জাতীয়

বাংলা চ্যানেলে উন্মুক্ত সাঁতার রোববার

পশ্চিম ইউরোপের ইংলিশ চ্যানেল নামটা সর্বমহলে পরিচিতি পেলেও বাংলাদেশের কক্সবাজারের টেকনাফের বাংলা চ্যানেল বেশি পরিচিত নয়। তবে বাংলাদেশিদের সাঁতার শেখাকে উৎসাহিত করতে বাংলা চ্যানেলকেই বেছে নিয়েছে এভারেস্ট একাডেমি। রোববার (২৮ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় উন্মুক্ত সাঁতারের মাধ্যমে বাংলা চ্যানেল পাড়ি দেয়ার আয়োজন করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

Advertisement

প্রতিষ্ঠানটির কর্তা ব্যক্তিরা বলছেন, এতে করে সাঁতার শেখার প্রয়োজনীয়তা ও জনপ্রিয়তা বাড়বে। তেমনি বিশ্ব দরবারে স্পোর্স লাভিং কান্ট্রি হিসেবে বাংলাদেশের সুনাম বাড়বে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বেকি হার্সব্রো, সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ বাংলাদেশ (সিআইপিআরবি) এর অ্যাসোসিয়েট ডিরেক্টর ড. মো. জাহাঙ্গির হোসেন, এপি’র জুলহাস আলম, এভারেস্ট বিজয়ী মুসা ইব্রাহিমস ও ভলি কেডসের এমডি মো. ওয়াহিদুজ্জামান।

Advertisement

অনুষ্ঠানে সার্বিক দিক বিশ্লেষণ করে মুসা ইব্রাহিম বলেন, সকাল ৯ টায় কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার শাহপরীর দ্বীপ থেকে সেন্টমার্টিন পর্যন্ত এ উন্মুক্ত সাঁতারের আয়োজন করা হয়েছে। সাঁতরাতে গেলে জেলি ফিশ কিংবা নোনা পাটি পেটে যাবার ভয় থাকবেই। তবে আত্মবিশ্বাসটাই মূল। আত্মবিশ্বাস থাকলে বাংলা চ্যানেল সাঁতরে পাড়ি দেয়ার চ্যালেঞ্জ যে কেউ নিতে পারেন।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুসারে পরনে শর্টস ও চোখে ছোট্ট গগলস ছাড়া আর কিছু পরিধান করার নিয়ম নেই এ সাঁতারে। এমনকি সঙ্গে থাকা সহায়তার জন্য বোটেও হাত রাখা যাবে না। এই নিয়ম মেনেই দীর্ঘ এ সমুদ্রপথ পাড়ি দেবেন চার সাঁতারু।

মুসা ইব্রাহিম জানান, ২৩টি জেলায় এভারেস্ট একাডেমির সাঁতার কাটা শেখানো হচ্ছে। ২০১২ সালে থেকে একাডেমির কার্যক্রম শুরু হবার পর থেকে ছয় থেকে ১২ বছরের পাঁচ লাখ শিশুকে সাঁতার কাটা শেখানো হয়েছে।

এই এভারেস্ট জয়ী বলেন, সুস্থতার জন্য আমরা বাচ্চাদের পাঁচটি টিকা দেই। কিন্তু সাঁতার না জানার কারণে অনেক শিশু পানিতে ডুকে মারা যায়। এর টিকা নেই। এজন্য সাঁতার কাটা শিখতেই হবে। সাঁতার শেখানোর জন্য বাংলাদেশে সরকারিভাবে প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ নেই। বেসরকারি উদ্যোগ দিয়ে সার্বিকভাবে এটা সফল করা সম্ভব নয়। এজন্য দরকার সরকারি প্রচেষ্টা।

Advertisement

সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ বাংলাদেশের (সিআইপিআরবি) অ্যাসোসিয়েট ডিরেক্টর ড. মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, পানিতে ডুবে যাওয়া বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর অন্যতম কারণ। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অথচ অবহেলিত জনস্বাস্থ্য সমস্যা। প্রতি বছর তিন লাখ ৭২ লাখ মানুষ মারা যায় সাঁতার না জানার কারণে। বাংলাদেশের এক-১৭ বছরের শিশুদের মৃত্যুর অন্যতম কারণ পানিতে ডুবে যাওয়া। সাঁতার কাটা না জানার ফলে ১৮ হাজার শিশু-কিশোর অকারণে প্রাণ হারায়। বাংলাদেশের সব এলাকায় বন্যা বা জলোচ্ছ্বাস দুর্যোগপ্রবণ। নদীমাতৃক দেশ হওয়ায় বরিশালসহ বেশকিছু জেলায় এর ঝুঁকি আরো বেশি।

সংবাদ সংস্থা এপির সাংবাদিক বেকি হার্সব্রো বলেন, বাংলাদেশে শিশুদের পানিতে ডুবে অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর ঘটনা এড়াতে আমাদের এ উদ্যোগ। এক্ষেত্রে এভারেস্ট একাডেমি দেশব্যাপী কাজ করে যাচ্ছে।

জেইউ/জেডএ/আইআই