তথ্যপ্রযুক্তি

দূরগ্রহে জলের দেখা

মেঘমুক্ত খোলা আবহাওয়ায় দূর মহাকাশের এক গ্রহের গায়ে জলীয় বাষ্পের দেখা পেয়েছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। নাসার তিনটি দূরবীক্ষণের লেন্সে চোখ রেখে ভিনগ্রহের এমন রাসায়নিক রূপ আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা।গ্রহটির নাম এইচএটি পি-১১বি। পৃথিবী থেকে এর দূরত্ব ১২৪ আলোকবর্ষ। অনন্ত মহাকাশের সুবিশাল দূরত্ব পরিমাপের জন্য জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা আলোকবর্ষ এককটি ব্যবহার করে থাকেন। পৃথিবীতে আলোই সবচেয়ে বেশি গতিতে ছুটে চলে। সেকেন্ডে ত্রিশ কোটি মিটার। গতিটা বোঝানোর জন্য এই হিসেবটা প্রায়ই সামনে আনি- আলো এক সেকেন্ডে পৃথিবীকে সাত পাকে বেঁধে ফেলতে পারে। তো, এই গতিতে আলো এক বছর ধরে যে দূরত্ব অতিক্রম করে, তাকে এক আলোকবর্ষ বলে।তার মানে, যে দূরদেশী গ্রহটিতে জলীয় কণার সন্ধান মিলেছে, সেখানে পৌঁছতে আলোর রথেও বসে থাকতে হবে ১২৪ বছর।গ্রহটি আকারে পৃথিবীর চেয়ে চারগুণ বড়। বলতে পারেন, আমাদের সূর্যের চৌহদ্দিতে সবচেয়ে প্রান্তিক গ্রহ নেপচুনের সমান। এরকম দূরগ্রহে এবারই প্রথম জলের খোঁজ মিলল।প্রসঙ্গত, সৌরসীমানার বাইরে ১৯৯৫ সালে প্রথম বহির্জাগতিক গ্রহের সন্ধান মিলেছিল। এই উনিশ বছরে আরও ১৯০০ মতো ভিনগ্রহ আবিষ্কৃত হয়েছে। এদের মধ্যে সবচেয়ে ছোট গ্রহটির আকার আমাদের মঙ্গল গ্রহের সমান। মানুষের একমাত্র আশ্রয়গ্রহ পৃথিবীর চেয়ে লালগ্রহ আকারে অর্ধেক।এইচএটি পি-১১বি’র আগে যত সব দূরগ্রহে জলের সন্ধান মিলেছে, সেগুলো আকারে সূর্যের ‘দানবীয় সন্তান’ বৃহস্পতির মতো। বৃহস্পতি এতই বড় যে, এর মধ্যে ১৩২১টা পৃথিবী দিব্যি ধরে যাবে। এই ধরনের দানবীয় দূরগ্রহেই এতদিন জলের দেখা পাওয়া গেছে। এইচএটি পি-১১বি তাই এখন পর্যন্ত ‘জলসমৃদ্ধ’ পুঁচকে ভিনগ্রহ।

Advertisement