ভারতে উত্তর প্রদেশের কাসগঞ্জে রাস্তার দখল নিয়ে ফের দাঙ্গা শুরু হয়েছে। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছে। এছাড়া পুলিশের হাতে পঞ্চাশ জন গ্রেফতার হয়েছে। ওই এলাকায় এখনও তীব্র উত্তেজনা রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে পশ্চিম উত্তর প্রদেশের একটি বিস্তীর্ণ অংশ জুড়ে ইন্টারনেট পরিষেবাও বন্ধ রাখা হয়েছে। খবর বিবিসি।
Advertisement
২৬ জানুয়ারি ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসে বিজেপির একটি মোটরবাইক মিছিল আগে রাস্তা দিয়ে যাবে নাকি এলাকার মুসলিমরা রাস্তায় মঞ্চ করে আগে জাতীয় পতাকা তুলবেন তা নিয়েই এই বিরোধের সূত্রপাত হয়। ওই দিন কাসগঞ্জের শাসক দল বিজেপির ছাত্র শাখা অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ ও কট্টরপন্থী হিন্দু সংগঠন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কর্মীরা যৌথভাবে তিরঙ্গা যাত্রা নামে একটি মোটরবাইক র্যালির ডাক দিয়েছিলেন।
কিন্তু ওই বাইক মিছিল যখন কাসগঞ্জের মুসলিম-অধ্যুষিত বদ্দুনগর এলাকা দিয়ে যাচ্ছে, তখন তারা দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা রাস্তায় চেয়ার পেতে সেখানে ছোটখাটো একটি অনুষ্ঠান করে ভারতের জাতীয় পতাকা তোলার তোড়জোড় করছেন।
বদ্দুনগরের বাসিন্দা মুহাম্মদ মুনাজির রফি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকাকে জানিয়েছেন, আমরা মিছিলের লোকজনকে অনুরোধ করি আমাদের অনুষ্ঠানটা শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে। কিন্তু ওরা জেদ ধরে থাকে ওদের আগে যেতে দিতে হবে এবং তারপর শ্লোগান দিতে শুরু করে।
Advertisement
একটু পরেই সেই বিবাদ হাতাহাতি ও ধাক্কাধাক্কিতে রূপ নেয়। বাইক-মিছিলের লোকজন তখনকার মতো ফিরে গেলেও কিছু সময় পরে তারা কাছেই আরও একটি মুসলিম-অধ্যুষিত এলাকায় দ্বিগুণ শক্তিতে ফিরে আসে। কাসগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পবিত্র মোহন ত্রিপাঠিী জানিয়েছেন, ওই এলাকার মুসলিমরা ধরে নেন তাদের ওপর বদলা নিতেই এরা হামলা চালাতে এসেছে। তখনই কেউ একজন গুলি চালালে ২৮ বছর বয়সী চন্দন গুপ্তা নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়।
চন্দন গুপ্তার অন্তিম সৎকার সেরে ফেরার সময় শনিবার ক্ষুব্ধ জনতা নতুন করে বিভিন্ন এলাকায় হামলা চালায় ও ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ করে। কাসগঞ্জ জেলার নাদরি ও চুঙ্গি গ্রামের দুটি আলাদা ঘটনায় তিনটি গাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। পুলিশ এরপরই ব্যাপক অভিযান চালিয়ে কমপক্ষে ৫০ জন হামলাকারীকে গ্রেফতার করেছে।
টিটিএন/আরআইপি
Advertisement