আল্লাহ তাআলা মানব জাতিকে জান্নাতে বসবাসের জন্য সৃষ্টি করেছেন। এর প্রথম এবং প্রধান প্রমাণ হলো আদিপিতা-মাতা হজরত আদম ও হাওয়া আলাইহিস সালামের সৃষ্টি করে জান্নাতে থাকার ব্যবস্থা করেছিলেন।
Advertisement
তাই জান্নাতই মানুষের আসল ঠিকানা। জান্নাতই হলো মানুষের চিরস্থায়ী আবাস। তবে জান্নাতকে চিরস্থায়ী আবাস হিসেবে পেতে হলে অবশ্যই কিছু শর্ত রয়েছে। আর তাহলো- আল্লাহর নির্দেশ মেনে চলা। কারণ আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করার কারণেই হজরত আদম ও হাওয়া আলাইহিস সালামকে জান্নাত থেকে বেরিয়ে দুনিয়ায় আসতে হয়েছিল।
হজরত আদম ও হাওয়া আলাইহিস সালামের সৃষ্টি, জান্নাতে বসবাস, দুনিয়া আগমন এবং আল্লাহর দরবারে তাওবা এ সবই বিশ্ব মানবতার জন্য মহান শিক্ষা। যে শিক্ষা থেকে অনেকেই ইচ্ছা-অনিচ্ছায় বিরত থাকে।
আল্লাহর নির্দেশ পালনের গুরুত্ব উপলব্দি করতে হলে মানুষকে তাকাতে হবে হজরত আদম আলাইহিস সালাম ও হজরত হাওয়া আলাইহিস সালামের দিকে। আল্লাহ তাদেরকে সৃষ্টি করে উভয়কে জান্নাতে থাকার ব্যবস্থা করলেন।
Advertisement
তাদের উভয়ের প্রতি একটি নির্দেশ ছিল। আর তাহলো- ‘একটি গাছের ফল খাওয়া থেকে বিরত থাকা।’
শয়তান তাদেরকে আল্লাহর বিধানের বিপরীতে প্ররোচিত করল। তাদের উভয়কে আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করতে বাধ্য করল। তারা শয়তানের প্ররোচনায় আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করে নিষিদ্ধ গাছের ফল ভক্ষণ করল। পরিণামে তাদেরকে জান্নাত থেকে বের হয়ে দুনিয়া আগমন করতে হলো।
এ থেকে বুঝা যায় যে, ‘জান্নাতে থাকার এক মাত্র উপায় হলো ‘আল্লাহর নির্দেশ পালন করা।’ আল্লাহর নির্দেশের অমান্য করে কেউ জান্নাত লাভ করতে পারবে না। যেমনটি পারেনি আদিপিতা হজরত আদম ও আদিমাতা হজরত হাওয়া আলাইহিস সালাম।
এ থেকে আরো বুঝা যায়, ‘শয়তান মানুষের প্রকাশ্য দুশমন। শয়তানের প্ররোচনায় নফসের খাহেশাত ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে।
Advertisement
উপরন্তু যদি কোনো মানুষ শয়তানের প্ররোচনায় পড়ে অন্যায় করে ফেলে; তাদের জন্যও অনুকরণীয় আদর্শ হলে হজরত আদম ও হাওয়া আলাইহিস সালাম।
তারা দুনিয়ায় এসেই আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলেন। তাওবা করলেন। আর আল্লাহ তাআলা তাদেরকে ক্ষমাও করে দিলেন।
মনে রাখতে হবে-অন্যায় হওয়া মাত্র আল্লাহ দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে। মানুষের মধ্যে এমন অনেকে আছেন যারা অন্যায় করে তা স্বীকার করতে চায় না। অন্যায় অপরাধ করা সত্ত্বেও নিজেকে নির্দোষ মনে করে। যা মোটেই কাম্য নয়। যার ফলে অন্যায়-অপরাধ থেকে তাওবা করা হয়ে ওঠে নো।
কারণ তখন তারা অন্যায়-অপরাধকে যখন তারা পাপই মনে করে না, তখন তাওবার তো প্রশ্নই আসে না। বিশেষ করে গীবত-সেকায়াত, রুসুম-রেওয়াজ বা কুসংস্কার পালন ইত্যাদি মাহামারি আকার ধারণ করেছে। এ সব অভ্যাস পরিত্যাগ করা জরুরি। পাপকে পাপ বলে স্বীকার করে তা থেকে তাওবার মাধ্যমে ফিরে আসা জরুরি। তবেই মানুষ তার কাঙ্ক্ষিত ঠিকানা লাভ করতে পারবে। পরস্কার হিসেবে পাবে মানুষের জন্য তৈরি চিরস্থায়ী জান্নাত।
পরিশেষে…হজরত আদম ও হাওয়া আলাইহিস সালামের ঘটনা থেকে এ কথা সুস্পষ্ট যে, আল্লাহ তাআলা মানুষের জন্যই জান্নাত সৃষ্টি করেছেন। সুতরাং পরকালীন জীবনে চিরস্থায়ী জান্নাত লাভে আল্লাহর নির্দেশ পালনে একনিষ্ঠ হওয়া জরুরি।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে আল্লাহর নির্দেশ পালনের তাওফিক দান করুন। মানুষকে তাদের আসল বাড়ি ও চিরস্থায়ী বাসস্থান জান্নাতে যাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এমএস