আগেরদিনই সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ককে পাশে বসিয়ে টেকনিক্যাল ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন জানিয়ে দিয়েছিলেন, সিনিয়রদের সর্বোচ্চ স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে। কারণ, সিনিয়র ক্রিকেটাররা জানে, তাদেরকে কী কী করতে হবে। মাশরাফি জানিয়েছেন, এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি নির্ভার বাংলাদেশের ড্রেসিংরুম। আর কয়েকদিন আগেই তো বিসিবি প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান পাপন জানিয়ে দিয়েছিলেন, কোচের ভূমিকা পালন করবে মাশরাফি এবং সাকিব।
Advertisement
‘দলের মধ্যে যে যার ভূমিকায় সঠিক কাজটি করতে পারলেই সাফল্য ধরা দেবে’- এমন মন্তব্যও করেছিলেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। চন্ডিকা হাথুরুসিংহের পরবর্তী সময়টাতে বাংলাদেশ সঠিক পথে থাকতে পারে কি না- সেটাও ছিল একটা বড় চ্যালেঞ্জ। যার প্রথম প্রদর্শনী ছিল জিম্বাবুয়ে। ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রথম ম্যাচেই সেই চ্যালেঞ্জ জয় করলো টিম বাংলাদেশ।
সিনিয়র ক্রিকেটারদের দারুণ দায়িত্বশীলতা এ ক্ষেত্রে রেখেছে অগ্রনী ভূমিকা। এক পাশ থেকে অধিনায়ক মাশরাফি তো দল পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেনই। বল হাতে দেখিয়েছেন সাফল্যের পথ। অন্যদিকে সিনিয়র ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহীম, রুবেল হোসেন কিংবা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদরা স্ব স্ব ক্ষেত্রে রেখেছেন সাফল্যের স্বাক্ষর।
ম্যাচের একেবারে শুরুতেই জিম্বাবুয়ের কোমর ভেঙে দেয়ার কাজটি করেন সাকিব। প্রথম ওভারেরে প্রথম বল এবং তৃতীয় বলেই ফিরিয়ে দিলেন তাদের সেরা দুই ব্যাটসম্যান সলোমন মিরে এবং ক্রেইগ আরভিনকে। সঙ্গে করলেন অসাধারণ বোলিং। তার দেখানো পথে হেঁটে অন্যরাও চেপে ধরে জিম্বাবুয়েকে। ফলে ১৭০ রানেই অলআউট জিম্বাবুয়ে।
Advertisement
বড় লক্ষ্য সামনে না থাকলে অনেক নির্ভার খেলতে পারেন ব্যাটসম্যানরা। সেটা দেখিয়েছেন দুই ওপেনার তামিম এবং বিজয়। যদিও ৩০ রানের জুটি গড়ার পর বিজয় ফিরে যান ১৯ রান করে। কিন্তু সিনিয়র ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল দেখালেন তার দায়িত্ববোধ। এক পাশ আগলে রেখে অপরাজিত ৮৪ রানের অসাধারণ ইনিংস খেললেন। আফসোস, লক্ষ্য আরো বেশি থাকলে হয়তো সেঞ্চুরিটা পেতে পারতেন তিনি। ৩৭ রানের ইনিংস খেলে জয়ের কাজ এগিয়ে দিয়ে যান সাকিব।
সাকিব আউট হওয়ার পর তামিমের সঙ্গে বাকি কাজ সেরে দেন মুশফিক। তবে ম্যাচ শেষে অলরাউন্ড নৈপুণ্যের জন্য সেরা নির্বাচিত হলেন সাকিব আল হাসানই। সেরা হওয়ার পর সাকিব কিন্তু উচ্চসিত প্রশংসা করলেন বন্ধু তামিমের। দারুণ ব্যাটিং করেছেন তামিম। তার এ ব্যাটিংয়ের ওপর ভর করেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।
ম্যাচ সেরার পুরস্কার হাতে নিয়ে সাকিব শুরুতে উইকেট নেয়ার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, ‘শুরুতে উইকেট নেয়া ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, সময় গড়ানোর সঙ্গে উইকেট ভালো হতে থাকবে। কারণ, শুরুতে উইকেট ছিল বেশ আদ্র। এ কারণে আমরা চিন্তা করেছিলাম, স্পিনাররা ভালো সুযোগ পেতে পারে। শেষ পর্যন্ত তাই হয়েছে।’
এরপরই তার কণ্ঠে তামিমের প্রশংসা। তিনি বলেন, ‘তামিম গত কয়েক বছরই দারুণ ব্যাটিং করছেন। আজও অসাধারণ ব্যাটিং করছেন তিনি। আশাকরি এমন ব্যাটিং ধারাবাহিকতা তার বজায় থাকবে।’
Advertisement
নিজের তিন নম্বরে ব্যাটিং করা নিয়ে সাকিবের বক্তব্য, ‘তিন নম্বরে করতে নামলে ব্যাট করার সুযোগ বেশি পাওয়া যায়। তিন নম্বরে দলও আশা করে আপনি বেশি বেশি রান করবেন। নতুন কাজ, নতুন দায়িত্ব, আশা করি আমি এটা চালিয়ে নিতে পারবো।’
আইএইচএস/আরআইপি