দীর্ঘদিনের বিতর্কিত অভিবাসন ও সরকারি ব্যয় সংক্রান্ত একটি বিলে ঐক্যমতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস সদস্যরা। এর ফলে দেশটির সরকারি কার্যক্রম বন্ধ হয়ে পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। শনিবার মধ্যরাতে দেশটির প্রধান দুই রাজনৈতিক দল রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেটের সদস্যরা বিপরীতমুখী অবস্থান নেয়ায় বিরল এ সঙ্কটের তৈরি হয়।
Advertisement
আগামী চার সপ্তাহ পর্যন্ত সরকার পরিচালনা ব্যয় আটকে দেয়ার একটি বিলে বিরোধীদল ডেমোক্রেট সদস্যরা অনুমোদন দেয়নি। শুক্রবার গভীর রাতের এই নাটকীয়তার পর থমকে গেছে দেশটির সরকারি বিভিন্ন কার্যক্রম।
সরকারি কার্যক্রম বন্ধের এই বিল ডেমোক্রেট শিবির এমন এক দিনে আটকে দিলো যার এক বছর আগেই একই দিনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন রিপাবলিকান দলীয় ডোনাল্ড ট্রাম্প।
সরকারি এই অচলবাস্থার জন্য ডেমোক্রেট সদস্যদের দায়ী করে ব্যাপক সমালোচনা করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে দেয়া টুইট বার্তায় তিনি বলেছেন, ‘কর হ্রাসের বিরাট সাফল্য খর্ব করতেই ডেমোক্রেটরা এই অচলাবস্থা চায়।’
Advertisement
ডেমোক্রেটদের উদ্দেশ্যে তিনি প্রশ্ন তুলে বলেছেন, তারা (ডেমোক্রেটরা) আমাদের বিকাশমান অর্থনীতির জন্য কী করেছে। পৃথক এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ডেমোক্রেট সদস্যদের ‘বিঘ্নসৃষ্টিকারী অভাগা, বলে ডেকেছেন। বিবৃতিতে তিনি ডেমোক্রেটরা ‘আইনপ্রণেতা নয়’ বলেও মন্তব্য করেছেন।
সরকারের অচলাবস্থা এড়াতে মধ্যরাতে ডেমোক্রেটদের সঙ্গে সমঝোতা চালানোর চেষ্টা করে রিপাবলিকান দলীয় সিনেটররা। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সিনেটে ডেমোক্রেট দলীয় নেতা চার্লস শ্যুমারের সঙ্গে যে বৈঠক হয়; সেই বৈঠকে চমৎকার প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে বলে তার প্রশংসা করেন।
বিলটি আটকে যাওয়ার পর ট্রাম্প এক টুইটে বলেন, ‘অবৈধ অভিবাসীদের রক্ষা করার জন্য তিনি বৈধ নাগরিকদের স্বার্থ নষ্ট হতে দেবেন না।’
একেবারে শেষ সময়ের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পরও আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সরকারের ব্যয় পরিচালনার বিলটিতে প্রয়োজনীয় ৬০ ভোটের আশ্বাস মেলেনি। এর আগে গত বৃহস্পতিবাররাতে আগামী মাস পর্যন্ত সরকার পরিচালনার ব্যয় বৃদ্ধির একটি বিল প্রতিনিধি পরিষদে ২৩০-১৯৭ ভোটে অনুমোদন পায়। কিন্তু সিনেটে বিলের পক্ষে পর্যাপ্ত সমর্থন না পাওয়ায় তা আটকে গেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
Advertisement
গত ২৫ বছরের মধ্যে চতুর্থবারের মতো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের কার্যক্রম বন্ধের এ ঘটনা ঘটলো শুক্রবার রাতে। তবে সমঝোতায় না পৌঁছানো পর্যন্ত দেশটির সামরিক কার্যক্রম, সীমান্ত অভিযান, আকাশ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, এফবিআইসহ সরকারের জরুরি বিভিন্ন অফিস ও সেবা চালু থাকবে।
সরকারি কার্যক্রম থমকে গেলেও তা জনসাধারণের স্বাভাবিক জীবন-যাপনে তেমন কোনো প্রভাব ফেলেনি বলে রাজধানী ওয়াশিংটন থেকে আলজাজিরার প্রতিনিধি প্যাটি কুলহ্যান জানিয়েছেন। তবে তিনি বলেছেন, রাজনীতিতে এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়েছে; যা প্রেস সেক্রেটারির বিবৃতিতে দেখা গেছে।
আলজাজিরার এই প্রতিনিধি বলেছেন, বিকল্প একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য সিনেটররা এখনো কাজ করছেন। তবে চুক্তিতে যদি পৌঁছানো সম্ভব হয় তবুও সেটি রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত প্রতিনিধি পরিষদে পাস করাতে হবে।
এসআইএস/এমএস