জাতীয়

দিনের বেলায়ও বর্জ্য অপসারণ, ভোগান্তিতে নগরবাসী

হাজারো সমস্যায় জর্জরিত রাজধানী ঢাকা। প্রায় দুই কোটি মানুষের বাস এই শহরে। শহরে প্রতিনিয়ত বাড়ছে সমস্যার পরিধি। এখানে নিত্যদিনের বড় এক সমস্যার নাম বর্জ্য। বাসাবাড়ির ময়লাসহ রাজধানীতে প্রতিদিন উৎপন্ন হয় ব্যাপক পরিমাণ বর্জ্য। রাজপথ থেকে অলিগলি, যত্রতত্র ডাস্টবিন আর এসব ডাস্টবিনে জমাকৃত বর্জ্যের দুর্গন্ধে রীতিমতো নাকাল রাজধানীবাসী। এসব বর্জ্য অপসারণে দুই সিটির নেই পর্যাপ্ত জনবল।

Advertisement

নির্ধারিত সময়ে বর্জ্য সংগ্রহ ও অপসারণের কাজ করতে হিমশিম খাচ্ছে দুই সিটি কর্পোরেশন। আধুনিক কিংবা কার্যকর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে কর্পোরেশনের সক্ষমতা আরও বাড়াতে হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

গত বছরের ১৬ অক্টোবর ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের সব বর্জ্য রাত ১০টা থেকে সকাল ৬টার মধ্যে অপসারণের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এর পাশাপাশি ঢাকনা ছাড়া ট্রাক বা ভ্যান দিয়ে বর্জ্য সংগ্রহ ও পরিবহন বন্ধেও ব্যবস্থা নিতেও বলা হয় ওই আদেশে। হাইকোর্টের নির্দেশনা উপেক্ষা করে রাজধানীর বেশিরভাগ এলাকায় দিনেই বর্জ্য অপসরাণের কাজ চলছে।

জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড আরবানাইজেশন প্রসপেক্টের রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্তমানে ঢাকার জনসংখ্যা এক কোটি ৭০ লাখ। বিশ্বব্যাংকের একটি সমীক্ষামতে, ঢাকা শহরে প্রতিদিন বর্জ্য জমা হচ্ছে প্রায় সাত হাজার মেট্রিক টন। এর মধ্যে গৃহস্থালি ও দোকান থেকে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার টন ময়লা তৈরি হয়।

Advertisement

রাজধানীর গুলশান, ফার্মগেট, মিরপুর, কলাবাগান, তেজগাঁও, মগবাজার, পল্টন, পান্থপথ ও পুরান ঢাকার বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, দিন-দুপুরে ময়লবাহী ট্রাক বা ভ্যানে করে চলছে ময়লা পরিবহনের কাজ। কিন্তু নগরবাসীর দুর্ভোগের কারণে এসব ময়লা দিনের বেলা অপসারণ করা থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দেয়া ছিল।

ফার্মগেট গ্রিন রোড এলাকায় ভ্যানে ময়লা অপসারণের কাজ করছিলেন দুই পরিচ্ছন্নতাকর্মী। এতে করে অফিসগামী নাগরিক, পথচারীরা দুর্গন্ধে নাকাল হয়ে রুমালে নাক চেপে রাস্তা পার হচ্ছিলেন। তাদের মধ্যে একজন বেসরকারি চাকরিজীবী নূরুল ইসলাম। তিনি বলেন, যতদূর জানি দিনের বেলা ময়লা অপসরাণ করা যাবে না বলে হাইকোর্টের নির্দেশ আছে। দিনের বেলায় মানুষ চলাচল করে, এর মধ্যে যদি এসব বর্জ্য অপসারণের কাজ করা হয় তাহলে দুর্গন্ধের দুর্ভোগ বাড়ে নাগরিকদের, তাই সিটি কর্পোরেশনের উচিত নাগরিকদের কষ্ট দিয়ে দিনের বেলায় এসব কাজ না করা।

এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপক শফিকুল আলম বলেন, আমাদের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা এসব বর্জ্য অপসারণের জন্য রাত থেকেই কাজে নেমে যান। রাজধানীতে বাসাবাড়ির এসব ময়লার পরিমাণ অনেক বেশি। তাই সব পরিষ্কার করতে কিছুটা সময় বেশি লেগে যায়। যদিও আমাদের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা সকালের মধ্যেই প্রায় ৯০ শতাংশ কাজ শেষ করে ফেলেন। বাকিটা হয়তোবা দিনের বেলায় কাজ শেষ করা হয়। আমরা চেষ্টা করছি সময়মতো পরিচ্ছন্ন করতে। এ বিষয়ে আরও যা যা করা দরকার আমরা সেটার পদক্ষেপ নেবো।

এদিকে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, রাত থেকেই আমাদের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা বর্জ্য অপসারণের কাজ শুরু করে। কোনো কোনো দিন হয়তোবা দিনের বেলা বর্জ্য অপসারণ করা হয় যা নগরবাসীর দুর্ভোগের কারণ। আমাদের যে জনবল আছে তা দিয়ে আমরা চেষ্টা করছি সঠিক সময়ে, সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যেমে বর্জ্য অপসারণ করতে।

Advertisement

এএস/বিএ/আরআইপি