ভারতজুড়ে তীব্র বিক্ষোভ ও জ্বালাও-পোড়াওয়ের মধ্যে মুক্তি পেয়েছে ব্যাপক বিতর্কিত বলিউডের চলচ্চিত্র পদ্মাবত। বৃহস্পতিবার ভারতের অন্তত চারটি রাজ্যে ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে উগ্র বজরঙ্গ দল ও করণী সেনার সদস্যরা। ওই চার রাজ্য বাদ দিয়ে সর্বত্রই মুক্তি পেয়েছে সঞ্জয় লীলা বানশালীর ‘পদ্মাবত’।
Advertisement
ছবিতে ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ এনে দেশটির বিভিন্ন জায়গায় হিংসাত্মক তাণ্ডব চালায় করণী সেনা। বুধবারের মতো এ দিনও নির্বিচারে চলেছে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ। অাহমেদাবাদ, লক্ষ্মৌ, গুরুগ্রাম, মথুরায় ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে।
হৃষিকেশের একটি সিনেমা হলের বাইরে সকাল থেকেই দফায় দফায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে বজরঙ্গ দলের সদস্যরা। হিংসা ছড়িয়েছে বারাণসীর বেশ কয়েকটি সিনেমা হলের বাইরেও। ছবিতে রাজপুতদের সম্মানহানি হয়েছে, এ অভিযোগ তুলে বারাণসীর একটি মাল্টিপ্লেক্সের বাইরে আত্মহত্যার চেষ্টা করে এক যুবক। তাকে আটক করেছে পুলিশ।
ছবির প্রদর্শনী বন্ধ করার দাবি তুলে লক্ষ্মৌ নোভেল্টি সিনেমা হলের বাইরে বিক্ষোভ দেখায় করণী সেনারা। রাজস্থানের উদয়পুরে বিভিন্ন দোকানে চালানো হয় ভাঙচুর। করণী সেনার তাণ্ডবে বন্ধ রাখা হয় রাজস্থানের চিতোর দুর্গ।
Advertisement
গতকাল দুর্গের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেছিল বিক্ষোভকারীরা। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই হায়দরাবাদ, মুম্বাই এবং আগ্রার বিভিন্ন সিনেমা হল এবং মাল্টিপ্লেক্সের বাইরে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে পুলিশ। বুধবার থেকেই পুলিশ মোতায়েন রয়েছে দেহরাদূন এবং উত্তরাখণ্ডের বিভিন্ন মাল্টিপ্লেক্সের বাইরে। গুরুগ্রামের ঘটনার জেরে নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে ফরিদাবাদের বিভিন্ন হলের বাইরেও।
ছবি মুক্তি ঠেকাতে দেশটির বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহেও হামলা চালায় কয়েকটি সংগঠন। ‘পদ্মাবত’ মুক্তি পেলে পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে হুঁশিয়ারিও দেয় করণী সেনা। হুমকির জেরে চারটি রাজ্যে ছবিটির প্রদর্শনী বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় ‘মাল্টিপ্লেক্স অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া’। অ্যাসোসিয়েশন বলছে, গুজরাটের মোট ১২০টি সিনেমা হলে মুক্তি পাবে না ‘পদ্মাবত’।
দেশটির সুপ্রিম কোর্ট আগেই কড়া নির্দেশ দিয়েছিল, গোটা দেশেই যেন মুক্তি পায় ছবিটি। কিন্তু, রাজস্থান, হরিয়ানা, গুজরাট এবং মধ্যপ্রদেশে ছবিটি মুক্তি পায়নি। এর পরেই আদালত অবমাননার অভিযোগ এনে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেন তেহসিন পুনাওয়ালা নামে এক কংগ্রেস সমর্থক।
অন্যদিকে, আদালতের নির্দেশ অমান্য করে হিংসা ছড়ানোর অভিযোগে মামলা দায়ের হয় করণী সেনাদের বিরুদ্ধেও। আনন্দবাজার।
Advertisement
এসআইএস/আইআই