জাতীয়

জাহাজ ভাঙা শিল্পে গেল বছর প্রাণ গেছে ১৫ শ্রমিকের

জাহাজ ভাঙা শিল্পে গত বছর ১৫ জন শ্রমিক নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন ২২ জন শ্রমিক। পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড-কুমিরায় অবস্থিত জাহাজভাঙা ইয়ার্ডে বিভিন্ন দুর্ঘটনায় এসব শ্রমিকের প্রাণ গেছে।

Advertisement

গত এক বছরের শ্রমিক হতাহতের তথ্য সংগ্রহ করে এ সংখ্যা জানিয়েছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা বাংলাদেশ অক্যুপেশনাল সেফটি, হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট ফাউন্ডেশন (ওশি)। ওশির প্রকাশিত বার্ষিক সমীক্ষা প্রতিবেদনে মঙ্গলবার এ তথ্য জানানো হয়েছে। ওশির নিজস্ব তথ্য সংগ্রহকারী এবং সংবাদপত্রে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়।

প্রতিবেদন অনুযায়ী বেশকিছু ইয়ার্ডে একাধিকবার দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব ইয়ার্ডে হতাহতের সংখ্যাও বেশি। ফেরদৌস স্টিলে তিনটি দুর্ঘটনায় এক শ্রমিক নিহত এবং দুজন আহত হন, কে আর স্টিলে তিনটি দুর্ঘটনায় এক শ্রমিক নিহত এবং দুজন আহত হন, এসএন কর্পোরেশনে চারটি দুর্ঘটনায় দুজন নিহত এবং দুজন আহত হন এবং লালবাগ শিপইয়ার্ডে একটি দুর্ঘটনায় চারজন আহত হন।

প্রতিবেদন অনুযায়ী দুর্ঘটনার কারণ- জাহাজ থেকে পড়ে যাওয়া, লোহার পাতের ধাক্কা বা নিচে চাপা পড়া, অগ্নিকাণ্ড, এক্সক্যাভাটরের আঘাত এবং বিষাক্ত গ্যাসে আটকা পড়া।

Advertisement

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য অনুযায়ী, প্রায় ৯৫ শতাংশ ইয়ার্ডের মালিক তাদের শ্রমিকদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা উপকরণ- হেলমেট, সেফটি জ্যাকেট, বুট ইত্যাদি সরবরাহ করেন না। অন্যদিকে যেসব ইয়ার্ডে ব্যক্তিগত সুরক্ষা উপকরণ সরবরাহ করা হয় সেখানকার শ্রমিকরাও এসব ব্যবহারে উদাসীন থাকেন।

দেখা গেছে, যেসব শ্রমিক পেশাগত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যবিষয়ক প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এবং নিরাপত্তা নির্দেশিকা মেনে চলছেন তারা দুর্ঘটনা থেকে বেচেঁছেন।

জাহাজভাঙা শিল্প এলাকায় কর্মপরিবেশ এবং নিরাপত্তা পরিস্থিতি উন্নয়নে ওশির পক্ষ থেকে বেশ কিছু সুপারিশ করা হয়েছে। শ্রমবিধি ২০১৫ অনুযায়ী প্রতিটি ইয়ার্ডে সেফটি কমিটি গঠন ও তা কার্যকর করার ওপর জোর দিয়েছে ওশি। তাছাড়া রাতের বেলায় কাজ করা, নিরাপত্তা প্রশিক্ষণ ছাড়া কোনো শ্রমিক নিযুক্ত না করা এবং ব্যক্তিগত সুরক্ষা উপকরণ পরিধান না করলে জাহাজকাটার কাজে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার সুপারিশ করা হয়েছে।

এছাড়া ওশির পক্ষ থেকে হতাহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা, মালিকপক্ষের উদ্যোগে শ্রমিকদের জন্য ব্যক্তিগত সুরক্ষা উপকরণ সরবরাহ করা, পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা প্রশিক্ষণ দেয়া, সরকারের উদ্যোগে কলকারখানা পরিদর্শন অধিদফতর থেকে ইয়ার্ডগুলোতে স্থায়ী পরিদর্শক নিযুক্ত করা এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও চিকিৎসা উপকরণ সরবরাহের দাবি জানানো হয়েছে।

Advertisement

এফএইচএস/জেডএ/এমএস