আইন-আদালত

ভ্রাম্যমাণ আদালত : তিন আপিল শুনানি ১৩ ফেব্রুয়ারি

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত (মোবাইল কোর্ট) পরিচালনা অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা তিনটি লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে করা আবেদন) শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

Advertisement

আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি এসব আপিলের ওপর শুনানির জন্য দিনও ধার্য করা হয়েছে। এ ছাড়া আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে উভয়পক্ষকে আপিলের সারসংক্ষেপ জমা দিতেও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এসব আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া সময় পর্যন্ত হাইকোর্টের রায় স্থগিত থাকবে। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাপর্নি জেনারেল মোতাহের হোসেন সাজু এ তথ্য জানিয়েছেন।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো.আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞার নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ মঙ্গলবার এই আদেশ দেন। আদালতে আজ শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী ব্যারিস্টার আমির উল ইসলাম, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা, মমতাজ উদ্দিন ফকির ও সাবেক আইনমন্ত্রী আবদুল মতিন খসরু। সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু। রিট আবেদনকারীদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী হাসান এম এস আজীম।

Advertisement

পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু ও আইনজীবী হাসান এম এস আজীম বলেন, আজ আদালত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা অবৈধ করে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সরকারপক্ষের তিনটি লিভ মঞ্জুর করে আপিল শুনানির জন্য ১৩ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছেন। এসব আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত হাইকোর্টের রায় স্থগিত থাকবে বলে আদেশ দেন আপিল বিভাগ।

এর আগে গত ৯ জানুয়ারি এ বিষয়ে শুনানি পিছিয়ে আজকের দিন ঠিক করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে এই লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা সংক্রান্ত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত থাকবে বলেও জানিয়েছিলেন আদালত। মোতাহার হোসেন সাজু সেদিন জানিয়েছিলেন, এর ফলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত আপাতত চলতে বাধা নেই।

গত বছরের ১১ জুন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা সংক্রান্ত ২০০৯ সালের আইনের ১৪টি ধারা ও উপধারা অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এই আইনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা অবৈধ ঘোষণাও করা হয়। বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি আশিষ রঞ্জন দাসের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই রায় ঘোষণা করেছিলেন।

পরে রাষ্ট্রপক্ষের কয়েক দফা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত রাখেন আপিল বিভাগ। এরই মধ্যে এ রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেন রাষ্ট্রপক্ষ। ওই আপিলের শুনানি শুরু হয় গত ৩ জানুয়ারি। ৯ জানুয়ারি দ্বিতীয় দিনের মতো শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। আজ অনুষ্ঠিত হলো তৃতীয় দিনের মতো শুনানি।

Advertisement

২০১১ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর ভবন নির্মাণ আইনের কয়েকটি ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগে আবাসন কোম্পানি এসথেটিক প্রপার্টিজ ডেভলপমেন্টের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান খানকে ৩০ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। ২০ সেপ্টেম্বর তিনি জামিনে মুক্তি পান। এরপর ১১ অক্টোবর ভ্রাম্যমাণ আদালত আইনের (মোবাইল কোর্ট অ্যাক্ট, ২০০৯) কয়েকটি ধারা ও উপধারার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন করেন তিনি।

রিটের শুনানি নিয়ে একই বছর রুল জারি করেন হাইকোর্ট। আদালতের জারি করা রুলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার ৫ ধারা এবং ৬(১), ৬(২), ৬(৪), ৭, ৮(১), ৯, ১০, ১১, ১৩, ১৫ ধারা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। পরে এ ধরনের আরও দু’টি রিট করা হয়। তিন রিটে মোট ১৯ আবেদনকারীর শুনানি শেষে গত ১১ মে রায় ঘোষণা করা হয়। এরপর রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে এ আদেশ স্থগিত করে আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত বিষয়টি পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে প্রেরণ করে আদেশ দেন।

এফএইচ/এনএফ/আরআইপি