ফিচার

বাংলাদেশকে বোটানিক্যাল গার্ডেনে পরিণত করতে চাই : আবদুল মতিন

বৃক্ষপ্রেমিক আবদুল মতিন। মানুষ তাকে বলে ‘গাছ মতিন’। তিনি চাকরি করেন একটি করপোরেট প্রতিষ্ঠানের অফিস সহকারী পদে। যেখানে বৃক্ষ মেলা হয়; সেখানেই ছুটে যান তিনি। তার তেমন কোনো প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রি নেই। তবুও তিনি রপ্ত করেছেন গাছ লাগানোর সব কৌশল। জাগো নিউজের পক্ষ থেকে তার সঙ্গে কথা বলেছেন সালাহ উদ্দিন মাহমুদ-

Advertisement

জাগো নিউজ: প্রথমে নিজের সম্পর্কে কিছু বলুন-আবদুল মতিন: গাছ লাগাবো পৃথিবী বাঁচাবো, গাছ লাগাবো পৃথিবী সাজাবো। আমার আপন গাছ, গাছের আপন আমি। ছোটবেলায় আমার এক বন্ধু গাছের ডাল ভেঙেছিল। যে কারণে সেদিন স্যারের অনেক বকুনি শুনতে হয়েছে। সেদিন থেকেই আমি গাছকে ভালোবাসতে শুরু করেছি।

জাগো নিউজ: কখন থেকে কিভাবে সবুজায়নের নেশা তৈরি হলো? আবদুল মতিন: ছোটবেলায় গাছের নিচে স্কুলের ক্লাস হতো। স্কুলের শিক্ষকরা বইয়ের পড়ার আগে গাছ নিয়ে অনেক কথা বলতেন। তখন থেকে আমি গাছ নিয়ে ভাবি।

জাগো নিউজ: এ ক্ষেত্রে কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা বা প্রশিক্ষণ নিয়েছেন কি? আবদুল মতিন: বৃক্ষরোপণের বাস্তব অভিজ্ঞতা ৩৬ বছরের। তাছাড়া ৩ হাজার ৩১৩ জন বিশিষ্ট বৃক্ষপ্রেমিকের সঙ্গে মতবিনিময় করেছি। এটাই আমার শিক্ষা বা প্রশিক্ষণ বলতে পারেন। এছাড়া গাছপালা নিয়ে কথা বলতে ও শুনতে আমার ভালো লাগে।

Advertisement

জাগো নিউজ: বৃক্ষরোপণের নিয়ম-কানুন শিখেছেন কোথায় বা কার কাছে? আবদুল মতিন: আমার প্রতিবেশী এক বড় ভাই নার্সারি বাগানের পরিচর্যা করেন। তিনি বৃক্ষরোপণের যাবতীয় কলাকৌশল আমাকে শিক্ষা দিয়েছেন।

জাগো নিউজ: এ পর্যন্ত কতটি গাছ রোপণ করেছেন?আবদুল মতিন: আমার রোপিত গাছের সংখ্যা প্রায় ৩৫০টি। এছাড়া আমার টিমের রোপণ করা গাছ আছে ৩০০টি।

জাগো নিউজ: কোনো স্বীকৃতি বা অর্জন আছে কি? আবদুল মতিন: আমার কাজে উৎসাহ দিতে ডিএনসিসি একটি ভ্যানগাড়ি দিয়েছে। আর বনবিভাগের দু’জন কর্মকর্তা আমার ফাইল দেখে খুব প্রশংসা করেছেন। একটি দৈনিক পত্রিকার প্রতিবেদন দেখে একজন কর্মকর্তা কাজের গতি বাড়ানোর জন্য ১০ হাজার টাকা দিয়েছেন।

জাগো নিউজ: গাছ লাগাতে গিয়ে কোনো বাধার সম্মুখীন হয়েছেন? আবদুল মতিন: এখনো হয়নি। বরং সহযোগিতাই পেয়ে যাচ্ছি। যাকে যেখানে পাই; তাকেই গাছ লাগাতে বলি। সবাই খুশিই হন। বিরোধিতা করেননি কেউ।

Advertisement

জাগো নিউজ: এ কাজের ক্ষেত্রে কে বা কারা বেশি অনুপ্রেরণা দিয়েছেন? আবদুল মতিন: বিভিন্ন এলাকার মসজিদের ইমাম, কলেজ-মাদ্রাসা-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বেশি অনুপ্রেরণা দিয়েছেন এবং দিয়ে যাচ্ছেন।

জাগো নিউজ: পরিবারের সহযোগিতা বা প্রতিবন্ধকতা সম্পর্কে কিছু বলুন- আবদুল মতিন: এ ব্যাপারে পরিবার অনেক সহযোগিতা করছে। এ কাজে অনেক সময় বাইরে বাইরে থাকতে হয়। তাতে পরিবার কখনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেনি।

জাগো নিউজ: উল্লেখযোগ্য স্মৃতি বা অর্জন থাকলে বলুন-আবদুল মতিন: একটি দৈনিকের প্রতিবেদন পড়ে একজন আমাকে বাংলায় লিফলেট তৈরি করে দিয়েছেন। অন্য একজন ইংরেজিতেও লিফলেট তৈরি করে দিয়েছেন।

জাগো নিউজ: বৃক্ষরোপণ নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী? আবদুল মতিন: যে যত বৃক্ষরোপ করেছে; আমি সবাইকে ছাড়িয়ে যেতে চাই। গোটা বাংলাদেশকে একটি বোটানিক্যাল গার্ডেনে পরিণত করতে চাই। ঘরের মধ্যে কিংবা বাইরে সবখানেই গাছ লাগাতে চাই।

এসইউ/আরআইপি