আইন-আদালত

গ্রেনেড হামলার মামলায় তারেকের খালাস দাবি

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা থেকে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের খালাস চেয়েছেন আইনজীবী এ কে এম আখতার হোসেন। মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে স্থাপিত অস্থায়ী ঢাকার ১নং দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নুর-উদ্দিনের আদালতে যুক্তি উপস্থাপনে তিনি এ দাবি করেন।

Advertisement

পরে রাষ্ট্রের নিযুক্ত এ কৌঁসুলি সাংবাদিকদের বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার এজাহারে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নাম উল্লেখ নেই। এমনকি তার সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তাই আদলতে তারেক রহমানের বেকসুর খালাস চাওয়া হয়েছে।

এর আগে গতকাল সোমবার আলোচিত এ মামলার অন্যতম আসামি তারেক রহমানের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপনের শুরু করেন রাষ্ট্রের নিযুক্ত কৌঁসুলি এ কে এম আখতার হোসেন। যুক্তি উপস্থাপনে তিনি বলেন, ‘২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার সময় তারেক রহমান কোনো ক্ষমতাধর ব্যক্তি ছিলেন না। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে তিনি আসামিদের প্রশাসনিকভাবে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু এ মামলার কোনো সাক্ষীই আশ্বাসের কথা বলেননি। কোনো সাক্ষীই নিজেদের সাক্ষ্যে তার নাম বলেননি।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ মামলার এজাহারে তারেক রহমানের নাম নেই। ১৫ জন সাক্ষী ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। এর মধ্যে মুফতি হান্নান যখন দ্বিতীয়বার জবানবন্দি দেন তখন তারেকের নাম আসে।’

Advertisement

এর আগে গত ১৭ জানুয়ারি মামলার আসামি মাওলানা আব্দুল হান্নান ওরফে সাব্বিরের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন আইনজীবী মঈদুদ্দিন মিয়া। উপস্থাপন শেষ না হওয়ায় তার ও অপর আসামিদের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপনের জন্য ২২, ২৩ ও ২৪ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন আদালত। সে অনুযায়ী সোমবার (২২ জানুয়ারি) তারেক রহমানের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন তার পক্ষে রাষ্ট্রের নিযুক্ত কৌঁসুলি এ কে এম আখতার হোসেন। এদিন তারেকের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন শেষ না হওয়ায় আজ (মঙ্গলাবর) দিন ধার্য করেন।

আলোচিত এ মামলায় ৫১১ জন সাক্ষীর মধ্যে ২২৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। আর ২০ জনের সাফাই সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদিকা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। আহত হন দলের তিন শতাধিক নেতাকর্মী।

ঘটনার পরের দিন মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফারুক আহমেদ বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। মামলাটি প্রথমে তদন্ত করে থানা পুলিশ। পরে তদন্তের দায়িত্ব পায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। পরবর্তীতে মামলাটি যায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি)।

Advertisement

২০০৮ সালের ১১ জুন মুফতি হান্নানসহ ২২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন সিআইডির জ্যেষ্ঠ এএসপি ফজলুল কবির। ২০০৯ সালের ৩ আগস্ট রাষ্ট্রপক্ষ মামলাটি অধিকতর তদন্তের আবেদন করলে ট্রাইব্যুনাল তা মঞ্জুর করেন। মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পান সিআইডির পুলিশ সুপার আবদুল কাহ্হার আখন্দ। তিনি ২০১১ সালের ৩ জুলাই তারেক রহমানসহ ৩০ জনের নাম যুক্ত করে মোট ৫২ জনের নামে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি অভিযোগপত্র দেন।

জামায়াতের সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, জঙ্গি নেতা মুফতি হান্নান ও জেএমবি সদস্য শহিদুল আলম বিপুলের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ায় মামলা থেকে তাদের নাম বাদ দেয়া হয়েছে। ফলে এ মামলায় এখন আসামির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৯ জন। এর মধ্যে তারেক রহমানসহ ১৮ জন পলাতক রয়েছেন। এছাড়া জামিনে আটজন এবং কারাগারে রয়েছেন ২৩ জন।

জেএ/আরএস/জেআইএম