তাকে বলা হয় বাংলাদেশের ব্র্যাডমান। একটা সময় টেস্ট গড়ে বিশ্বের বড় বড় ব্যাটসম্যানদের পেছনে ফেলেছিলেন মুমিনুল হক। মধ্যে কয়েকটা দিন খারাপ সময় গেছে। তাতে গড় কিছুটা কমে গেছে। চন্ডিকা হাথুরুসিংহের আমলে তো দল থেকেও বাদ পড়ে গিয়েছিলেন ছোটখাট গড়নের এ বিস্ময় প্রতিভা।
Advertisement
তবে টেস্টে যে মুমিনুল হকের বিকল্প এখনও তৈরি হয়নি, সেটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন তিনি। কে জানে, হয়তো হাথুরুসিংহেকে জবাব দেয়ার একটা জেদও কাজ করছিল। বাংলাদেশের সাবেক এ কোচ যে এখন শ্রীলঙ্কার কান্ডারি। তার দলের বিপক্ষে জবাব দিতে পারলেই তো আসল জবাবটা হবে!
না হয়, সেঞ্চুরির পর ওমন লাফ দিয়ে উদযাপন করতে যাবেন কেন মুমিনুল? বাঁহাতি এ ব্যাটসম্যানের ক্যারিয়ারে এর আগে সেঞ্চুরি আছে ৪টি। শান্ত স্বভাবের জন্য তার সুখ্যাতি আছে। ক্যারিয়ারসেরা ১৮১ রানের ইনিংস খেলার দিনেও আলাদা কোনো উদযাপন করতে দেখা যায়নি মুমিনুলকে। এবার যেমন করলেন।
ফর্ম প্রমাণের দিনে মাত্র ৯৬ বলে সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন মুমিনুল হক। তবে সেঞ্চুরির পরই দায়িত্ব শেষ মনে করেননি। ইনিংস বড় করার তাড়নাটা আগের মতোই আছে বাংলাদেশি ব্র্যাডমানের। পরের সময়টায় কোথায় আরও আগ্রাসী হবেন; উল্টো দেখেশুনে খেলতে দেখা গেছে তাকে। দেড়শ ছুঁয়েছেন ১৭০ বলে। অর্থাৎ সেঞ্চুরির পরের ৫০ রান নিতে তার খরচা ৭৪টি বল।
Advertisement
চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনে এ এক মুমিনুলের কাছেই যেন হার মানতে হয়েছে শ্রীলঙ্কাকে। পুরো দিন তার বিপক্ষে বোলিং করেও বলার মতো সুযোগ তৈরি করতে পারেননি লাকমল-সান্দাকানরা। নিখুঁত ইনিংস যাকে বলে!
সেঞ্চুরির পর দেখেশুনে দেড়শ পেরিয়েছেন মুমিনুল। বাংলাদেশের পক্ষে দ্রুততম ২ হাজার রানও পূর্ণ করেছেন এর মধ্যে। দ্বিতীয় দিনে যখন মাঠে নামবেন, তার সামনে আরও দুটি মাইলফলক ছোঁয়ার সুযোগ থাকবে। একটি নিজের ক্যারিয়ারসেরা ইনিংস ১৮১ পার করা। আরেকটি প্রথমবারের মতো ডাবল সেঞ্চুরি করা।
দিনশেষে ১৭৫ রানে অপরাজিত আছেন মুমিনুল। ক্যারিয়ারসেরা ইনিংস পার করতে আর মাত্র ৭টি রান করতে হবে তাকে। ডাবল সেঞ্চুরিও খুব দূরে নয়। দরকার আর ২৫টি রান। এতটা পথ যখন পেরিয়ে আসতে পেরেছেন, এটুকু আর কতইবা কঠিন হবে! তামিম, সাকিব, মুশফিকের সঙ্গে ডাবল সেঞ্চুরিয়ানের তালিকায় মুমিনুলের মতো একজনের নাম থাকবে না, তা কি করে হয়?
এমএমআর/এমএস
Advertisement