আন্তর্জাতিক

রাখাইনে ফিরতে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চায় রোহিঙ্গারা

প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার বিরোধিতা করে শত শত রোহিঙ্গা শরণার্থী বিক্ষোভ করেছে। মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আগেই শুক্রবার বিক্ষোভ করেন মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা। বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে সম্প্রতি একটি চুক্তি করেছে মিয়ানমার। চুক্তি অনুযায়ী, সপ্তাহে ১৫০০ জন রোহিঙ্গাকে ফেরত নেবে দেশটি। খবর ডেইলি মেইল।

Advertisement

মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে ফিরে যাওয়া আগে স্লোগান দিয়ে, হাতে ব্যানার নিয়ে বিক্ষোভে অংশ নেয়া রোহিঙ্গারা নাগরিকত্ব এবং তাদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চেয়েছে।

মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর জন্য চুক্তি হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ায় রোহিঙ্গাদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। তারা বলছেন, মিয়ানমারে তাদের নাগরিকত্ব, বসতভিটা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করে তাদের ফেরত যাওয়ার পরিবেশ এখনও তৈরি হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে তারা ফিরতে চাইছেন না।

এদিকে জাতিসংঘ শরণার্থী বিষয়ক সংস্থাও মনে করছে, রোহিঙ্গাদের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত না হলে তাদের মিয়ানমারের ফেরত পাঠানো ঠিক হবে না। মিয়ানমারে নির্যাতনের ফলে গত পাঁচ মাসে সাড়ে ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে। এছাড়া দু'দিন আগে হওয়া চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য মাঠ পর্যায়ে এখনও দৃশ্যমান কোন প্রক্রিয়াও শুরু হয়নি।

Advertisement

মানবাধিকার সংগঠনগুলো এবং জাতিসংঘও বলছে, প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া স্বেচ্ছায় হতে হবে। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ইউএনএইচসিআরের মুখপাত্র জোসেফ ত্রিপুরা বলেন, মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে রোহিঙ্গাদের অনেকেই ইউএনএইচসিআর এর কর্মকর্তাদের কাছে তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বিশেষ করে ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে তারা মিয়ানমারে কিছু পরিবর্তন দেখতে চান। যেমন তাদের নাগরিকত্ব এবং নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চান। তারা চান তাদের মৌলিক অধিকারগুলো।

ওই মুখপাত্র আরও বলেন, মিয়ানমারে ফিরে যাওয়াটা যাতে স্বেচ্ছায়, নিরাপদে হয়, সেটা দেখতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, তাদের ফিরে যাওয়াটা যেন টেকসই হয়। তাদের যেন আবার ফিরে আসতে না হয়। এদিকে, বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তারা দাবি করছেন, রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা এবং থাকার ব্যবস্থা করাসহ অন্যান্য বিষয়ে মিয়ানমার ব্যবস্থা নেবে এমন আশ্বাস বাংলাদেশকে দেওয়া হয়েছে।

মিয়ানমারের পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রোহিঙ্গারা। কারণ মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে দিয়েছে সেনাবাহিনী এবং স্থানীয় বৌদ্ধরা।

মিয়ানমার সরকার বলছে, যেসব রোহিঙ্গা দেশে ফিরে যাবে তাদের জন্য অস্থায়ী ক্যাম্প তৈরি করা হবে। কিন্তু রোহিঙ্গারা বলছেন, তারা আরাকানে (রাখাইন) থাকার জন্য নিরাপদ পরিবেশ চান। সেখানে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী থাকুক সেটাও চান তারা।

Advertisement

টিটিএন/পিআর