ৭৭ পয়েন্ট বা ৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ। যা আগের সপ্তাহে এ সূচক বেড়েছিল ৬৩ দশমিক ৫৭ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৮৪ শতাংশ।

Advertisement

আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের সপ্তাহের তুলনায় ৩৪ দশমিক ৩৮ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৪০ শতাংশ কমেছে। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি বাড়ে ২৭ দশমিক ৫২ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৯৬ শতাংশ।

শেষ সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৩৮টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের মধ্যে মাত্র ৪৮টির দাম আগের সপ্তাহের তুলনায় বেড়েছে। অপরদিকে দাম কমেছে ২৭৪টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৬টি শেয়ারেরর দাম।

মূল্য সূচকের বড় পতনের পাশাপাশি শেষ সপ্তাহে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৩৯৪ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৪৪৯ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ৫৪ কোটি ৬৬ লাখ টাকা বা ১২ দশমিক ১৭ শতাংশ।

গড় লেনদেনের পাশাপাশি মোট লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৯৭৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ২ হাজার ২৪৬ কোটি ৭১ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন কমেছে ২৭৩ কোটি ৩১ লাখ টাকা।

Advertisement

গত সপ্তাহে মোট লেনদেনের ৮৮ দশমিক ৩৮ শতাংশই ছিল ‘এ’ ক্যাটাগরিভুক্ত কোম্পানির শেয়ারের দখলে। এছাড়া বাকি ৭ দশমিক ২৮ শতাংশ ‘বি’ ক্যাটাগরিভুক্ত, ১ দশমিক ৭৫ শতাংশ ‘এন’ ক্যাটাগরিভুক্ত এবং ২ দশমিক ৬০ শতাংশ ‘জেড’ ক্যাটাগরিভুক্ত কোম্পানির শেয়ারের।

এদিকে গত সপ্তাহে মূল্য সূচকের পাশাপাশি ডিএসইর বাজার মূলধনের পরিমাণও কমেছে। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ১৭ হাজার ৬৫৮ কোটি টাকা। যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৪ লাখ ২৬ হাজার ৭৯৯ কোটি টাকা।

সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে গ্রামীণফোনের শেয়ার। কোম্পানিটির ১০০ কোটি ৬৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা সপ্তাহজুড়ে হওয়া মোট লেনদেনের ৫ দশমিক ১০ শতাংশ।

দ্বিতীয় স্থানে থাকা স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যালের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৮৫ কোটি ৮৬ লাখ টাকা, যা সপ্তাহের মোট লেনদেনের ৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ। ৫৩ কোটি ৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইফাদ অটোস।

লেনদেনে এরপর রয়েছে- মুন্নু সিরামিক, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, ন্যাশনাল ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক এবং বাংলাদেশ ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট।

এমএএস/আরএস/পিআর