আসন্ন মুদ্রানীতিকে কেন্দ্র করে দেশের শেয়ারবাজারে ব্যাপক দরপতন হয়েছে। প্রায় এক বছর পর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক সর্বোচ্চ পরিমাণে কমেছে। সেই সঙ্গে লেনদেন হওয়া ৮০ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমেছে। দেখা দিয়েছে লেনদেন খরাও।
Advertisement
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজারে গুঞ্জন রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন মুদ্রানীতি সংকোচনমূলক করবে। সেই সঙ্গে কমানো হবে ঋণ-আমানত অনুপাত (এডিআর)। আর এ গুঞ্জনের কারণেই বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনেরর আতঙ্ক বিরাজ করছে। সেই আতঙ্কের ফলেই বাজারে এমন দরপতন দেখা দিয়েছে।
রোববার লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৭১ পয়েন্ট। ২০১৭ সালের ২৩ এপ্রিলের পর এটাই ডিএসইএক্স এর সর্বোচ্চ পতন। গত বছরের ২৩ এপ্রিল ডিএসইএক্স কমে ৮৩ পয়েন্ট। এরপর শেয়াবাজারে বেশ কয়েকবার উত্থান-পতন হয়েছে। তবে ডিএসইএক্স ৭০ পয়েন্টের ওপরে কমেনি।
এমন দরপতনের বিষয়ে ডিএসইর সাবেক পরিচালক আহমেদ রশীদ লালী জাগো নিউজকে বলেন, শেয়ারবাজারে মুদ্রানীতির একটি প্রভাব পড়েছে। আগামী ২৯ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করবে। এ মুদ্রানীতিতে এডিআর কমানো হতে পারে এমন একটি গুঞ্জন ছিল। তবে এখন যতটুকু জানতে পারছি এডিআর কমানো হবে না। এটি ভালো সংবাদ। তবে মুদ্রানীতি সংকোচনমূলক হলে তার একটি প্রভাব শেয়ারবাজারে পড়তে পারে। কারণ মানি মার্কেট সংকুচিত হলে শেয়ারবাজারও সংকুচিত হতে পারে।
Advertisement
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, রোববার ডিএসইতে মূল্যসূচকের পাশাপাশি লেনদেন হওয়া সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমেছে। ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৬৮টি প্রতিষ্ঠানেরই দরপতন হয়েছে। বিপরীতে দাম বেড়েছে মাত্র ৩৫টির, দাম অপরিবর্তিত রয়েছে ৩০টির।
বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩৫৯ কোটি ২৮ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৪১২ কোটি ৯০ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন আগের দিনের তুলনায় কমেছে ৫৩ কোটি ৬২ লাখ টাকা। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৭১ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ১৪৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অপর দু’টি মূল্যসূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ আগের দিনের তুলনায় ২৩ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ২৮১ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক দশমিক ১৭ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৪১৩ পয়েন্টে।
টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যালের শেয়ার। কোম্পানিটির ২১ কোটি ৮৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেনে দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইফাদ অটোসের ২১ কোটি ১৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১৯ কোটি ২৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনে তৃতীয় স্থানে রয়েছে এসপিসিএল।
লেনদেনে এরপর রয়েছে গ্রামীণফোন, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, ইসলামী ব্যাংক, ইউসিবি, বিবিএস কেবলস এবং বিডি ফাইন্যান্স। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্যসূচক সিএসসিএক্স ১১৪ পয়েন্ট কমে ১১ হাজার ৪৫৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২৭ কোটি ২০ লাখ টাকা। লেনদেন হওয়া ২২০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৫টির দাম বেড়েছে, দাম কমেছে ১৭৯টির, অপরিবর্তিত রয়েছে ১৬টির।
Advertisement
এমএএস/ওআর/আইআই