দেশজুড়ে

জন্মদিনের দাওয়াত না পেয়ে কুকুরের জন্মদিন পালন!

কক্সবাজারের টেকনাফে আলী আকবর নামে এক যুবকের পালিত কুকুরের জন্মদিন পালন নিয়ে পুরো কক্সবাজারে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। হৈ চৈ চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও। প্রতিবেশী আরেক যুবকের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে দাওয়াত না পেয়ে আলী আকবরের এ ব্যতিক্রমী জন্মদিন পালন নিয়ে নানা প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

Advertisement

সূত্রমতে, টেকনাফ পৌরসভার দক্ষিণ জালিয়াপাড়ায় গত ২২ জানুয়ারি কাজলী নামে ওই কুকুরের জন্মদিন পালন করা হয়। এ উপলক্ষে মঞ্চ তৈরি করে লাগালো হয় ব্যানার। কুকুরটিকে ফুলের মালায় সাজানোর পাশাপাশি পরানো হয় নতুন টি-শার্টও। কাটা হয় দুই পাউন্ড ওজনের একটি কেক।

এছাড়াও অতিথি আপ্যায়নে ছিল বিরিয়ানি, বিভিন্ন রকমের মিষ্টি ও ফল। নানা আতশবাজির আলোয় পুরো অনুষ্ঠানে মানব জন্মদিনের আবহই ছিল। অনুষ্ঠানে অতিথি হয়ে আসা আলী আকবরের বন্ধুদের মাঝে উৎসবের আমেজ থাকলেও কাজলীকে দেখা গেছে বিব্রতকর অবস্থায়। অনভ্যস্ততায় জামা পরিধান নিয়ে অস্বস্থিই ছিল কাজলীর মাঝে। আর কাটা কেক খেতে তাকে খোলানো যায়নি মুখ!

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, টেকনাফের দক্ষিণ জালিয়াপাড়ার কাশেম নামের এক যুবকের জন্মদিন ছিল ২২ জানুয়ারি। এ উপলক্ষে তার বাড়িতে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কিন্তু সে অনুষ্ঠানে দাওয়াত পাননি প্রতিবেশী আলী আকবর। আমন্ত্রণ না পেয়ে রাগে-ক্ষোভে ফুলতে থাকেন তিনি। দাওয়াত না দেয়ার প্রতিবাদ হিসেবে নিজেদের পালিত কুকুর কাজলীর জন্মদিন পালনের সিদ্ধান্ত নেন আলী আকবর। তার ব্যতিক্রমী সে জন্মদিনে উৎসাহ দেন তার বন্ধুরা। আর তাতেই জমে ওঠে দক্ষিণ চট্টগ্রামের কোনো এলাকায় প্রথম কুকুরের আনুষ্ঠানিক জন্মদিন অনুষ্ঠান।

Advertisement

অন্যের জন্মদিনে দাওয়াত না পেয়ে এমন আয়োজনের সত্য-মিথ্যা জানতে চাইলে আলী আকবর বলেন, দাওয়াত দেয়া-না দেয়া অনুষ্ঠান আয়োজকের একান্ত বিষয়। এর প্রতিবাদ করার কী আছে। মানুষের জন্মদিন পালন করলে প্রাণী হিসেবে কুকুরের জন্মদিন পালন করলে কী হয়? এমন তর্ক থেকেই আমার কুকুর কাজলীর প্রথমবারের মতো জন্মদিন পালন করলাম। একই দিনে অন্য কারও জন্মদিন মিলে গেলে এটাকে কাকতালীয় বলা ছাড়া আর কিছু নেই।

কুকুরটির বয়সতো কয়েক বছর হবে, আগের বছরগুলোর জন্মদিন পালন করা হয়েছে কি? এমন প্রশ্নের জবাবে আলী আকবর বলেন, আগে এমনটি মনে হয়নি আর হাতে টাকাও ছিল না, তাই করা হয়নি। এখন হাতে টাকাও আছে ইচ্ছেও হয়েছে তাই এ বছরই কাজলীর জন্মদিন পালন করলাম।

তিনি বলেন, যাই হোক কাজলীর জন্মদিন উপলক্ষে বন্ধুরা সবাই খুব মজা করেছি। অনেকে ব্যতিক্রমী এ জন্মদিনের ছবি ফেসবুকে আপলোড করি। এটি সবাই শেয়ার করছে, লাইক ও কমেন্টস করছে। আমার কাজলী ফেমাস!

দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে টেকনাফ পৌরসভার প্যানেল মেয়র আবদুল্লাহ মনির বলেন, প্রতিবাদের ভাষা নানা ধরনের হয়, তবে এমন প্রতিবাদ কখনো দেখিনি। রাগ করে কুকুরের জন্মদিন পালন অন্যের জন্য খুবই অপমানজনক। এটিকে সামাজিক অবক্ষয় ও বিনা কষ্টে আয়ের টাকার বাধাহীন ব্যবহারও বলা যায়।

Advertisement

সায়ীদ আলমগীর/বিএ