জাতীয়

বিমানের ক্রুদের দিয়ে বোয়িংয়ের প্রচারণা

একের পর এক বিতর্কিত ঘটনার জন্ম দিচ্ছে বিমান বাংলাদেশ। ফ্লাইট সার্ভিসে নানা অনিয়ম ও নিম্নমানের সেবার কারণে বিমান থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন যাত্রীরা। ফলে আউট স্টেশনে টিকিট বিক্রির হার উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে। এমন দৈন্যদশায় এবার বিমান ক্রুদের দিয়ে চালানো হচ্ছে বোয়িংয়ের প্রচারণা।

Advertisement

বিমানের ক্রুদের গলায় ঝুলিয়ে দেয়া হচ্ছে বোয়িংয়ের লোগো সম্বলিত লাল ফিতা। বোয়িংয়ের এমন লাল ফিতা গলায় ঝুলানো ক্রুদের মডেল বানিয়ে তোলা ছবির ফেস্টুন-ব্যানারে ছেয়ে গেছে বিমানের সদর দফতরসহ বিভিন্ন স্থাপনা। বিশেষ করে গত ২৯ জানুয়ারি (সোমবার) থেকে শুরু হওয়া বিমানের মার্কেটিং কনফারেন্স-২০১৮ উপলক্ষে বলাকার দুয়ারে দুয়ারে বিতর্কিত এমন অগণিত ফেস্টুন টানিয়ে দেয়া হয়েছে।

মাত্র এক সপ্তাহ আগে ব্যাংককের সুবর্ণভূমি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার আদলে কার্পেট বানিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করে বিমানের দেশটিতে নিযুক্ত ওই বিভাগের কর্মকর্তারা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা পর সেটি সরিয়ে নেয়া হয়। এর সপ্তাহ যেতে না যেতেই আরেকটি বিতর্কিত ঘটনার জন্ম দিল বিমান। বিমানের বেতনভোগী কেবিন ক্রুদের মডেল বানিয়ে বোয়িংয়ের ব্যতিক্রমী প্রচারণা চালানো হচ্ছে। বিমানের মার্কেটিং বিভাগের এমন দায়িত্বহীন কার্যকলাপে আবারও বিমান নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে।

 

বিমানে এমন দায়িত্বহীন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি হওয়া উচিৎ বলে জানান জয়নাল আবেদীন নামের এক এয়ারলাইন্স কর্মী।

Advertisement

জানা গেছে, একের পর এক বিতর্কিত ঘটনার জন্য বিমানের গ্রাহক সেবা ও মার্কেটিং অ্যান্ড সেলস বিভাগের প্রতি পরিচালনা পর্ষদও বিরক্ত। খোদ প্রধানমন্ত্রী বিষয়টির অবতারণা করে মন্ত্রী সভার বৈঠকে প্রশ্ন তুলেছেন। বিমানের টিকিটের জন্য বুকিং ব্লক করে সিট খালি যাওয়ার ঘটনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্ন তোলার পর পরিচালনা পর্ষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইনামুল বারী সংশ্লিষ্ট বিভাগের পরিচালককে সমস্যা সমাধানে চাপের মুখে রেখেছেন। তবে কোনো কাজ হচ্ছে না।

বিমানের আউট স্টেশনে সেলসের অবস্থা খুবই খারাপ। ৩০ শতাংশের বেশি টিকিট বিক্রি হচ্ছে না। মার্কেটিং কনফারেন্সের প্রথম দিন সেলসের এমন করুন দশার প্রতিবেদনে পরিচালনা পর্ষদ চেয়ারম্যান ক্ষোভে কনফারেন্স রুম থেকে বের হয়ে যান।

বিমানের মার্কেটিং বিভাগের প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, এখানো গড়ে বিমানের ৩৩ শতাংশের বেশি আসন খালি থাকে। অথচ একই রুটের দেশি-বিদেশি অন্য এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে আসন খালি থাকে না। বিমানের লোকেরা অন্য এয়ারলাইন্স থেকে সুবিধা নিয়ে এসব করেন কি না? -বিষয়টি জানতে চান প্রধানমন্ত্রী। বিমান অদ্যবধি প্রধানমন্ত্রীর সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেনি।

এদিকে বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী শাজাহান কামাল দেশে বাইরে থাকায় এ বিষয়ে তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে বিমান পরিচালনা পর্ষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইনামুল বারী জাগো নিউজকে বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। এমনটি ঘটে থাকলে দুঃখজনক। অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Advertisement

আরএম/আরএস/আরআইপি