মানবপাচার বন্ধে কঠোর হচ্ছে মালয়েশিয়া সরকার। দেশটিতে এ ধরনের ঘটনা দিন দিন বাড়তেই আছে। মানবপাচার বন্ধে বিশেষ আদালত গঠন করতে যাচ্ছে দেশটির সরকার। আর এ পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়েছে মালয়েশিয়ার বিভিন্ন সংগঠনগুলো।
Advertisement
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এ দেশটি তাদের কাজের জন্য বিদেশি শ্রমিকদের ওপর নিভর্শীল। বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া, নেপালসহ বিভিন্ন দেশ থেকে কাজের সন্ধানে আসে এসব শ্রমিক। এ সুযোগে পাচারকারী চক্রগুলো অবৈধভাবে শ্রমিক নেয় মালয়েশিয়ায়। মূলত এসব শ্রমিক পাঠানো হয় জলপথে। ফলে অনেকেই মৃত্যুর মুখোমুখি হন।
মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগের তথ্য অনুসারে, বর্তমানে দেশটিতে ২০ লাখ নিবন্ধিত বিদেশি শ্রমিক আছে। আর এ সমস্ত শ্রমিকের বেশ কিছু অংশ আসে অবৈধ পথে।
এ ধরনের অবৈধ শ্রমিক বন্ধে মালয়েশিয়ায় গঠন করা হচ্ছে বিশেষ আদালত। মূলত চলতি বছরের মে মাসের প্রথমে মালয়েশিয়ার সেলানগর রাজ্যে স্থাপন করা হবে বিশেষ আদালত। পরবর্তীতে মালয়েশিয়ার বিভিন্ন জায়গায় আদালতের কার্যক্রম বাড়ানো হবে বলেও জানা গেছে।
Advertisement
মালয়েশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী জাহিদ হামিদি বলেন, আমাদের বিশ্বাস এ আদালত মানবপাচার মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করতে পারবে এবং জনসচেতনতা সৃষ্টিতে সক্ষম হবে।
কুয়ালালামপুরভিত্তিক শরণার্থী ও অভিবাসনবিষয়ক সংস্থাগুলো সরকারের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, দীর্ঘ প্রক্রিয়ার কারণে ভুক্তভোগীরা মামলায় লড়তে চান না। এ বিশেষ আদালত তাদের সাহায্য করবে। যাবতীয় ঝামেলা সঙ্গে সঙ্গে সমাধান করার চেষ্টা করা হবে।
শরণার্থী ও অভিবাসনবিষয়ক সংস্থা তেনাগানিতার পরিচালক অ্যাজিলে ফার্নান্দেজ বলেন, ‘পাচারের শিকার বেশিরভাগই বিদেশি। বিচার পাওয়ার অপেক্ষায় তারা দীর্ঘদিন বিলম্ব করতে চান না।’
এদিকে, গেল বছরের শেষের দিকে মানবপাচারে যুক্ত থাকার অভিযোগে কুয়ালালামপুর ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টের প্রায় ৬শ’ অফিসারকে বদলি করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অবৈধ বাংলাদেশিদের পাচার করার গুরুতর অভিযোগ ছিল বলে সংশ্লিষ্ট বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।
Advertisement
কুয়ালালামপুর ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট দিয়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশিদের প্রবেশ করানোর ৪টি সিন্ডিকেট কাজ করছে। এ প্রসঙ্গে মালয়েশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী দাতুক সেরি ড. আহমেদ জাহিদ হামিদি বলেন, এয়ারপোর্টের অনেক অফিসারই তাদের ইমিগ্রেশনের বন্ধুদের ব্যবহার করছেন বাংলাদেশিদের অবৈধভাবে মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করাতে। এমন অফিসারের সংখ্যা অনেক।
এমনই প্রায় ৬শ’ সন্দেহভাজনদের সিভিল সার্ভিসের নিয়ম মেনে সরকারি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বদলি করা হয়েছে বলেও জানান জাহিদ হামিদি।
তিনি আরও জানান, ইমিগ্রেশন বিভাগের মহাপরিচালক দাতুক সেরি মুস্তাফা আলী যেভাবে মানবপাচারের বিষয়টি সমাধান করছেন তা সত্যিই প্রশংসনীয়। যারা সিন্ডিকেটে জড়িয়ে আইন অমান্য করছেন তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এমআরএম/জেআইএম