ঈমান হচ্ছে সব আমলের বুনিয়াদ। তাই ঈমান গ্রহণ করা মানুষের বুনিয়াদি ফরজ। যার ঈমান নেই তার কোনো আমলই কবুল হয় না। যার ঈমান সহিহ নয়, তার আমলও গ্রহণযোগ্য নয়। রূহ ছাড়া দেহের যেমন দাম নেই; তেমনি ঈমান ছাড়া আমলের কোনো দাম নেই।
Advertisement
এ কারণে মানুষ ভাল কাজের প্রতিফল তখনই পাবে যখন ঈমানের সঙ্গে ভাল কাজ করবে। আল্লাহ তাআলা কুরআনে পাকে ঘোষণা করেছেন- যারা (প্রথমত) ঈমান আনে এবং (দ্বিতীয়ত) নেক আমল করে; তাদের জন্য রয়েছে জান্নাতুল ফেরদাউস। (সুরা কাহাফ : আয়াত ১০৭)
ঈমানবিহীন আমলের কথা উল্লেখ করে আল্লাহ বলেন, ‘যারা কাফের (যাদের ঈমান ঠিক নেই) তাদের আমলসমূহ মরুভূমির মরিচীকার ন্যায়।’ (সুরা নূর : আয়াত ৩৯) তাই আমলের গ্রহণযোগ্যতার জন্য ঈমানের বিকল্প নেই। মানুষ পরকালে ঈমান ছাড়া কোনো আমলেরই সাওয়াব পাবে না।
যারা ঈমানের স্বাদ পেয়েছে তারাই সফলকাম। ঈমান গ্রহণের ফলে মানুষ দুনিয়া ও পরকালের শান্তি লাভ করে। আল্লাহ তাআলা সুরা বাকারার শুরুতে পরহেজগার বা আল্লাহ ভিরু মানুষের পরিচয় দিতে গিয়ে ঈমানদার সম্বোধন করেছেন।
Advertisement
আর যারা ঈমান লাভ করেছে তাদের ব্যাপারেই বলা হয়েছে যে, ‘ঈমানদাররাই আল্লাহর পক্ষ থেকে হেদায়েত বা সুপথ প্রাপ্ত। আর তারাই সফলকাম। অর্থাৎ ঈমান বান্দা দুনিয়াতেও সফলকাম। পরকালেও সফলকাম।
হজরত আবু যর গিফারি রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘যে (ব্যক্তি) লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলবে, আর এর উপর তার মৃত্যু হবে সে জান্নাতে যাবে।’
মানুষের ঈমান গ্রহণের বুনিয়াদি বাক্যই হলো ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ যে ব্যক্তি ইখলাসের সাথে এ বাক্য পড়ে ঈমান গ্রহণ করবে সে ব্যক্তিই ঈমানদার। তারপর সে ইসলামের অন্যান্য বিষয়াদি যথাযথ পালন করবে। ঈমান গ্রহণের পর ঈমানদারের জন্য ইসলামের অনুষাঙ্গিক আবশ্যকীয় বিষয়সমূহ পালন করা সহজ হয়ে যায়। আর এর বিনিময়ে যে লাভ করবে চিরস্থায়ী জান্নাত।
মনে রাখতে হবেমানুষ ভুল করবে, গোনাহ করবে; আবার আল্লাহর দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করবে। ক্ষমা চেয়ে আল্লাহর পথে ফিরে আসবে; আল্লাহ তাঁর দিকে ফিরে আসা ব্যক্তিকে ক্ষমা করে দিবেন। এটা আল্লাহর ঘোষণা।
Advertisement
যখনই আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি মানুষের ঈমান থাকবে; তখন মানুষ গোনাহগার হলেও একটা সময় জান্নাত লাভ করবে। ঈমান ও ভালো কাজের জন্য ওই ব্যক্তির জান্নাত সুনিশ্চিত। তাঁর ভাল কাজের বিনিময় সে পাবে। কেননা প্রিয়নবির ঘোষণা দিয়েছেন যে, ঈমানদার জান্নাতে যাবে।’
যদি তার পাপও থাকে; তবুও সে জান্নাতে যাবে। তবে তাকে পাপ পরিমান শাস্তি ভোগ করতে হবে। আর যদি আল্লাহ তাআলা ইচ্ছা করেন তবে পাপী ব্যক্তিকেও কোনো না কোনো ওসিলায় মাফ করে দিতে পারেন। এটা আল্লাহ তাআলার ইখতিয়ার।
উপরন্তু যার ঈমান-ই নেই; তাঁর কোনো ভাল কাজই গ্রহণ যোগ্য হবে না। আর শাস্তি ভোগের পরে জান্নাতে যাওয়ারও কোনো সুযোগ তার জন্য নেই। ঈমানবিহীন ব্যক্তির জন্য রয়েছে জাহান্নামের চিরস্থায়ী শাস্তি।
পরিশেষে…ঈমান গ্রহণ যেহেতু মানুষের বুনিয়াদি ফরজ। তাই প্রথমেই আল্লাহর প্রতি ইখলাসের সঙ্গে ঈমান গ্রহণ করা জরুরি। আর ঈমান গ্রহণের পর প্রতি ভাল কাজই দুনিয়া ও পরকালের সফলতায় কার্যকরী।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ঈমানের অমূল্য স্বাদ গ্রহণের তাওফিক দান করুন। ঈমান গ্রহণের পর নেক আমল তথা ভাল কাজ করার মাধ্যমে দুনিয়া ও পরকালের সফলতা লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/জেআইএম