শেষ সময়ে এসে ছাড়ের হিড়িক পড়েছে ২৩তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায়। প্রায় প্রতিটি প্রতিষ্ঠানই মেলার শুরুতে যে ছাড় দিচ্ছিল, শেষ সময়ে এসে তার পরিমাণ আরও বাড়িয়েছে। এমন বাড়তি ছাড় পেয়ে বেশ খুশি ক্রেতারা। ফলে মেলা থেকে কেনাকাটায় আগ্রহ বেড়েছে ক্রেতাদের। এতে বেড়েছে অংশগ্রহণ করা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিক্রির পরিমাণও।
Advertisement
এবারের ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার শুরুতে দেখা যায় শীতের হানা। হঠাৎ তীব্র শীত নামার প্রভাব পড়ে মেলায়। ফলে অন্যবারের তুলনায় মেলার প্রথমদিকে ক্রেতা-দর্শনার্থীর উপস্থিতি ছিল বেশ কম। তবে শীতের তীব্রতা কমার সঙ্গে সঙ্গে মেলায় বাড়তে থাকে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের উপস্থিতি। সেই সঙ্গে বাড়তে থাকে প্রতিষ্ঠানগুলোর বিক্রির পরিমাণ। মূলত ১৯ জানুয়ারি থেকে মেলা জমজমাট হয়ে ওঠে।
এদিকে দেখতে দেখতে একেবারে শেষ পর্যায়ে চলে এসেছে এবারের বাণিজ্য মেলা। নতুন করে মেয়াদ না বাড়ালে আর মাত্র ৩ দিন পরেই মেলার পর্দা নামবে। ভাঙবে ক্রেতা-বিক্রেতা ও দর্শনার্থীদের মিলন মেলা।
এদিকে প্রথমদিকে ক্রেতা দর্শনার্থীদের উপস্থিতি কম থাকায় মেলার সময় ৫ দিন বাড়ানোর আবেদন করেছেন ব্যবসায়ীরা। তবে তা সর্বোচ্চ ৪ দিন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মেলার আয়োজক রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)।
Advertisement
এ প্রসঙ্গে ইপিবির সচিব (যুগ্ম-সচিব) ও বাণিজ্য মেলার পরিচালক আবু হেনা মোরশেদ জামান জাগো নিউজকে বলেন, ব্যবসায়ীরা মেলার সময় ৫ দিন বাড়ানোর আবেদন করেছিল। বিষয়টি বিবেচনার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। শুনেছি মন্ত্রণালয় ৪ দিন সময় বাড়িয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত লিখিত কোনো চিঠিপত্র পাইনি।
তবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে ইতোমধ্যে ৪ দিন সময় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ সংক্রান্ত সংশ্লিষ্ট কাগজ পত্র ইপিবির উদ্দেশে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে শেষ সময়ে ক্রেতা টানতে নগদ ছাড়ের পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়েছেন বিক্রেতারা। অনেকে এ ছাড়ের নাম দিয়েছেন আখেরি অফার। আবার কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান ক্রেতাদের টানতে প্যাভিলিয়ন ও স্টলে পণ্যের প্রচারে এক বা একাধিক কর্মী বসিয়ে দিয়েছেন। যারা মাইকে প্যাভিলিয়ন বা স্টলটিতে কী কী সুবিধা দেয়া হচ্ছে তার বর্ণনা দিচ্ছেন।
বেস্ট বাই’র প্যাভিলিয়ন থেকে পণ্য কেনা মিরপুরের বাসিন্দা রোকসানা আক্তার বলেন, মেলার প্রথমদিকে এখান থেকে কিছু পণ্য কিনেছিলাম। কিন্তু কিছুদিন আগে একটি সংবাদ দেখলাম বেস্ট বাই’র স্টলে ৫৫ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেয়া হচ্ছে। তাই প্রয়োজনীয় আরও কিছু কিনতে চলে আসলাম। প্যাভিলিয়নটি থেকে আগে যে পণ্য কিনছিলাম, এখন আবার সেই পণ্য কিনেছি। তবে ছাড় আগের চেয়ে বেশি পেয়েছি।
Advertisement
ধানমন্ডি থেকে আসা রাফিয়া বলেন, প্রতিবারই বাণিজ্য মেলার শেষ সময়ে ছাড়ের পরিমাণ বাড়িয়ে দেন বিক্রেতারা। তাই এবার মেলার শেষ সময়ে এসেছি। আমার বান্ধবীরা আগে যে বেসলেট ২০০ টাকা দিয়ে কিনেছে, সেই একই বেসলেট এখন আমি ১২০ টাকা দিয়ে কিনেছি।
খিলগাঁওর বাসিন্দা মো. রবিউল ইসলাম বলেন, মেলার প্রথমদিকে পরিবার নিয়ে একবার ঘুরতে এসেছিলাম। সেই সময় কোনো কেনাকাটা করিনি। আজ (রোববার) সংসারের প্রয়োজনীয় কিছু পণ্য কিনলাম। প্রথমদিকে এসব পণ্যের যে দাম চাওয়া হয়েছিল এখন তার থেকে অনেক কম দামে কিনেছি। এমন ছাড় পেয়ে অমি অবশ্যই খুশি।
মেলা থেকে ব্লেজার কেনা মো. কামাল হোসেন বলেন, আগে যে ব্লেজার আড়াই হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছিল, এখন তা কিনেছি মাত্র ১ হাজার ৩০০ টাকা দিয়ে। এর আগেও এই ব্লেজারের দাম ১ হাজার ৩০০ টাকা বলেছিলাম। কিন্তু সেই সময় বিক্রেতারা ওই দামে বিক্রি করতে রাজি হয়নি। আর এখন তারাই ১ হাজার ৩০০ টাকা সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে বিক্রি করছে।
এমএএস/এমএমজেড/আইআই