একটি অটোরিকশার নিচে পড়ে হাউমাউ করে কাঁদছিলেন মধ্য বয়সী এক নারী। পরে তার স্বামী তাকে টেনে হিঁচড়ে অটোরিকশায় তোলার চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে অটোরিকশার পাটাতনে শুইয়ে দেন ওই নারীকে। পরে নারীর নাকে-মুখে জুতাপেটা ও লাথি মারতে মারতে ঘটনাস্থল থেকে অটোরিকশায় করে নিয়ে যান। মুঠোফোনে ধারণ করা নির্যাতনের এ ভিডিওটি তাৎক্ষণিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়।
Advertisement
শনিবার বেলা ১১টার দিকে গাজীপুরের শ্রীপুরে জনাকীর্ণ স্থান এমসি বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত ইব্রাহিম (৩৮) তেলিহাটি ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের গোদারচালা গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে। নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূ ইব্রাহিমের দ্বিতীয় স্ত্রী ফরিদা বেগম (৩৫)।
ফরিদার পূর্বের সংসারে তিনটি সন্তান রয়েছে। তার বাবার বাড়ি পার্শ্ববর্তী যুগীরসিট গ্রামে। তিন সন্তান ও স্বামীসহ ফরিদা তার পূর্বের স্বামীর রেখে যাওয়া বাড়িতে বসবাস করতেন। ইব্রাহিমের মাদক ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগও রয়েছে।
Advertisement
নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ ফরিদা আক্তার জানান, গত সাত বছর আগে তিন সন্তান রেখে তার স্বামী ডা. আব্দুল জলিল মারা যান। পরে একই এলাকার ইব্রাহিম তার সম্পত্তির লোভে ফুঁসলিয়ে তাকে বিয়ে করেন। ইব্রাহিমকে নিয়ে পূর্বের সংসারের সন্তানদের সঙ্গে তার মৃত স্বামীর মুলাইদ এলাকায় রেখে যাওয়া বাড়িতে বসবাস করে আসছিলেন। ইব্রাহিমের এক স্ত্রী ছিল। পরে বিভিন্ন সময় টাকা-পয়সার জন্য ইব্রাহিম তার ওপর নির্যাতন করতে থাকেন। এরই এক পর্যায়ে প্রথম স্বামীর রেখে যাওয়া মুলাইদের বাড়িটি বিক্রির জন্য ইব্রাহিম চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন। সম্প্রতি ইব্রাহিম তৃতীয় আরেকটি বিয়ে করে বউ বাড়িতে এনে তুলেন। এনিয়ে গত কয়েকদিন যাবৎ তাদের সংসারে সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হয়। ভরণ-পোষণও বন্ধ করে দেন ইব্রাহিম।
শনিবার স্বামীর কাছে খাবারের টাকা চাইলে তিনি বেদম মারধর শুরু করেন। পরে ফরিদা স্বামীর অত্যাচার থেকে পালানোর চেষ্টা করে এমসি বাজার পর্যন্ত আসলে ইব্রাহিম তার পথরোধ করে আবার বেদম মারধর করেন।
অভিযুক্ত ইব্রাহিম জানান, তার স্ত্রীর মানসিক সমস্যা আছে। তিনি আত্মহত্যা করার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন। তাই তাকে জোরপূর্বক বাড়িতে ফিরিয়ে আনার সময় কিছু মারধর করতে হয়েছে।
এ ব্যাপারে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান জানান, এ রকম কোনো অভিযোগ এখনও পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Advertisement
আমিনুল ইসলাম/আরএআর/জেআইএম