অর্থনীতি

শাড়িতে নেই নারীর মন

এক সময় বাঙালি নারীর পোশাকে একচেটিয়া দাপট ছিল শাড়ির। শিশু থেকে বৃদ্ধা সবাই বেশ শখ করে পরতেন শাড়ি। কোনো অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে শাড়ির বিকল্প ছিল না। সময়ের বিবর্তনে নারীর পোশাকে শাড়ির দাপট কমেছে।

Advertisement

আধুনিক প্রজন্ম যেন শাড়ি পরতেই ভুলে গেছে। শাড়ির স্থান দখল করে নিয়েছে থ্রি-পিস, টু-পিস, মেক্সি, টপস, লেহাঙ্গাসহ বাহারি পোশাক। শাড়ির প্রতি যেন নারীর আর টান নেই। ২৩তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলাতেও দেখা যাচ্ছে সেই চিত্র।

প্রথমদিকের ক্রেতা-দর্শনার্থীর খরা কাটিয়ে ইতোমধ্যে বেশ জমে উঠেছে বাণিজ্য মেলা। ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড়ে বেড়েছে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর বিক্রি। বিশেষ করে নারী ও শিশু সামগ্রীর স্টলগুলোতে প্রতিদিন দেখা মিলছে ক্রেতা-দর্শনার্থীর ঢল।

ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড় সামলাতে জুয়েলারি, ব্যাগ, থ্রি-পিসের স্টলগুলোর বিক্রয়কর্মীদের রিতিমতো ব্যস্ত সময় পার করতে হচ্ছে। অনেক স্টলের বিক্রেতারা এক মিনিট জিরিয়ে নেয়ারও সুযোগ পাচ্ছেন না। এমন পরিস্থিতিতেও শাড়ি বিক্রেতাদের সিংহভাগ সময় অলস পার করতে হচ্ছে।

Advertisement

কথা হয় তিশা জামদানি স্টলের মো. ইব্রাহিমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ভাই আমাদের বিক্রি একেবারেই নেই। মেলায় কখনো এমন ক্রেতা সংকট দেখিনি। শুক্র ও শনিবার দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়ছে। কিন্তু শাড়ির বিক্রি বাড়ছে না। কারণ নারীরা এখন খুব একটা শাড়ি পরে না। শাড়ির জায়গা দখল করে নিয়েছে থ্রি-পিস। এমনকি মুরব্বিরাও শাড়ি পরছেন না। শাড়ির বদলে মেক্সি পরা শুরু করেছেন।

প্রায় একই ধরনের মন্তব্য জামদানি পল্লীর মো. তসলিমের। বলেন, একটা সময় দেখেছি আমার মা, দাদীরা সব সময় শাড়ি পরতেন। এখন পরিবেশ আর তেমন নেই। নারীরা শাড়ি পরতে ভুলে গেছেন। বিয়ে বা একেবারে বিশেষ অনুষ্ঠান ছাড়া নারীরা শাড়ি পরছেন না। থ্রি-পিসসহ ভারতীয় বিভিন্ন পোশাকের প্রতি নারীদের এখন টান বেশি।

মেলায় জয়িতার নেয়া প্যাভিলিয়নে স্টল দিয়ে বসেছেন জেসমিন হস্তশিল্পের মোছাদ্দিকা ইলা। তিনি বলেন, এ প্যাভিলিয়নে জয়িতার আওতায় ২৯টি স্টল আছে। সবাই নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পণ্য এনেছেন। শাড়ি, থ্রি-পিসসহ নারীদের বিভিন্ন সামগ্রী আছে। তবে শাড়ির কালেকশন কম। কারণ এখন শাড়ি খুব একটা বিক্রি হয় না। এছাড়া অনেকেই মনে করেন শাড়ি পরা বেশ ঝামেলার।

মরিয়ম আক্তার নামে এক ক্রেতা বলেন, শাড়ি পরা বেশ ঝামেলার। বিশেষ করে সুতির শাড়িতে কুচি ঠিক করা বেশ কষ্টের। অন্যের সাহায্য ছাড়া শাড়ি পরা যায় না। সেখানে থ্রি-পিসে কোন ঝামেলা নেই। আবার থ্রি-পিস পরে চলাচল করাও বেশ সহজ, শাড়ির তুলনায় দামও কম। এ কারণে এখন শাড়ির প্রতি মানুষের আগ্রহ কমছে।

Advertisement

এমএএস/এমএআর/এমএস