গত ১০ জানুয়ারি টঙ্গীর তুরাগ তীরের বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নিতে ঢাকায় আসেন দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজের আমির ও মুরব্বী মাওলানা সাদ কান্ধলভী। বাংলাদেশে আসার পর তিনি আলেম ওলামা ও তাবলীগের সাথীদের প্রবল বাধার মুখে পড়েন। যার ফলে তিনি ইজতেমা মাঠে যেতে পারেননি। বিমানবন্দর থেকে পুলিশি প্রহরায় কাকরাইল মারকাজে যেতে হয় তাকে। সেখানেই তিনি ৩ দিন অবস্থান করে ১৩ জানুয়ারি দিল্লির নিজামুদ্দিন ফিরে যান।
Advertisement
দিল্লি ফিরে যাওয়ার আগে ১২ জানুয়ারি শুক্রবার কাকরাইল মসজিদে তিনি জুমআর খোতবা দেন এবং নামাজ পড়ান। নামাজের আগে তিনি রুজু (তাঁর দেয়া আপত্তিকর বক্তব্য থেকে ফিরে আসা) প্রসঙ্গে যে বয়ান পেশ করেন, তার চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো-
মাওলানা সা’দ কান্ধলভী তাঁর বয়ানে বলেন, তিনি তার আগের বক্তব্য থেকে ফিরে এসেছেন। তিনি বলেন, আমাদের কাজ হলো বয়ান করা। বয়ানে অনেক সময় আমাদের ভুল হয়ে যায়। আমি আমার বয়ানের ব্যাপারে ওলামায়ে কেরাম যে ভুলের কথা বলেছেন তার থেকে রুজু করছি।
মাওলানা সা’দ বলেছেন, আমি আমার বক্তব্য থেকে আগেও রুজু করেছি এখনো সবার সামনে (কাকরাইল মসজিদে) রুজু করছি।
Advertisement
তাবলিগের সাথীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘ওলামায়ে কেরাম আমাদের মোহসেন। তারা যদি কখনো কোনো কারণে আমাদের ভুল ধরেন; তাহলে মনে করতে হবে তারা আমাদের ওপর ইহসান করছেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘ওলামায়ে কেরাম যে কথা বলবেন তাতে আমাদের ভুল সংশোধন হবে। এ জন্য ওলামায়ে কেরামের কথা মেনে চলতে হবে।
যদিও তিনি কাকরাইলের জুমাআর বয়ানে তাঁর রুজুর বিষয়ে বক্তব্য দিয়েছেন। আলেম-ওলামার দাবি অনুযায়ী তা পরিপূর্ণ হয়নি। এ জন্য তাকে বিশ্ব ইজতেমায় যেতে দেয়া হয়নি।
মাওলানা সাদ কান্ধলভীর কিছু আপত্তিকর বক্তব্যের জেরে ওলামায়ে দেওবন্দ অসন্তোষ প্রকাশ করে এবং তাঁকে এ সব বক্তব্য থেকে প্রকাশ্য জনসম্মুখে রুজু হওয়ার ব্যাপারে তাগিদ দেন। কেননা তিনি তাঁর এ সব বক্তব্য বিভিন্ন সময় বড় বড় ইজতেমায় প্রকাশ করেছেন।
Advertisement
ওলামায়ে দেওবন্দের আপত্তির কারণে প্রকাশ্য জনসম্মুখে এবং ওলামায়ে দেওবন্দের কাছে রুজু না হওয়ার কারণে উপমহাদেশের তাবলিগের প্রবীন মুরব্বী ও বাংলাদেশের আলেম সমাজ মাওলানা সাদ কান্ধলভীকে বিশ্ব ইজতেমায় অংশ গ্রহণে আপত্তি জানায়।
উল্লেখ্য যে, তাবলিগ জামাত সারা বিশ্বের সব পেশা-শ্রেণীর মানুষের কাছে ইসলামের দাওয়াত ও তাবলিগের কাজ পরিচালনা করে আসছেন। ১৯২৭ সালে হজরত ইলিয়াস রাহ. এ দ্বীনের মেহনতি কাজ শুরু করেন। তাঁরই প্রতিষ্ঠিত দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজ থেকে বিশ্ব তাবলিগের কাজ পরামর্শের আলোকে পরিচালিত হয়। সর্বশেষ দিল্লি মারকাজের আমির ও মুরব্বী হলেন মাওলানা সাদ কান্ধলভী। তিনি হজরত ইলায়াস রাহ.-এর নাতি।
যদিও তিনি গতবছর (২০১৭) আপত্তির মুখে তিনি টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমায় অংশ গ্রহণ করেছেন। এ বছর ওলামায়ে দেওবন্দের অসন্তোষ, বিশ্ব আলেম সম্প্রদায় ও তাবলিগের প্রবীন মুরব্বী আলেমদের আপত্তির কারণে তাঁর বিশ্ব ইজতেমায় অংশ গ্রহণ সম্ভব হয়নি।
অবশেষে ১৩ জানুয়ারি তিনি কাকরাইল মারকাজ থেকেই পুলিশের নিরপত্তা প্রহরায় দিল্লির নিজামুদ্দিনের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ ত্যাগ করেন।
এমএমএস/জেআইএম