দেশজুড়ে

সালাম দিয়েই বিপদে পড়লেন মহিলা মেম্বার

নওগাঁর মান্দা উপজেলার প্রসাদপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বেলাল হোসেনের বিরুদ্ধে মহিলা মেম্বারকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে।

Advertisement

মারধরের শিকার মহিলা মেম্বারের নাম জুলেখা বিবি। তিনি একই ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য। বর্তমানে মহিলা মেম্বার মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।

বোরবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রসাদপুর ইউনিয়নের চকরাজাপুর কলেজ মোড় এলাকায় চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পূর্বঘোষিত সময় অনুযায়ী গোবিন্দপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন মোটরসাইকেলযোগে বিধবা, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের ভাতার কার্ড বিতরণের জন্য যাচ্ছিলেন।

Advertisement

এ বিষয়ে এলাকায় মাইকিং করা হয়। তবে ইউনিয়ন পরিষদের যে ৯ জন মেম্বার আছেন তিনি তাদেরকে এ বিষয়ে কোনো কিছু বলেননি।

বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চকরাজাপুর কলেজ মোড় দিয়ে চেয়ারম্যান যাওয়ার সময় মহিলা মেম্বার জুলেখা বিবির সঙ্গে দেখা হয়। এ সময় জুলেখা বিবি চেয়ারম্যানকে সালাম দেন। সেই সঙ্গে তার এলাকায় কার্ড বিতরণ করা হচ্ছে অথচ তাকে জানানো হয়নি বলে অভিযোগ করেন। এ সময় মোটরসাইকেল থামাতে গিয়ে রাস্তায় পড়ে যান চেয়ারম্যান।

একপর্যায়ে রাস্তা থেকে ওঠে জুলেখা বিবিকে লাথি মারেন চেয়ারম্যান। সেই সঙ্গে চায়ের দোকান থেকে একটি লাঠি নিয়ে মহিলা মেম্বারকে এলোপাতাড়ি মারধর করেন চেয়ারম্যান। এ সময় মহিলা মেম্বার জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে তাকে উদ্ধার করে মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে স্থানীয়রা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চেয়ারম্যান বেলাল হোসেনের সঙ্গে তার বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে দীর্ঘদিন ইউনিয়ন পরিষদের ৯ জন মেম্বারের সমন্বয়হীনতা চলে আসছিল। এর আগে ওই মহিলা মেম্বারকে বিভিন্নভাবে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। পাশাপাশি মেম্বার উজ্জল কুমারকে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ আছে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।

Advertisement

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মেম্বার জুলেখা বিবি বলেন, চেয়ারম্যান আমার ৫নং এলাকায় বয়স্ক ও বিধবাভাতার কার্ড বিতরণ করবেন অথচ আমাকে জানানো হয়নি। পরে চেয়ারম্যান মোটরসাইকেল নিয়ে যাওয়ার সময় চকরাজাপুর কলেজ মোড় এলাকায় সালাম দিই।

এ সময় তিনি মোটরসাইকেল থেকে পড়ে যান। এরপর ওঠে আমাকে লাথি মারে। সেই সঙ্গে পাশের চায়ের দোকান থেকে একটি কাঠের লাঠি নিয়ে আমাকে মারপিট করে। এতে আমি অজ্ঞান হয়ে পড়ি। পরে দেখি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আমি এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।

প্রসাদপুর ইউপি চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কিছু স্বার্থান্বেষী মহল আমার বিরুদ্ধে গুজব রটাচ্ছে। এটা মিথ্যা ও বানোয়াট। মেম্বারদের মধ্যেই দ্বন্দ্ব চলছে। আর সেটার রোষানলে পড়তে হচ্ছে আমাকে। প্রতিবন্ধী, বয়স্ক ও বিধবাভাতাসহ বিভিন্ন কার্যক্রমের ভাগ মেম্বারদের না দেয়ায় আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ শুরু হয়। ইতিপূর্বে মেম্বাররা আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে আসছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে সেগুলো মিথ্যা প্রমাণিত হয়।

মান্দা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিছুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় থানায় মহিলা মেম্বারের পক্ষে তার স্বামী রফিকুল ইসলাম একটি অভিযোগ দিয়েছেন। এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জানতে চাইলে মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, বিষয়টি শুনেছি। তবে কে কাকে মারধর করেছে তা এখনও সুস্পষ্ট নয়। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আব্বাস আলী/এএম/আরআইপি