রাজনীতি

বাংলাদেশে মাইনাস ওয়ান সম্ভব হবে না : খন্দকার মোশাররফ

বাংলাদেশে ‘মাইনাস ওয়ান’ সম্ভব হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

Advertisement

ত‍‌‍িনি বলেন, ‘যদি এক-এগারো সরকারের সময় মাইনাস ওয়ান, মাইনাস টু সম্ভব না হয়ে থাকে আমরা বলতে চাই, ইনশাআল্লাহ মাইনাস ওয়ান এই বাংলাদেশে করা সম্ভব হবে না।’

মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি একথা বলেন।

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক আন্দোলন নামে একটি সংগঠন ‘নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠনে সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপের প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক এই গোলটেবিল আলোচনারা আয়োজন করে।

Advertisement

খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘বর্তমান সরকারকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই- যারা মাইনাস টু চিন্তা করেছিল তারা কিন্তু সকলে মারা যায় নাই। এই সমাজে আছে। তারা ওঁৎ পেতে বসে আছে। আপনাকে দিয়ে মাইনাস ওয়ান করিয়ে তারা আপনাকে মাইনাস করে মাইনাস টু ফর্মুলা বাস্তবায়ন করতে চায়। সেই ষড়যন্ত্র করছে। আপনারা সেই ব্যাপারে হুশিয়ার থাকবেন।’ বিএনপির এই নেতা বলেন, আজকে এই সরকার মাইনাস ওয়ান তথা আমাদের নেত্রীকে মাইনাস করার জন্য ষড়যন্ত্র করছে। আমরা শুধু স্মরণ করে দিতে চাই, এক-এগারো এর জরুরি আইনে মাইনাস টু করার জন্য রাষ্ট্রযন্ত্র ঘোষণা করে পদক্ষেপ নিয়েছিল। জনগণ এবং তৃণমূল নেতাকর্মীদের দৃঢ়তার জন্য মাইনাস টু করা সম্ভব হয়নি। যারা এক-এগারো এর কুশিলব ছিলেন তারা বিদেশে পালিয়ে আছেন কিন্তু দুই নেত্রী বাংলাদেশে আছেন। আজকে সেই এক-এগারো এর যারা ধারাবাহিকতার সরকার তাদেরকে দিয়ে সেই এক-এগারো এর যারা কুশিলব যারা মাইনাস টু ফর্মুলা বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছিল তারা সুকৌশলে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে দিয়ে মাইনাস ওয়ান করার জন্য ষড়যন্ত্র করছে।

বিএনপির এই নীতি নির্ধারক বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে যদি অন‌্যায়ভাবে কোনো রায় চাপিয়ে দেয়া হয় তাহলে এদেশের জনগণের সেন্টিমেন্টের উপর রায় দেয়া হবে। বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি এ দেশের জনগণের যে সমর্থন সে সমর্থনের বিরুদ্ধে রায় দেয়া হবে। বেগম জিয়া যে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছে সেই গণতন্ত্রের উপর আঘাত হবে। খালদা জিয়ার বিরুদ্ধে অন‌্যায়ভাবে রায় দেয়া হলে জাতীয়তাবাদী শক্তির বিরুদ্ধে রায় দেয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আগে থেকেই বলছি এই রায় যদি চাপিয়ে দেয়া হয় তাহলে এদেশের জনগণ তা গ্রহণ করবে না। সারা দেশের ৭০ থেকে ৮০ ভাগ মানুষ খালেদা জিয়ার উপর নির্ভরশীল। খালেদা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে এটা তাদের বিশ্বাস। বেগম জিয়া জনগণের ক্ষমতা ফিরিয়ে দিবে এটা তাদের বিশ্বাস। অতত্রব যদি অন্যায়ভাবে কোনো রায় হয় তা জনগণের বিশ্বাসের উপর আঘাত করা হবে। আঘাত হবে গণতন্ত্রের উপর জনগণের অধিকারের উপর।’

বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘৮ ফেব্রুয়ারি কী হয় তার উপর নির্ভর করবে রাজনীতিতে সম্পূর্ণ পরিবর্তন এবং নতুন মোড় নিবে। ভবিষ্যতে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বেগম খালেদা জিয়া, বিএনপিকে বাহিরে রেখে আমাদেরকে জেলে রেখে এই দেশের জনগণ আবার ২০১৪ মতো নির্বাচন একাদশ জাতীয় নির্বাচনক হতে দিবে না। সেজন্য বলছি ৮ ফেব্রুয়ারির উপর নির্ভর করছে আগামী দিনের রাজনীতি আগামী দিনের নির্বাচন। আবারো বলতে চাই খালেদা জিয়াকে ছাড়া বিএনপিকে ছাড়া একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে না এবং হতে দেয়া হবে না।’

Advertisement

সম্প্রতি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খসড়া চূড়ান্ত করার বিষয়ে বিএনপির এই প্রবীণ নেতা বলেন, গতকাল কেবিনেটে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন করেছে। এই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৫৭ ধারা অত্যন্ত বিতর্কিত। এই ধারা সকল সাংবাদিক সকল মুক্তমনা মানুষ বাতিল চেয়েছিল। খসড়া চূড়ান্ততে ৫৭ ধারা বাতিলের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু তার পরিবর্তে যে ধারা আনা হয়েছে তা এই ৫৭ ধারা থেকেও আরও ভয়ঙ্কর। নতুন আইনে শাস্তি বৃদ্ধি করা হয়েছে। এবং যে যে কাজ করলে ৫৭ ধারায় অভিযুক্ত হওয়ার কথা ছিল সেগুলোকে আরও সম্প্রসারিত করা হয়েছে। ৫৭ ধারাকে বাদ দিয়ে মানুষের চোখকে ফাঁকি দেয়ার জন্য একটা প্রতারণা করে ৫৭ ধারা থেকে আরও ভয়ংকর ধারা সংযোজন করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সংশোধনী তারা খসড়া চূড়ান্ত করেছেন। আমরা তার তীব্র প্রতিবাদ জানাই।

ড. মোশাররফ বলেন, অনুসন্ধানী কিছু প্রতিবেদনের ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের কিছু কাজ গোপনে করতে হয়। এখান তা করা যাবে না। এভাবে বাকশালী কায়দায় সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে খর্ব করা হয়েছিল। সব সংবাদপত্র বাতিল করে ৪টা রাখা হয়েছিল। আমরা মনে করি যেহেতু সরকার অলিখিত বাকশালের পথে হাটছে, মুক্তমনের ব্যক্তিদের মত প্রকাশের শক্তিকে মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে খর্ব করার জন্য এই আইন প্রণয়ন করা হচ্ছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা এদেশে পরিপূর্ণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই। জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই। সাংবাদিকদের স্বাধীনতা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে চাই।

এমএম/এমবিআর/জেআইএম