স্কোয়াডে ছয়-ছয়জন জেনুইন স্পিনার (তাইজুল ইসলাম, মেহেদী হাসান মিরাজ, সানজামুল ইসলাম, তানবীর হায়দার, আবদুর রাজ্জাক এবং নাঈম হাসান)। দেখে অবাক হয়েছিলেন অনেকেই। বিস্ময়মাখা প্রশ্নের উদ্রেকও ঘটেছিল।
Advertisement
এতগুলো স্পিনার একসঙ্গে কেন? তবে কি চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে স্পিন ফ্রেন্ডলি উইকেটে খেলা হবে? বাঁ-হাতি সাকিবের বাঁ-হাতের কনিষ্ঠ আঙুল ফেটে যাওয়ায় শেষ মুহূর্তে অভিজ্ঞ আবদুর রাজ্জাকের অন্তর্ভুক্তির পর সে প্রশ্ন আরও জোরালো হয়েছে। তখন বোঝাই গেছে, আসলে উইকেট হবে স্পিনবান্ধব। তাই স্বাগতিক দল স্পিন ডিপার্টমেন্টটাকে যতটা সম্ভব সমৃদ্ধ ও বৈচিত্র্যপূর্ণ করে সাজাতে চাচ্ছে টিম ম্যানেজমেন্ট। সে কারণেই হয়ত অভিজ্ঞ রাজ্জাককে দলে নেয়া।
কিন্তু তারপরও রয়ে গেছে সংশয়। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি যার স্পিন বোলিংটা দলের সবচেয়ে কার্যকর অস্ত্র, সেই সাকিব আল হাসান ছাড়া এমন স্পিনসহায়ক উইকেটের পুরোপুরি ফায়দা নেয়া সম্ভব হবে কি? উল্টো দিকে লঙ্কান স্কোয়াডে যুক্ত হবেন টেস্টে সময়ের সেরা বাঁ-হাতি স্পিনার রঙ্গনা হেরাথ। কাজেই স্পিনবান্ধব উইকেট না আবার ‘বুমেরাং’ হয়ে দাঁড়ায়?
সব মিলিয়ে স্পিনসহায়ক উইকেট আর একঝাঁক স্পিনারের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে রীতিমতো একটা ধূম্র্রজাল তৈরি হয়েছে। চারদিকে যত রকম প্রশ্ন আর সংশয়ই থাকুক, ভেতরের খবর- উইকেটের চরিত্র ও গতি-প্রকৃতির কথা চিন্তা করেই একাদশ সাজানো হচ্ছে।
Advertisement
মঙ্গলবার প্র্যাকটিসের পরই টিম কম্বিনেশন চূড়ান্ত হয়ে গেছে। জানা গেছে, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশ মাঠে নামবে প্রথমত ব্যাটিং লাইনআপ সমৃদ্ধ ও দীর্ঘ করে। সে কারণেই সাত ব্যাটসম্যান খেলানোর চিন্তা। সঙ্গে তিন জেনুইন স্পিনার খেলানোর কথাও ভাবা হচ্ছে জোরে সোরে। সে ক্ষেত্রে তিন স্পিনারের সাথে একজন মাত্র পেস বোলারকে দেখা যেতে পারে একাদশে।
আবার কাল সকালে আবহাওয়া আর উইকেটের চেহারা দেখে বোলিং লাইনআপে খানিক রদ-বদলের সম্ভাবনার কথাও শোনা যাচ্ছে। কুয়াশা থাকলে একজনের বদলে দুই পেসারও দেখা যেতে পারে। এমন ভাবনাও নাকি আছে টিম ম্যানেজমেন্টের।
তবে টিম ম্যানেজমেন্ট সূত্রে আজ রাতে মোটামুটি নিশ্চিত জানা গেছে, শেষ পর্যন্ত একাদশ সাজানো হবে সাত ব্যাটসম্যান, এক পেসার ও তিন স্পিনার দিয়ে। একমাত্র পেসার হিসেবে হয়ত কাটার মাস্টার মোস্তাফিজকে দেখা যাবে।
তবে একাদশে একটা চমক থাকার সম্ভাবনা খুব বেশি। যাকে শেষ মুহূর্তে দলে নেয়া হয়েছে এবং অনেকেরই ধারণা ছিল হয়ত তাকে খেলানোও হবে- সেই বাঁ-হাতি স্পিনার আবদুর রাজ্জাকের কিন্তু খেলার সম্ভাবনা খুব কম। জানা গেছে টিম ম্যানেজমেন্ট ও নির্বাচকদের পছন্দের তালিকায় নেই রাজ্জাকের নাম।
Advertisement
সম্ভাব্য চারজন স্পিনার আছেন পছন্দের তালিকায়। সেখানেও নেই রাজ্জাকের নাম। ১৭ বছর বয়সী নাঈমও নেই বিবেচনায়। আছেন তাইজুল, মিরাজ, সানজামুল আর তানবীর হায়দার।
এর মধ্যে বাঁ-হাতি তাইজুল আর অফস্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজের খেলা শতভাগ নিশ্চিত। এখন তৃতীয় স্পিনার কাকে রাখা হবে, তা নিয়েই আছে খানিক দ্বিধা। টিম ম্যানেজমেন্ট একবার বাঁ-হাতি সানজামুলের কথা ভাবছেন। আবার পরক্ষণে নাকি লেগ স্পিনার তানবীর হায়দারের নামও উঠছে আলোচনায়।
এই দুজনার মধ্য থেকে কাল খেলার দিন সকালে থার্ড স্পিনার বেছে নেয়া হবে। তবে এটা নিশ্চিত, অভিজ্ঞ রাজ্জাক ও আনকোরা নবীন অফস্পিনার নাঈম থাকছেন না প্রথম টেস্টের ১১ জনের দলে। তাদের বাইরে রেখেই দল মোটামুটি চূড়ান্ত। শুধু তৃতীয় স্পিনার হিসেবে কাকে খেলানো হবে? তা নিয়েই খানিক দ্বিধা ও সংশয়।
এদিকে লাইন আপে মুশফিকুর রহীমের সাথে উইকেটকিপার কাম ব্যাটসম্যান হিসেবে লিটন দাসও থাকছেন। সাত ব্যাটসম্যান হিসেবে তামিম, ইমরুল, লিটন দাস, মুমিনুল হক, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মুশফিক আর মোসাদ্দেক সৈকতের খেলা এক প্রকার নিশ্চিত।
তাহলে একাদশ কী দাঁড়ালো? আসুন মিলিয়ে নেই-তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস, লিটন কুমার দাস, মুমিনুল হক, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহীম, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান, সানজামুল/তানবীর।
এআরবি/আইএইচএস/বিএ