১১ বছর ধরে একটা জুজু কাজ করছিল বার্সেলোনা খেলোয়াড়দের মধ্যে। এস্টাডিও আনোয়েতায় গিয়ে জিততে পারে না তারা। ২০০৭ সালে সর্বশেষ রিয়াল সোসিয়েদাদের হোম ভেন্যুতে গিয়ে জিতে এসেছিল তারা। এরপর দেখতে দেখতে ১১টি বছর কেটে গেলো, কিন্তু রিয়াল সোসিয়েদাদ জয় করতে পারছে না তারা। এবারও একই শঙ্কা দেখা দিয়েছিল। উইলিয়ান হোসে এবং হুয়ানমির গোলে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গিয়েছিল সোসিয়েদাদ। এরপরই আড়মোড়া ভেঙে জ্বলে উঠলেন মেসিরা। সুয়ারেজের জোড়া গোল এবং লিওনেল মেসি ও পওলিনহোর গোলে ৪-২ ব্যবধানে জয় নিয়ে ফিরে আসে আর্নেস্তো ভালভার্দের দল।
Advertisement
নাটকীয় এই জয়ে চলতি মৌসুমে এখনও পর্যন্ত মোট ২৯ ম্যাচ খেলে অপরাজিত থাকার রেকর্ড গড়লো বার্সা। লা লিগায় ১৯ ম্যাচে অপরাজিতই, সঙ্গে অন্য প্রতিযোগিতাগুলোয় ১০ ম্যাচেও অপরাজিত তারা। ইউরোপিয়ান লিগগুলোর মধ্যে বার্সাই একমাত্র দল, যারা এখনও হারের স্বাদ পায়নি। এই তালিকায় ছিল পেপ গার্দিওলার ম্যানচেস্টার সিটিও। কিন্তু রোববার রাতে লিভারপুলের কাছে হেরে বসায়, ভালভার্দের বার্সেলোনার পেছনে চলে গেলো গার্দিওলার ম্যানসিটি।
হারের শঙ্কা থেকে ফিরে এসে পূর্ণ ৩ পয়েন্ট অর্জন করায় লা লিগায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের চেয়ে ৯ পয়েন্ট এগিয়ে থাকল বার্সা। অন্য দিকে রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে ব্যবধানটা বাড়লো ১৯ পয়েন্টের।
লিগের মাঝ পথেই বলে দেয়া যায় বার্সেলোনাই চ্যাম্পিয়ন। তবে, কোচ আর্নেস্তো ভালভার্দে এখন লিগ শিরোপার দৌড় শেষ হয়ে গেছে এটা মানতে রাজি নন। তিনি বলেন, ‘অন্যদের সঙ্গে ব্যবধানটা অনেক হয়তো। লিগের প্রথম পর্বে আমরা মাত্র ৬ পয়েন্ট হারিয়েছি। এটা অবশ্যই একটা ভালোদিক। যে ব্যবধান আছে এটাও আমাদের জন্য অনেক ভালো; কিন্তু সবাইকে মনে রাখতে হবে, লিগের মাত্র অর্ধেক পার হয়েছে। দ্বিতীয়ার্ধ কিন্তু এখনও বাকি। আমরা আমাদের কোনো প্রতিপক্ষকেই দুরে রাখতে পারি না। যদি আমি তাদের অবস্থানে থাকতাম, তাহলে কখনোই আশা হারিয়ে ফেলতাম না এবং দলকে উজ্জীবিত করতাম, তারাও পারবে বলে।’
Advertisement
আনোয়েতায় আরও একটি পরাজয়ের মুখে দাঁড়িয়েছিল বার্সা। সেখান থেকে দলকে আশার আলো দেখান ব্রাজিলিয়ান পওলিনহো। এরপর সুয়ারেজের জোড়া গোল এবং চলতি মৌসুমের মেসির ২৩তম গোলের ওপর ভর করে দারুণ জয় তুলে নেয় বার্সা। এ কারণে দারুণ খুশি কোচ ভালভার্দে। তিনি বলেন, ‘আমি খুব খুশি যে, আনোয়েতার অভিশাপ থেকে আমরা পরিত্রাণ পেয়েছি। দুই গোল পিছিয়ে থাকার পর যেভাবে আমরা ফিরে এসেছি, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।’
নিজেদের ওপর বিশ্বাস রয়েছে বার্সা ফুটবলারদের। জানান ভালভার্দে। তিনি বলেন, ‘আমাদের নিজেদের ওপর বিশ্বাস রয়েছে। কিবাবে পিছিয়ে থাকলেও ফিরে আসতে হয়, সে সামর্থ্যও আছে আমাদের। বিশেষ করে এই মাঠে আমরা দীর্ঘসময় ধরে জিততে পারছিলাম না। কারণ, তারা দারুণ ফুটবল খেলে।’
আইএইচএস/আইআই
Advertisement