কনকনে শীতের সকাল থেকেই ব্যস্ততা শুরু। চলে বেলা পেরিয়ে রাত অবধি। এ ব্যস্ততা বাঙালি জাতিসত্ত্বার সঙ্গে মিশে থাকা ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’কে নিয়ে। অন্য যে কোনো উৎসব থেকে এর কদর একটু বেশিই। ব্যাপ্তিও থাকে পুরো ভাষার মাস ফেব্রুয়ারিজুড়ে। তাইতো প্রাণের মেলাকে দর্শনার্থীদের কাছে আরও প্রাণবন্ত করতে আয়োজক প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমিরও থাকে বাড়তি প্রস্তুতি।
Advertisement
বরাবরের মতো এবারও মেলাকে কেন্দ্র করে বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে চলছে স্টল নির্মাণের কাজ। সার্বিক তত্ত্বাবধানে রয়েছে বাংলা একাডেমি। ১ ফেব্রুয়ারি বাংলা একাডেমিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে অমর একুশে গ্রন্থমেলার উদ্বোধন করবেন।
তাই গ্রন্থমেলাকে সামনে রেখে কাজ চলছে পুরোদমে। মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হবে স্টল বরাদ্দের লটারি। লটারিতে পাওয়া স্টল বুঝিয়ে দেয়া হবে স্টল প্রত্যাশী বিভিন্ন সৃজনশীল প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে। আর বরাদ্দ পাওয়া স্টলের সাজ সজ্জার কাজ সম্পন্ন করতে হবে মেলা শুরু দু’দিন আগে।
সোমবার মেলার দুই প্রান্ত বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশ ঘুরে দেখা গেছে, স্টল নির্মাণে ব্যস্ত সময় পার করছেন নির্মাণ শ্রমিকরা। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কাজের অগ্রগতি বেশি দেখা গেলেও বাংলা একাডেমি অংশে স্টল নির্মাণ কাজে ধীরগতি লক্ষ্য করা গেছে।
Advertisement
অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৮ এর সদস্য সচিব ড. জালাল আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমাদের কাজ শিগগিরই শেষ হবে। মঙ্গলবার লটারি অনুষ্ঠিত হবে। তারপর প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে স্টল বুঝিয়ে দেয়া হবে।’
এদিকে, বৃষ্টি মোকাবেলায় স্টল নির্মাণে থাকছে টিনের ব্যবহার। এছাড়াও মেলাকে দর্শনার্থীদের কাছে আকর্ষণীয় করে তুলতে মেলার দুই পাশের বিভিন্ন স্থানকে করা হবে সবুজায়ন। টিএসসি ও দোয়েল চত্বর থাকবে দুটি দৃষ্টিনন্দন গেইট। গেইটের সঙ্গে থাকবে দুটি বড় জায়ান্ট স্ক্রিন। যেখান থেকে দর্শনার্থীরা খুব সহজেই মেলার বিভিন্ন দিক বুঝে নিতে পারবে। আর বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধীদের জন্য থাকছে হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা। এছাড়াও থাকছে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা।
বাংলা একাডেমি সূত্রে জানা গেছে, মেলার সময়সীমা গতবারের মতোই থাকছে। চলবে বিকেল ৩টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত। আর ছুটির দিনে বেলা ১১টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত চলবে মেলা। এ বছর মেলার আয়তনও বাড়ছে। বাংলা একাডেমি অংশে বাংলা একাডেমির স্টল ছাড়াও থাকছে, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও মিডিয়া স্টল, লিটল ম্যাগাজিন চত্বর।
অন্যদিকে সোহরাওয়ার্দী অংশে থাকছে বাংলা একাডেমির স্টল, সৃজনশীল প্রকাশনা সমূহের স্টল ও শিশু চত্বর। আয়োজকরা জানান, এবার সাত শতাধিকের বেশি ইউনিট থাকছে। ১২টি চত্বরকে সাজানো হবে ২৬টি প্যাভিলিয়নে।
Advertisement
অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৮ এর সদস্য সচিব ড. জালাল আহমেদ জাগো নিউজকে আরও বলেন, ‘বরাবরের মতো এবারও একটি আকর্ষণীয় ও প্রাণবন্ত মেলা দর্শনার্থীদের উপহার দিতে পারবো বলে আশা করছি।’
এমএইচ/এমআরএম/আরআইপি