বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) অধীন ১০০০ শয্যাবিশিষ্ট সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল স্থাপন প্রকল্পের নির্মাণ কাজ আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে শুরু হতে পারে। ইতোমধ্যেই প্রকল্পের নির্মাণ কাজের টেন্ডার প্রক্রিয়া আহ্বান করা হয়েছে। টেকনিক্যাল ইভালুয়েশন কমিটি তাদের মূল্যবান মতামত দিয়েছেন। বর্তমানে প্রাইস কোটেশন মূল্যায়নের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। এরপর মূল নির্মাণ কাজ শুরু হবে।
Advertisement
বৃহস্পতিবার বিএমএমইউ ভিসি অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খানের সভাপতিত্বে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল নির্মাণ প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি নিয়ে অনুষ্ঠিত গুরুত্বপূর্ণ এক সভায় এ তথ্য জানানো হয়।
সভায় প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতির বিষয় তুলে ধরেন প্রকল্প পরিচালক ও সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. জুলফিকার রহমান খান। এ সময় ভিসি যথাসময়ে ও দ্রততার সঙ্গে প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন।
সভায় আরও জানানো হয়, ১০০০ শয্যাবিশিষ্ট সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল নির্মাণের মূল কাজ চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের শেষে দিকে শুরু হতে পারে।
Advertisement
সভায় প্রোভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. আলী আসগর মোড়ল, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল হান্নান, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলাল, পরিচালক (মানবসম্পদ) ডা. জামাল উদ্দিন খলিফা, সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল স্থাপন প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক ও অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার ডা. স্বপন কুমার তপাদার, উপ-প্রকল্প পরিচালক সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. নূর ই এলাহী মীম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ একাধিক কর্মকর্তা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তর দিকে ১২ বিঘা জমির ওপর এ হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে। এই বিশেষায়িত হাসপাতালে বিশেষায়িত ব্যবস্থায় বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসাসেবা প্রদান এবং গবেষণা করা হবে। সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে থাকবে লিভার গল ব্লাডার ও প্যানক্রিস সেন্টার, অরগান ট্রান্সপ্লান্ট সেন্টার, ক্যান্সার সেন্টার, ম্যাটারনাল এবং চাইল্ড হেলথ কেয়ার সেন্টার, ডেন্টাল সেন্টার, কার্ডিও ভাসকুলার/নিউরোসার্জারি সেন্টার, এনড্রোক্রানোলজি ডায়াবেটিস সেন্টার, রেসপাইরেটরি সেন্টার, জেরিআট্রিক (বয়স্কদের চিকিৎসা) সেন্টার, জয়েন্ট/স্পাইন কর্ড সেন্টার, হার্ট সেন্টার, বার্ন ইনজুরি সেন্টার, হেলথ স্ক্রিনিং সেন্টার, ইমারজেন্সি মেডিক্যাল সেন্টার, এমবুলেটরি সার্জারি সেন্টার, কিডনি মেশিন সেন্টার (হিমোডায়ালাইসিস সেন্টার) প্রভৃতি।
এই বিশেষায়িত হাসপাতালটি একটি পূর্ণাঙ্গ গবেষণা কেন্দ্র হবে এবং এখানে সবধরনের গবেষণা উপযোগী আধুনিক যন্ত্রপাতি থাকবে। বর্তমানে যেসব পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য বিদেশে যেতে হয় এই হাসপাতাল নির্মিত হলে দেশেই সেসব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা সম্ভব হবে। দেশে উন্নততর চিকিৎসাবিদ্যা নিশ্চিত করতে চিকিৎসকদের জন্য অত্যাধুনিক পোস্ট গ্রাজুয়েট ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা, বায়োমেডিকেল রিসার্চ এবং জনগণের জন্য উচ্চমানসম্পন্ন স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ এই হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে।
এ হাসাপাতালটি চালু হলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা, চিকিৎসা ও গবেষণা কার্যক্রম আরও গতিশীল ও উন্নত হবে। দেশের রোগীদের বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা নেয়ার প্রবণতা হ্রাস পাবে; সর্বোপরি সাশ্রয়ী খরচে বা স্বল্প ব্যয়ে দেশেই উন্নত চিকিৎসাসেবা রোগীদেকে প্রদান করা সম্ভব হবে।
Advertisement
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে বাংলার আপামর জনসাধারণ যাতে দেশেই সুলভে সর্বোচ্চ মাত্রার স্বাস্থ্যসেবা পেতে পারেন সে লক্ষ্যেই গত বছরের ২ ফেব্রুয়ারি একনেক সভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল নামের প্রকল্পটি অনুমোদন দেন।
এমইউ/বিএ