দেশজুড়ে

আবাসিক হোটেলে তরুণ-তরুণীর মরদেহ

সিলেট মহানগরের সোবহানীঘাট এলাকায় একটি আবাসিক হোটেল থেকে তরুণ-তরুণীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। রোববার রাত ১০টার দিকে হোটেল মেহেরপুর থেকে মরদেহ দুটি উদ্ধার করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রাতের পালায় থাকা হোটেলের ব্যবস্থাপক আবদুল ওয়াদুদসহ দুজনকে পুলিশ আটক করেছে।

Advertisement

নিহত তরুণীর নাম রুমী পাল। তিনি সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার নিজপাট উজানীনগরের মিলন পালের মেয়ে। আর তরুণের নাম মিন্টু দেব। তিনি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার বাড়ি জগন্নাথপুর গ্রামের মতিলাল দেবের ছেলে।

মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গৌছুল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, পুলিশ রাতে দরজা ভেঙে হোটেলের কক্ষে প্রবেশ করে দেখতে পায় তরুণের মরদেহ ঝুলন্ত। আর তরুণীর মরদেহ বিছানাতে শোয়ানো। তারা স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে হোটেলে ওঠেছিলেন।

পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে মিন্টু দেব প্রথমে তরুণীকে হত্যা করে পরে নিজে আত্মহত্যা করেছে। হোটেলে রেজিস্ট্রার খাতা জব্দ করেছে পুলিশ।

Advertisement

ওসি জানান, তরুণীর গলায় শ্বাসরুদ্ধ করার দাগ পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ দুটি সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে। সোমবার মরদেহ দুটির ময়নাতদন্ত হবে।

হোটেল মেহেরপুরের অবস্থান মহানগরের সোবহানীঘাট এলাকায়। মরদেহ দুটি উদ্ধারের সময় সেখানে গিয়ে দেখা গেছে, দিনের নিবন্ধন খাতায় নিহত দুজনের নাম রুমি পাল ও মিন্টু দেব লেখা। তাদের সই পাওয়া গেছে। রুমির পেশা স্কুল শিক্ষিকা লেখা, তবে স্কুলের নাম নেই।

হোটেল সূত্র জানায়, রোববার দুপুর ১২টার দিকে দুজন স্বামী-স্ত্রীর পরিচয় দিয়ে হোটেল কক্ষ বরাদ্দ নেন। তারা দ্বিতীয় তলার ২০৬ নম্বর কক্ষে ওঠেন। বিকেল ৩টার পর তারা দুজন একসঙ্গে বের হয়ে সন্ধ্যার আগে আবার ঢোকেন।

পুলিশ জানায়, রোববার রাত ১১টার দিকে হোটেলে রুমি পালের এক আত্মীয় এসে রুমি পালকে শনাক্ত করেছেন। মিন্টু দেবের পরিবারের কাউকে পাওয়া যায়নি।

Advertisement

হোটেলের একটি সূত্র জানিয়েছে, ‘হোটেলে ওঠার পর সন্ধ্যার দিকে মেয়েটি তার দুলাভাইয়ের মোবাইল ফোনে মেসেজ পাঠায়, হোটেলে মেহেরপুরের ২০৬ নম্বর কক্ষে আমরা আছি। আমরা আত্মহত্যা করছি...। মেসেজটি পেয়ে তার দুলাভাই দ্রুত হোটেল মেহেরপুরে হাজির হন।তিনি হোটেল কর্তৃপক্ষকে রুমটি খোলার কথা বলেন। তখন তারা এভাবে রুমে ডাকা নিয়মের মধ্যে পড়ে না বলে জানান।

পরে তিনি মোবাইল ফোনের মেসেজ দেখালে হোটেলের ম্যানেজার বিষয়টি পুলিশকে জানান। এরপর রুমে গিয়ে ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়া মেলেনি তাদের। একপর্যায়ে পুলিশ দরজা ভেঙে ফেলে। তখন রুমের ভেতরে মিন্টু দেবের মরদেহ রুমী পালের ওড়না দিয়ে ঝুলানো ছিল। আর রুমী পালের মরদেহ বিছানাতে ডান দিকে মুখ করে শোয়ানো ছিল।

ঘটনাস্থলে থাকা ওই দুলাভাইয়ের বরাত দিয়ে হোটেল সূত্র জানায়, মেয়েটির বিয়ে অন্যত্র ঠিক করেছিলেন তার পরিবারের লোকজন। বিষয়টি মানতে না পেরেই তিনি এই পথ বেছে নিয়েছেন মনে হচ্ছে। এমনটি নাকি বলাবলি করছিলেন নিহত রুমী পালের দুলাভাই। যাকে মেসেজ পাঠিয়েছিলেন রুমী। ছামির মাহমুদ/জেডএ