আইন-আদালত

সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল চেয়ে রিট

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে সব ধরনের কোটা বাতিল এবং তা পুনর্নির্ধারণ চেয়ে রিট করা হয়েছে। বুধবার অ্যাডভোকেট এখলাছ উদ্দিন ভূঁইয়া হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট করেন।

Advertisement

রিট আবেদনের বিষয়টি আইনজীবী নিজেই জাগো নিউজকে নিশ্চিত করে বলেন, সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান ও নাতি-নাতনি, প্রতিবন্ধী, নারী, জেলা, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীসহ সব প্রকার কোটা পদ্ধতি বাতিল এবং তা পুনর্নির্ধারণ চেয়ে এ রিট করা হয়েছে।

রিটে কেবিনেট সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, সংসদ সচিবালয়ের সচিব, আইন মন্ত্রণালয়ে সচিব, জনপ্রসাশন মন্ত্রণালয়ের সচিব, সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও পাবলিক সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যানকে বিবাদী করা হয়েছে।

রিট আবেদনের ওপর আগামী সপ্তাহে হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চে শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হবে বলে জানান আইনজীবী এখলাছ উদ্দিন ভূঁইয়া।

Advertisement

রিট আবেদনে বলা হয়, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ সরকার সরকারি, বেসরকারি, আধা-সরকারি, এবং জাতীয়করণ প্রতিষ্ঠানে জেলা ও জনসংখ্যার ভিত্তিতে ৩০ ভাগ, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ১০ ভাগসহ ক্ষতিগ্রস্ত মহিলাদের জন্য কোটা প্রবর্তন করে আদেশ দেন। পরবর্তিতে বিভিন্ন সময় এ কোটা প্রথা সংস্কার ও পরিবর্তন করা হয়।

বর্তমানে জনপ্রসাশন মন্ত্রণালয়ের ১ম ও ২য় শ্রেণির সরকারি নিয়োগ কোটায় প্রতিবন্ধী এক ভাগ, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, নাতি নাতনির জন্য ৩০ ভাগ, নারী ১০ ভাগ, জেলা কোটা ১০ ভাগ, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য ৫ ভাগ, সবমিলে ৫৬ ভাগ বিদ্যমান রয়েছে। এটি সংবিধানের ১৯, ২৮, ২৯ ও ২৯(৩) এর সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

দেশের বর্তমান ২০১৫ সালের ৩১ মার্চ দৈনিক প্রত্রিকার প্রকাশিত রিপোর্ট অনুয়ায়ী দেশের বর্তমান জনসংখ্যা ১৪ কোটি ৯৭ লাখ ৭০ হাজার। এর মধ্যে ১৫ লাখ ৮৬ হাজার ১৪১ জন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী  এবং ২০ লাখ ১৬ হাজার ৬১৫ জন প্রতিবন্ধী।

মুক্তিযোদ্ধাবিষয়ক তথ্য অনুযায়ী দেশে মুক্তিযোদ্ধা দুই লাখ ৯ হাজার এ হিসেবে মোট জনসংখ্যার জন্য যেমন ১৫ লাখ ৮৬ হাজার ১৪১ জন নৃ-গোষ্ঠীর জন্য কোটা থাকছে ৫ ভাগ। ২০ লাখ ১৬ হাজার ৬১০ জন প্রতিবন্ধীর জন্য কোটা রয়েছে এক ভাগ।

Advertisement

পিএসসপির তথ্যমতে ২১, ২২ ও ২৫তম বিসিএস-এ মুক্তিযোদ্ধা এবং তাদের পোষ্যদের সংরক্ষিত ৩০ ভাগ স্থলে ১০.৮, ২.২, ও ৫.২ ভাগ পূর্ণ হয়েছিল। বাকি সংরক্ষিত কোটা শূন্যই থেকে যায়।

এ আইনজীবী বলেন, দেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা ৩০ লাখ। সবকিছু মিলে সরকারি, বেসরকারি, আধা-সরকারি, এবং জাতীয়করণ প্রতিষ্ঠানে জেলা ও জনসংখ্যার কোটা প্রথা অসাংবিধানিক।

সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথা বাতিল ও পুনর্মুল্যায়ন চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদনকারীরা হলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আনিসুর রহমান মির, ঢাকাস্থ কুমিল্লা সাংবাদিক সমিতির সদস্য সচিব ও বাসসের সিনিয়র রিপোর্টার দিদারুল আলম ও দৈনিক আমাদের অর্থনীতির সিনিয়র সাব এডিটর আব্দুল ওদুদ।  

এফএইচ/আরএস/পিআর