ধর্ম

বিশ্ব ইজতেমায় শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বয়ান

টঙ্গীর তুরাগ তীরে অনুষ্ঠিত ৫৩তম বিশ্ব ইজতেমায় শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে গুরুত্বপূর্ণ বয়ান পেশ করেছেন ভারতের মাওলানা হুসাইন আহমদ লাট। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে দেয়া তাঁর বয়ানের গুরুত্বপূর্ণ অংশ সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো-

Advertisement

ইলম অর্জনকারী শিক্ষার্থীদের মর্যাদা তুলে ধরে প্রথমেই তিনি বলেন, তালিবে ইলমরা হলেন উম্মতের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ।

তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, শিক্ষার্থীরা নিজ উদ্যোগে ইলম শিক্ষা করছেন। আর যারা দ্বীন শিক্ষার জন্য তাবলিগে মেহনত করছেন। তাদেরকে তাশকিল করে করে; বার বার দ্বীনের দাওয়াত দিয়ে ইলম অর্জনে আগ্রহী করতে হয। আর শিক্ষার্থীরা অন্যসব কিছু ছেড়ে নিজ উদ্যোগেই দ্বীন শিক্ষায় নিয়োজিত আছে। যার গুরুত্ব অনেক বেশি।

এ কারণেই প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ সেই ব্যক্তি যে নিজে কুরআনে শিখে এবং অন্যকে শেখায়।’

Advertisement

ইলম শিক্ষাগ্রহণকারীদের দায়িত্ব তুলে ধরে মাওলানা হুসাইন আহমদ লাট বলেন-তালিবে ইলমদের প্রথম দায়িত্বউত্তম পদ্ধতিতে পড়ালেখা করা। কিতাবের (পাঠ্যপুস্তকের) হক আদায় করে পড়ালেখা করা। কারণ যে যত ভাল করে পড়ালেখা করবে সে তত বেশি ইলম অর্জন করতে সক্ষম হবে এবং তার দ্বারা উম্মতের খেদমতও বেশি হবে।

পড়ালেখার পাশাপাশি নিজেদের কোনো সাথী যদি পড়ালেখায় অমনোযোগী হয়ে উঠে, তাকে বুঝিয়ে পড়ালেখার প্রতি আগ্রহী করে তোলার দায়িত্ব পালন করা।

তালিবে ইলমের দ্বিতীয় দায়িত্বযে শিক্ষার্থী মাদরাসায় (প্রতিষ্ঠানে) পড়ালেখা করবে সে যেন ওই মাদরাসার (প্রতিষ্ঠানের) নিয়ম নীতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকে। মাদরাসা বা প্রতিষ্ঠানের নিয়ম-কানুনগুলো যথাযথ পালন করার মাঝেই শিক্ষার্থীদের জন্যে কল্যাণ রয়েছে।

তালিবে ইলমের তৃতীয় দায়িত্বশিক্ষাদানকারী উস্তাদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধাশীল হওয়া। মনে-প্রাণে তাদের প্রতি সম্মান ও ভালোবাসা দেখানো জরুরি। কোনোভাবেই অন্যায় বা বেয়াদবি না করা। আচরণে যে যতবেশি মুয়াদ্দেব বা ভদ্র হবে তার ভাগ্যও তত সুপ্রসন্ন হবে। তালিবে ইলমদের এমনভাবে চলতে হবে যে, উস্তাদদের পাশাপাশি মুরুব্বীরাও তাদের ওপর সন্তুষ্ট থাকবে; যাতে কেউ যেন কোনো শিক্ষার্থীকে বেয়াদব না বলতে পারে।

Advertisement

শিক্ষার্থীদের চতুর্থ দায়িত্ব জীবনে ইলম শেখার সাথে সাথে এ ইলম জাতির অন্যদের কাছে পৌঁছানোর চিন্তা-ফিকির করা, শিক্ষাকালীন সময়ের যথাযথ মেহনত করা; যাতে এ মেহনত পরবর্তীতে অন্যের কাছে পৌছানো যায়। আর মাদরাসা বা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হলে ছুটির সময়গুলিতে লম্বা সময় দ্বীনের দাওয়াত ও তাবলিগের মেহনত করার চেষ্টা করা।

সর্বোপরি প্রত্যেক রমজানের বন্ধে দ্বীন প্রচারে দাওয়াত ও তাবলিগের কাজে নূন্যতম এক চিল্লা (৪০দিন) আল্লাহর রাস্তায় বের হওয়া। আর পড়ালেখা সমাপ্তির পর দ্বীনের কাজে এক সাল (পূর্ণ এক বছর) দাওয়াত ও তাবলিগে বের হওয়া।

এমএমএস/এমএস