তিনি শুধু অলরাউন্ডার নন। অন্য দুই ফরম্যাটের মত একদিনের ক্রিকেটেও বাংলাদেশের দুই শীর্ষ টপ স্কোরারে একজন। বাঁ-হাতি স্পিনারের পাশাপাশি সবাই তাকে চেনেন একজন বাঁ-হাতি মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান হিসেবেও। ক্যারিয়ারের প্রায় পুরো সময়ই মিডল অর্ডারে ব্যাট করেছেন সাকিব আল হাসান।
Advertisement
১৮০ ম্যাচের ১৭১ ইনিংসের প্রায় ৭০ ভাগ (১২২ বার) তাকে পাঁচ নম্বর পজিশনে ব্যাট করতে দেখা গেছে। ওই পজিশনে ৩৫.৪৪ গড় আর ৮৩.৫০ স্ট্রাইকরেট তার রান ৪৪৯৯। সাত ওয়ানডে ম্যাচে শতরানের পাঁচটি ওই পাঁচ নম্বরেই। ৩৫ হাফ সেঞ্চুরির ২৯টিও ওই পজিশনেই।
এর বাইরে তিন, চার, ছয় ও সাত নম্বরেও ব্যাট করার রেকর্ড আছে সাকিবের। চার নম্বরে সাকিব নেমেছেন ৩০ বার। আর ছয় নম্বরে তাকে দেখা গেছে ১৪ বার। সাত নম্বর পজিশনে সাকিবের দেখা মিলেছে দুইবার। এছাড়া গত ১৫ জানুয়ারি জিম্বাবুয়ের সাথে ম্যাচটিসহ ওয়ানডাউনে সাকিবকে দেখা গেছে তিনবার।
তবে এখন থেকে হয়ত সাকিবকে তিন নম্বরেই খেলতে দেখা যাবে বেশি। টিম ম্যানেজমেন্ট এবার অনেক ভেবে চিন্তেই সাকিবকে তিন নম্বরে খেলানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই মুমিনুল, ইমরুল, সৌম্য, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, লিটন দাস আর সবশেষে সাব্বিরকে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে চেষ্টা করার পর অবশেষে সাকিবকে ওয়ানডাউনে খেলানো হলো।
Advertisement
কারণ কি? ক্যারিয়ারের বড় সময় মিডল অর্ডারে খেলা সাকিব ওপরে কেমন করবেন? তিনি আদৌ নিজেকে মানিয়ে নিতে পারবেন কি না- এমন নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে ভক্ত ও সমর্থকদের মনে।
তবে একটা কথা জেনে রাখুন, সফল হলে কথাই নেই। ব্যর্থ হলেও সাকিবকে ওপরে খেলানোর সিদ্ধান্ত থেকে আপাততঃ সরে আসার কোনই সম্ভাবনা নেই। কারণ, অনেক ভেবে-চিন্তেই সাকিবকে তিন নম্বরে সেট করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত যে তিনজন মিলে নিয়েছেন (টেকনিক্যাল ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন, মাশরাফি বিন মর্তুজা আর সাকিব আল হাসান) তার অন্যতম অধিনায়ক মাশরাফিই মনে করেন তিন নম্বরে সাকিবের ব্যর্থ হওয়ার সম্ভাবনা কম।
মাশরাফি বিশ্বাস করেন, ‘সাব্বির মূলতঃ মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। তাকে ওপরে খেলানো হয়েছে; কিংবা মনে হয়েছে ছয়-সাত নম্বর পজিশনটাই তার সেরা জায়গা। যেহেতু সে হাত খুলে শটস খেলতে পারে, তাই অল্প সময়ে তার পক্ষে বেশি রান করা সম্ভব। মাশরাফি চান সাকিবই তিন নম্বরে প্রতিষ্ঠিত হোক।
Advertisement
কারণ হিসেবে মাশরাফি মনে করেন, সাকিব দারুণ ক্যারিয়ার সচেতন। সে জানে, বোঝে কখন কোথায় কি করতে হবে? মাশরাফি মনে করেন, দলে নিজের পারফরমেন্স নিয়ে সাকিবই সবচেয়ে বেশি চিন্তা করে। তাই প্রথম দিকে তিন নম্বরে রান করতে না পারলেও কি করে সেখানে ভাল খেলা যায়, তা সে খুব ভালই জানে। পারবেও।
সাকিবকে তিনে ব্যাটিং করানোর পেছনে যৌক্তিকতা কি? এ প্রশ্ন উঠলো আজকের (বৃহস্পতিবার) সংবাদ সম্মেলনে। মাশরাফির ব্যাখ্যা, ‘আমার যুক্তি এটাই যে, গত তিন চার বছরে অনেক খেলোয়াড়কেই বদল করা হয়েছে। সাকিব গত ১০-১২ বছর ধরে পারফরম্যান্স করেছে। আমি নিশ্চিত যে, ওর চেয়ে বেশি নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে আর কেউ ভাবে না। ও যদি দুই-তিনটা ম্যাচ ফেইল করে, তাতেও সমস্যা নেই। আমি নিশ্চিত সাকিবই একমাত্র খেলোয়াড় যে কামব্যাক করতে পারবে। কারণ তার নিজস্ব একটা ভাবমূর্তি বিশ্বক্রিকেটে আছে। সে নিজের ক্যারিয়ারের বিষয়ে খুব সচেতন। সে দমে যাওয়ার পাত্র নয়। কোন রকম সংশয়ে পড়ার মানুষও সাকিব নয়। তিন নম্বরে নিজেকে মেলে ধরার জন্য যা যা করার তা তা সে করবে। তাই আমার মনে হয় তিন নম্বরে ভাল খেলার পর্যাপ্ত সামর্থ্য আছে তার।’
এআরবি/আইএইচএস/পিআর